Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঠাকুরগাঁওয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে তুলার চাষ, লাভ বাড়ছে চাষিদের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:২৪

ঠাকুরগাঁও: উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও, এ জেলা দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় অনেকটাই উঁচু। যে কারণে একসময় অনাবাদি ও পতিত হয়ে পড়ে থাকতো বিঘা বিঘা জমি। কিন্তু এখন সে জমিতে তুলা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে তুলা চাষ। আর তুলা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণসহ তুলা বিভাগ দিয়ে যাচ্ছে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা।

তুলা উন্নয়ন বোর্ড, ঠাকুরগাঁও জোনের তথ্য মতে ঠাকুরগাঁওয়ে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ঠাকুরগাঁওয়ে ৪৫২ হেক্টর জমিতে তুলা আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয় এবং আবাদ হয়েছে ৪৯১ হেক্টর জমিতে। তুলা উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক উদ্ভাবিত সিবি-১২, সিবি-১৩, সিবি-১৪ ও সিবি-১৫ জাতের তুলা ছাড়াও হাইব্রিড জাতের সিবি-১, বিটি কটন, হোয়াইট গোল্ড-১,২,৩, রূপালি-১, শুভ্র-৩, ডিএম-৪সহ নানা জাতের তুলার চাষ হচ্ছে এই অঞ্চলে।

বিজ্ঞাপন

মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম উপাদান তুলা। আর তুলা থেকে তৈরি হয় সুতা, বস্ত্র, টিস্যু পেপার, ডাক্তারি তুলাসহ নানা পন্য। তুলার বীজ থেকে তৈরী হয় ভোজ্য তৈল, গো খাদ্য, প্লাস্টিক, বিস্ফোরক দ্রব্য, সাবানের কাঁচামাল, গ্লিসারিনের কাঁচামালসহ নানা সামগ্রী। বাংলাদেশে তুলার বার্ষিক চাহিদা ৮০ লক্ষ বেল কিন্তু দেশে উৎপাদন হয় ১.৬০-২.৪০ বেল তুলা।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের তুলা চাষি মো. নূরুজ্জামান বলেন, ‘দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে তুলা চাষ। তুলা একটি অর্থকরী ফসল। আর অল্প পরিশ্রমে কম খরচে তুলা চাষ করে লাভবান হওয়া যায়। এক বিঘা জমিতে তুলা উৎপাদন হয় ১৫-২০ মন। যার মূল্য প্রায় ৬০-৭৫ হাজার টাকা। এছাড়াও তুলার সঙ্গে সাথী ফসল আখ, ভূট্টাসহ নানা ধরনের সবজি আবাদ করেও লাভবান হওয়া যায়।’

বিজ্ঞাপন

তুলা চাষি অর্জুন দেবনাথ বলেন, ‘অন্য ফসলের ক্ষেত্রে কয়েক দিন পর পর স্প্রে করতে হয়। কিন্তু তুলার ক্ষেত্রে ১৫ দিন পরে স্প্রে করলেও চলে। সার কম লাগে। অল্প পরিশ্রমে বেশি লাভ হয়। একসঙ্গে মোটা অংকের টাকা পাওয়া যায়। গত বছর ৬০ শতাংশ জমিতে তুলা করি, লাভ হওয়ায় এবার ২৫০ শতাংশ জমিতে তুলার চাষ করেছি।’

তুলা চাষি তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘গত বছর এক বিঘা জমিতে তুলা চাষ করেছি। তুলা হয়েছে ২০ মন। বিক্রি করেছি ৭৬ হাজার টাকায়। ২৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। বাকি টাকা লাভ হয়েছে।’

ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড়-দিনাজপুরের প্রধান তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা ড. এ কে এম হারুন-উর-রশিদ বলেন, ‘তুলা উন্নয়ন বোর্ড জমিতে তুলা লাগানো থেকে শুরু করে হারভেস্টিং পর্যন্ত চাষিদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। তুলা একটা অর্থকরী ফসল। আগে তুলা চাষে মানুষের মধ্যে তেমন আগ্রহ ছিল না। এখন দিন দিন বাড়ছে।’

তুলা উন্নয়ন বোর্ড রংপুরের উপ-পরিচালক আবু ইলিয়াস মিঞা বলেন, ‘বিগত কয়েক বছরের তুলনায় দেশে তুলা চাষ সম্প্রসারণ হয়েছে। বাংলাদেশে বার্ষিক চাহিদা ৮০ লাখ বেল কিন্তু দেশে তুলা উৎপাদন হয় ২-৩% । যা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। সেক্ষেত্রে তুলা চাষে সরকারি ভাবে বিভিন্ন ধরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

বাংলাদেশ তুলা উন্নয়ন বোর্ড ঢাকা সদর দফতরের তুলার গবেষণা উন্নয়ন ও প্রযুক্তি হস্তান্তর প্রকল্পের পরিচালক ড. সীমা কুন্ড বলেন, ‘যে জমিতে অন্যকোনো ফসল হয় না, সে জমি তুলা চাষ হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন জাতের উন্নয়ন ঘটিয়ে তুলা চাষ সম্প্রসারণ করা এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে তুলা চাষে চাষিদের কাছে জনপ্রিয় করে তোলা।’

সারাবাংলা/এমও

ঠাকুরগাঁও তুলাচাষ লাভ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর