পৌরসভার ‘ট্যাক্স নির্যাতনে’ ক্ষুব্ধ যশোরবাসী
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:০০
যশোর: নিজস্ব অর্থয়ানে স্থাপন করা সাবমারসিবল পাম্পের ওপর যশোর পৌরসভা মাসে ৩০০ টাকা হারে কর আরোপ করায় প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছেন যশোর পৌরসভার নাগরিকরা। তাদের অভিযোগ, পৌরসভা থেকে কোনো নাগরিক সেবা তারা পাচ্ছেন না। উলটো তাদের নানা ধরনের করের জালে বন্দি করা হচ্ছে। পৌরসভার এ আচরণকে ‘ট্যাক্স নির্যাতন’ বলে অভিহিত করছেন তারা।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় প্রেসক্লাব যশোরে পৌর নাগরিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় নাগরিকরা এসব অভিযোগ করেন। এ সময় সাবমারসিবল পাম্পের ওপর থেকে ৩০০ টাকা কর বাতিল না করলে সব ধরনের কর পরিশোধ বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন নাগরিকরা। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) পৌরসভা চত্বরে অবস্থান নিয়ে মেয়রের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা।
পনি কর ও পানির বিলের সঙ্গে সাবমারসিবলের পাম্পের জন্য ‘অযৌক্তিক বিল’ আদায়ের নোটিশের প্রতিবাদে পৌর নাগরিকদের মতবিনিময় সভায় নাগরিকরা বলেন, পৌরসভার অনেক পাম্প বন্ধ হয়ে আছে। ঠিকমতো পানি পাওয়া যায় না। যে পানি সরবরাহ করা হয়, তা ব্যবহারের অনুপযোগী। পানির গতি নেই। কিন্তু পানির ৯ শতাংশ কর আছে। সাধারণ নাগরিক বাধ্য হয়ে নিজ খরচে সাবমারসিবল পাম্প স্থাপন করেছে। এখানে পৌরসভার কারিগরি কোনো সহযোগিতা নেই। তাহলে নাগরিকদের কেন মাসে ৩০০ টাকা করে দিতে হবে?
পৌরসভার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে তারা বলেন, পৌরসভা সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। অথচ কোনো সেবা সেখান থেকে পাওয়া যায় না। রাস্তাঘাট দীর্ঘদিন ধরে খারাপ হয়ে আছে। এমনও রাস্তা আছে, গত ২০ বছরে মেরামত হয়নি। একটু পানি হলে নাগরিকদের বাড়িতে বাড়িতে পানি উঠে যায়। ভেলায় করে পারাপার হতে হয়। বিদ্যুৎ পাওয়া যায় না। ড্রেনগুলো অকেজো হয়ে আছে। ডাস্টবিন নেই।
নাগরিকরা বলেছেন, একে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে, তার ওপর নতুন করে ট্যাক্স বসানো হচ্ছে। নাগরিকরা ট্যাক্স দেবে, কিন্তু তার সেবা দিতে হবে। সেবা না দিয়ে ট্যাক্স নির্ধারণ করবে, এটা হবে না। ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ৩০০ টাকা বিল পরিশোধের চিঠি দেওয়া হয়েছে। ওই বিল নাগরিকরা দেবে না। বরং বিল না কমালে সব ধরনের ট্যাক্স দেওয়া থেকে বিরত থাকবে নাগরিকরা।
মতবিনিময় সভায় বলা হয়, এই ট্যাক্স বসানোর প্রতিবাদে ২৯ ফেব্রুয়ারি পৌরসভা চত্বরে নাগরিকরা অবস্থান নেবেন এবং মেয়রকে স্মারকলিপি দেবেন। পৌরসভা এই বিল বাতিল না করলে আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
ওই আন্দোলনের জন্য এরই মধ্যে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শওকত আলী খানকে আহ্বায়ক ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জিল্লুর রহমান ভিটুকে সদস্যসচিব করে গঠিত কমিটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘যশোর পৌর নাগরিক কমিটি’।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যবসায়ী শওকত আলী খান। বক্তব্য রাখেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরী মাহমুদ রেজা, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রেজাউল ইসলাম, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কামরুজ্জামান ও তৌহিদ জামান, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জিন্নাত আলী, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মফিজুর রহমান রুননু, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জিল্লুর রহমান ভিটু, কাজী আশরাফুল আজাদ ও নাসির উদ্দিন সেফার্ড, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের শহীন ইকবাল, ৯ নমবর ওয়ার্ডের হাসান হাফিজুর রহমান ও নাসির উদ্দিন লিপুসহ অন্যরা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পরিবেশ আন্দোলনের নেতা ও রাজনীতিক ইকবাল কবির জাহিদ।
সারাবাংলা/টিআর