Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘নির্বাচন বন্ধের চক্রান্ত ছিল, তারপরও উৎসবমুখর হয়েছে’

স্পেশাল করসেপন্ডন্টে
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:৫৮

সংসদ ভবন থেকে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশে গত ৭ জানুয়ারি একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। এ নির্বাচনে সহিংসতা হয়নি বললেই চলে। যেখানে ৪২ শতাংশ ভোট পড়েছে। তবে এ নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি বহু ষড়যন্ত্র ছিল। নির্বাচন বন্ধ করার চক্রান্ত ছিল। তারপরেও দেশে উৎসবমুখর নির্বাচন হয়েছে।

বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে যারা নির্বাচন বর্জন করেছিল, বানচালের চেষ্টা করেছিল, তারা ভোটের পর যখন দেখল সবাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন বার্তার বন্যায় ভাসিয়ে দিচ্ছেন, তখন তাদের মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। এখন তারা আবোল-তাবোল বলা শুরু করেছে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের যেখানেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যান সেখানেই তিনি ‘সেন্টার অব অ্যাটার্কশন’ হন। গাজায় নির্বিচারে যে গণহত্যা হচ্ছে তা নিয়ে বিশ্ব নেতারা যখন নিশ্চুপ, নির্বিকার- সেখানে এ গণহত্যা জোরালোভাবে বন্ধ করার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ গাজায় গণহত্যা হচ্ছে। সেখানে ৩০ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এর বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আর পৃথিবী অসহায় হয়ে তাকাচ্ছে বা নীরব থাকছে। এখানে মানবতার বিরুদ্ধে অনেকেই নীরব থাকছে। এটা অপরাধকে সমর্থন জানানোর শামিল। কিন্তু জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গাজায় যা হচ্ছে তা গণহত্যা। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। তিনি জেলোনেক্সিকে যুদ্ধ বন্ধের পথ বের করার আহ্বান জানিয়েছেন।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানবতার মা আখ্যা দিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার সময় তিনি ঘরের দুয়ার শুধু নয়, মনের দুয়ারও খুলে দিয়েছিলেন। এখন রোহিঙ্গা শিবিরে প্রতিবছর ৩৫ হাজার শিশু জন্ম নেয়। এটা আমাদের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশের জন্য সমস্যা। সেজন্য মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনায় বসে দ্রুত এ সমস্যা সমাধান করতে হবে। প্রত্যাবসন ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।’

নির্বাচনে ভোট কাস্টের উদাহরণ হিসেবে হাছান মাহমুদ বিভিন্ন দেশে ভোট পড়ার তথ্য সংসদে জানাতে গিয়ে বলেন, ‘রোমানিয়ায় ২০২০ সালের নির্বাচনে ৩১.৮৪ ভোট পড়েছে, হংকংয়ে পড়েছে ৩০ শতাংশ। বুলগেরিয়ায় ২০২২ সালে ৩৭.৯৮ শতাংশ, আয়ারল্যান্ডে ৪৩.৮৭ শতাংশ, আর পর্তুগালে ৩৯.২৪ শতাংশ। এগুলোর মধ্যে কয়েকটি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ, যেখানে নির্বাচন প্রতিহতের কোনো ঘোষণা ছিল না। কিন্তু আমাদের দেশে কীভাবে নির্বাচন বন্ধের ঘোষণা হয় তা সবাই জানেন। কিন্তু এরপরেও যে উৎসবমুখর পরিবেশে যে ভোট হয়েছে তাকে ‘ফেসটিভ ইলেকশন’ বলা চলে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ দেশ আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে চার চার বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ৩২টি আন্তর্জাতিক সংস্থা শুভেচ্ছা জানিয়েছে। তখন তারা ভ্যাবাচাকা খেয়েছে। বিশ্বের বহু দেশ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে। আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীরতর করার কথা বলেছেন।’

গত ১৫ বছরে দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে তা বিশ্বে উদাহরণ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অর্থনৈতিক সূচকে আমরা ১১৬তম স্থানে উন্নীত হয়েছি। বাংলাদেশ এখন জিডিপিতে ৩৫তম অর্থনীতির দেশ, আর পিপিপিতে ৩১তম। বিভিন্ন সূচক বলছে ২০৩৭ সালে বাংলাদেশ হবে ২০তম অর্থনীতির দেশ। আইএমএফ’র হিসাব অনুযায়ী মাথাপিছুর দেশ হিসেবে ভারতকে বাংলাদেশ পেছনে ফেলেছে। অর্থনৈতিক সূচক, সামাজিক সূচকসহ সবধরনের সুচকে আমরা পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছি। আজ পাকিস্তান আমাদের দেখে দীর্ঘশ্বাস আর হা-হুতাশ করে।’ এখানেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর বহমানের দেশ রচনা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ পরিচালনার স্বার্থকতা বলে মন্তব্য করেন তিনি।

রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর এদিন আলোচনায় আরও অংশ নেন- আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, কামাল আহমেদ মজুমদার, শহিদুজ্জামান সরকার, নজরুল ইসলাম চৌধুরী, কামরুল আরেফিন, এইচ এম ইব্রাহীম, এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন, আবদুল্লাহ নাহিদ নিগার, একরামুল করিম, মকবুল হোসেন, খান আহমেদ শুভ এবং জাহিদ আহসান রাসেল প্রমুখ।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম

উৎসবমুখর টপ নিউজ নির্বাচন বন্‌ধ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর