২ মার্চ ১৯৭১: বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন
২ মার্চ ২০২৪ ১৩:৪৪
ঢাকা: ২ মার্চ ১৯৭১। এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ছাত্রসমাবেশে প্রথম বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করা হয়। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ১ মার্চ হঠাৎ করেই জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করলে প্রতিবাদমুখর ছাত্রসমাজ পতাকা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নেয়।
স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকার এবং শেষ পর্যন্ত সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সংকল্পবদ্ধ হয়ে সেদিন পাতাকা উত্তোলন করেন ছাত্রনেতা আ স ম আবদুর রব। সঙ্গে ছিলেন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা তোফায়েল আহমদ, আবদুল কুদ্দুস মাখন এবং নূরে আলম সিদ্দিকী।
সেদিনের সভায় আ স ম আবদুর রব, তোফায়েল আহমদ, আবদুল কুদ্দুস মাখন, নূরে আলম সিদ্দিকী ছাড়াও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ এবং ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস মাখন বক্তৃতা করেন। সভা শেষে এক বিরাট শোভাযাত্রা স্বাধীনতার শ্লোগান দিতে দিতে বায়তুল মোকাররমে যায়।
থমথমের পরিবেশের মধ্যে সেদিন দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সচিবালয়ে পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে বাংলাদেশের মানচিত্র আঁকা পতাকা ওড়ানো হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় রাতে বেতারের মাধ্যমে ঢাকা শহরে কারফিউ জারির ঘোষণা করে পাকিস্তানের জান্তা সরকার। সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ছাত্রাবাস ও শ্রমিক এলাকা থেকে ছাত্র-জনতা ও শ্রমিকরা শ্লোগান দিতে দিতে কারফিউ ভঙ্গ করে মিছিল বের করেন। তাদের শ্লোগান ছিল— ‘সান্ধ্য আইন মানিনা’, ‘জয় বাংলা’, ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর’।
জনতার উত্তাল তরঙ্গ রুখে দিতে রাত ৯টায় সামরিক বাহিনী ডিআইটি এভিনিউর মোড়, মর্নিং-নিউজ পত্রিকা অফিসের সামনে রাত সাড়ে জনতার ওপর গুলি চালায়। বিপুল জনতা কারফিউ ভঙ্গ করে গভর্নর হাউজের দিকে এগিয়ে গেলে সেখানেও গুলি চালানো হয়। শহরের বিভিন্ন এলাকায় কারফিউ ভঙ্গকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। পরের দিনি ইত্তেফাকের শিরোনাম ছিল, ‘প্রতিবাদে রাজধানীতে প্রচণ্ড বিক্ষোভ।’
জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত হওয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ‘সংখ্যালগিষ্ঠ দলের সেন্টিমেন্টের জন্য অধিবেশন স্থগিত করা হয়েছে এবং এটা মেনে নেওয়া হবে না।’
সারাবাংলা/এজেড/এনএস