পানিশূন্যতায় মরছে শিশুরা, দুর্ভিক্ষ থেকে এক ধাপ দূরে গাজা
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:১৫
গাজায় শিশুরা পানিশূন্যতার কারণে মারা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। দ্রুত খাদ্যসহ ত্রাণ সহায়তা না পৌঁছালে ‘ক্রমবর্ধমান দুর্ভিক্ষের’ কারণে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাতে পারে বলে সতর্ক করেছে মন্ত্রণালয়। এদিকে গাজার এক-চতুর্থাংশ মানুষ দুর্ভিক্ষ থেকে এক ধাপ দূরে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা। খবর আলজাজিরা।
ফিলিস্তিনের গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, পানিশূন্যতার কারণে শিশুরা মারা যাচ্ছে। ‘ক্রমবর্ধমান দুর্ভিক্ষ’ দিনে ‘হাজার হাজার মানুষকে হত্যা’ করতে পারে, যদি গাজায় আরও ত্রাণ সহায়তা প্রবেশ না করে।
জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা ওসিএইচএ জানিয়েছে, মানবিক সংস্থাগুলোকে উত্তর ও দক্ষিণ গাজায় ‘পরিকল্পিতভাবে প্রবেশাধিকার প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে’ এবং মানবিক সাহায্য গাড়িগুলো যুদ্ধের মুখে পড়ছে।
জাতিসংঘের একজন ঊর্ধ্বতন মানবিক সহায়তা কর্মকর্তা বলেছেন, গাজার জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ, প্রায় পাঁচ লাখ ৭৬ হাজার মানুষ দুর্ভিক্ষ থেকে এক ধাপ দূরে।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কংগ্রেসকে একটি তহবিল বিল পাস করার আহ্বান জানিয়েছেন, যা ‘ইসরাইলকে আত্মরক্ষা করতে সহায়তা করবে।’ একইসঙ্গে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডাব্লিউএ’তে মার্কিন তহবিল দেওয়া স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেবে।
এর আগে, ফিলিস্তিনের স্বাধীতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আগামী সোমবারের (৪ মার্চ) মধ্যে এই চুক্তি হতে পারে বলে আশা করেছেন তিনি। গত সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) নিউইয়র্ক সিটিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি সম্পর্কে মন্তব্য করেন।
এর আগে, গত রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছিলেন, গত কয়েকদিন ধরে ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তির জন্য আলোচনায় বেশ ‘অগ্রগতি’ হয়েছে। কিন্তু হামাস সর্বশেষ প্রস্তাবিত চুক্তিটি গ্রহণ করবে কি না তা স্পষ্ট নয়।
তিনি আরও বলেছেন, ‘মিশর, ইসরাইল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কাতারের মধ্যে আমরা যে আলোচনা করেছি তাতে আমাদের অগ্রগতি হয়েছে।’
গত সপ্তাহে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে ভেটো দেওয়ার জন্য ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এর বদলে এটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব করেছে দেশটি, যা দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরে আক্রমণ না করার জন্য ইসরাইলকে সতর্ক করেছে।
গাজায় চলমান ইসরাইলের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৯ হাজার ৮৭৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে নারী ও শিশুদের সংখ্যাই বেশি। এছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত ৭০ হাজার ২১৫ জন।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধারা আশ্চর্যজনকভাবে ইসরাইলে হামলা চালায়। এতে করে অন্তত ১ হাজার ২০০ ইসরাইলি নিহত হয়। এছাড়া ২৫৩ জনকে জিম্মি করে। এরপরই হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরাইল। তবে এই হামলায় নিরীহ ফিলিস্তিনিরাই নিহত হচ্ছেন।
সারাবাংলা/এনএস