‘রমজানে কিছু মানুষ মজুতদারিতে মুনাফা লুটতে চায়’
৩ মার্চ ২০২৪ ১৪:০৯
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘রমজান মাস এলেই আমাদের কিছু কিছু মানুষ থাকে সব সময় মজুতদারি করে দাম বাড়িয়ে কিছু মুনাফা লুটতে চায়। সেদিকে বিশেষভাবে নজর আমাদের দিতে হবে। কেউ কেউ মজুতদারি করে পঁচিয়ে ফেলবে কিন্তু বাজারে দেবে না— এ জাতীয় অবস্থার সৃষ্টি করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়। সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে এবং কঠোর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
রোববার (৩ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হল থেকে ‘জেলা প্রশাসক সম্মেলন ২০২৪’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেন সাধারণ মানুষের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছাতে পারে সেদিকে সবাইকে যথাযথভাবে নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আশু করণীয় একটা কাজ আমাদের সামনে। কোথাও যেন ভোক্তাদের হয়রানি হতে না হয়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। আমাদের দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে। পর নির্ভরশীলতা আমাদের কমাতে হবে। এটা যে আমরা করতে পারি, সেটা আমরা অনেক ক্ষেত্রে প্রমাণ করেছি।’ তাই সেদিকে একান্তভাবে নজর দেওয়া দরকার বলেও মনে করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরবরাহের ক্ষেত্রেও নানা সমস্যার সৃষ্টি হয় অথবা একটা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়। রমজান মাস সামনে রেখেই এ কথাগুলো আমি সবাইকে বললাম। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেন সাধারণ মানুষের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছাতে পারে সেদিকে সবাইকে যথাযথভাবে নজর দিতে হবে।’
কিশোর গ্যাং দমনে সংশ্লিষ্টদের নজর দেওয়া আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অতিমারির সময় এই জিনিসটা সবচেয়ে বেশি সামনে এসেছে। যে ছেলেমেয়েরা শিক্ষা গ্রহণ করে করবে, তারা কেন এভাবে গ্যাং হবে বা ছিনতাই খুন ডাকাতি এসবে লিপ্ত হবে? সে বিষয়টা একান্তভাবে নজরদারির করা অপরিহার্য।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী। তিনি মনে করেন, ‘শুধু গ্রেফতার করে লাভ নেই। গ্রেফতার করে জেলে পাঠালে সেখানে অন্য অপরাধের সঙ্গে মিশে তারা আরও খারাপ পথে যেতে পারে।’ সেক্ষেত্রে অভিভাবকসহ সবাইকে সচেতন করে গোড়া থেকেই এসব সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করার তাগিদ দেন সরকারপ্রধান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং কোভিড অতিমারির প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতে পড়েছে। পৃথিবীতে এখন এমন এমন দেশ রয়েছে যেখানে মুদ্রাস্ফীতি ৪০ শতাংশে রয়েছে। বাংলাদেশও এর থেকে দূরে নয়; যদিও বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতি এখনো ১০ শতাংশের নিচে আছে। কিন্তু তারপরেও এটা একটা সমস্যা রয়ে গেছে।’
ডিসি সম্মেলন উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘২০২৩ সালে আমরা জেলা প্রশাসকদের নিয়ে সম্মেলন করেছিলাম। সেখানে অনেকগুলো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। আমি সব জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানাই, নির্বাচনের আগে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, আপনারা সঠিকভাবে সেটি পালন করেছেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এবারই প্রথম আমরা আইন তৈরি করে আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি। নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনা করেছে। একইসঙ্গে কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা প্রশাসকরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে নির্বাচনকে সাফল্যমণ্ডিত করেছেন। এবারের নির্বাচন সবচেয়ে সুষ্ঠু এবং অবাধ, নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন।
সারাবাংলা/এনআর/এমও