রোহিঙ্গা থেকে ছিন্নমূল- সংগ্রামের চিত্র ৯ তরুণের সৃষ্টিকর্মে
১ মার্চ ২০২৪ ২২:৫৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো : নয় তরুণ আলোকচিত্রীর শিল্পকর্ম নিয়ে চট্টগ্রামে চিত্রভাষা গ্যালারিতে শুরু হয়েছে তিনদিনের ‘আদার ওয়ে অ্যারাউন্ড’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী। এতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দেশ ও বাস্তুচ্যুত হয়ে এসে বেঁচে থাকার তুমুল সংগ্রামের চিত্র যেমন ফুটে উঠেছে, তেমনি এ শহরের পরিত্যক্ত ভূমির মতো পরিত্যক্ত হয়ে থাকা ভাসমান, ছিন্নমূল মানুষের জীবনচিত্রও তুলে আনা হয়েছে অত্যন্ত সংবেদনশীলতায়।
নগরীর খুলশীর চিত্রভাষা গ্যালারিতে শুক্রবার (১ মার্চ) বিকেলে প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়। চলবে রোববার পর্যন্ত।
উদ্বোধনী আয়োজনে অতিথি হিসেবে সঙ্গ দেন অলিয়স ফ্রঁসেজ চট্টগ্রাম কেন্দ্রের পরিচালক ব্রুনো লাক্রাম্প, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আতিকুর রহমান, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন’র ডিন অব স্টুডেন্টস সুমন চ্যাটার্জি, কবি ও সাংবাদিক আহমেদ মুনির এবং আলোকচিত্রী মইনুল আলম।
প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া নয়জন শিক্ষানবিস হলেন- ডাক্তার মঞ্জুরুল করিম বিপ্লব, রাসেল চৌধুরী, জয়া বড়ুয়া, নার্গিস সীমা, ফাহিম হাসান আহাদ, শুভ দে, সাদিয়া মেহজাবিন, বাণীব্রত রয় এবং আরাফাত হোসেন হৃদয়।
গত বছরপ্রান্তে চিত্রভাষা গ্যালারি ‘কনটেম্পোরারি ডকুমেন্টারি অ্যাপ্রোচ’ শিরোনামে দুইমাসের একটি ফটোগ্রাফি কর্মশালার আয়োজন করেছিল, যার প্রশিক্ষক ছিলেন আলোকচিত্রী আবীর আবদুল্লাহ। চিত্রভাষা গ্যালারির পক্ষে আসমা বীথি এর সমন্বয় করেছিলেন।
কবি আসমা বিথী সারাবাংলাকে জানান, কর্মশালায় সমসাময়িক ডকুমেন্টারি আলোকচিত্রের ধরন সম্পর্কে জ্ঞানদানের পাশাপাশি ভিজ্যুয়াল ন্যারেটিভের মাধ্যমে গল্প বলার একটি অনন্য দৃষ্টিভঙ্গি দেয়া হয়। কর্মশালায় শিখনের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে চিত্রভাষা গ্যালারি প্রদর্শনীটির আয়োজন করেছে।
নয় আলোকচিত্রী নিজেরাই তাদের মানসিক ও স্থানিক অবস্থান অনুযায়ী নিজেদের চারপাশ থেকে আলোকচিত্রের বিষয়বস্তু নির্বাচন করেছেন। সেখানে ছিন্নমূল, আহত, শহরের ভাসমান, দেশ ছেড়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংগ্রামী চিত্র, এমনকি এতিম ঘোড়ার জীবনও নথিভুক্ত হয়েছে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ছবি যেমন- একজন চিকিৎসকের পেশাগত দায়িত্বের স্থান, পিতার স্মৃতির উদ্দেশে নিবেদিত ছবি, একজন আলোকচিত্রী যখন শারীরিক অসুস্থতার কারণে ক্যামেরা হাতে ছবি তুলতে বাইরে যেতে অক্ষম হন, সেসময়কার পরিস্থিতিকে ধারণ করে রাখার অনুভূতিও স্থান পেয়েছে, অনূভুতি সংরক্ষণের মধ্য দিয়ে কীভাবে গল্প বলা যেতে পারে তার স্মারক হিসেবে।
আমন্ত্রিত অতিথিরা প্রদর্শিত আলোকচিত্রগুলো দেখে তাদের অনুভূতি তুলে ধরেন। চিত্রভাষার কাছ থেকে তারা ভবিষ্যতে এ ধরনের আরও প্রদর্শনী প্রত্যাশা করেন।
চিত্রভাষা গ্যালারির পরিচালক ও আলোকচিত্রী মইনুল আলম বলেন, ‘চিত্রভাষা গ্যালারি ২০১৭ সাল থেকে আন্তরিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে গুণগত মান বজায় রেখে ব্যাতিক্রমী সব প্রদর্শনী ও অনুষ্ঠান উপহার দিয়ে যেতে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের আরও কাজ করার ইচ্ছা আমাদের আছে।’
সারাবাংলা/আরডি/একে