প্রশস্ত হচ্ছে কুমিল্লার ৪ মহাসড়ক
৪ মার্চ ২০২৪ ০৮:৪৭
ঢাকা: কুমিল্লার চার মহাসড়ক প্রশস্ত করার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এজন্য ‘কুমিল্লা ইকোনমিক জোন সংযোগ সড়ক ও মেঘনা ইকোনমিক জোন সংযোগ সড়ক নির্মাণ এবং মোগড়াপাড়া-আনন্দবাজার জেলা মহসড়ক ও আনন্দবাজার-বারদী-তালতলা জেলা মহাসড়ক যথাযথমান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ১৪৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
অনুমোদন পেলে এটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। প্রস্তাবটি নিয়ে গত ১১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। এতে সভাপতিত্ব করেন কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘পিইসি সভায় বেশ কিছু সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। সেগুলো প্রতিপালন করে ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) সংশোধন করে পাঠানোর পর অনুমোদনের পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।’
পিইসি সভায় নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রস্তাবিত চারটি সড়ক যথাযথমান ও প্রশস্তায় উন্নীত হলে সংশ্লিষ্ট এলাকায় যোগাযোগ অবকাঠামোর গুণগত পরিবর্তন আসবে। এ জন্য প্রকল্পটির আওতায় কুমিল্লা ইকোনমিক জোন সংযোগ সড়ক, মেঘনা ইকোনমিক জোন সংযোগ সড়ক নির্মাণ মোগড়াপাড়া-আনন্দবাজার জেলা মহাসড়ক এবং আনন্দবাজার-বারদী তালতলা জেলা মহাসড়কগুলোর বিভিন্ন অংশে নতুন নির্মাণ অন্তর্ভুক্তিসহ যথাযথমান ও প্রশস্ততায় উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পটি যথাযথ মানে বাস্তবায়নের মাধ্যমে সড়ক নেটওয়ার্ক প্রশস্ত করা ও শক্তিশালী করা, নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা, মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলা ও কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলার সঙ্গে সমন্বিত যোগাযোগসহ ঢাকার যোগাযোগ সহজ হবে এবং ভ্রমণের সময় কম হবে।
প্রকল্প এলাকার বিদ্যমান মহাসড়কের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড ও বাজার এলাকাগুলো ট্রাফিকের মাধ্যমে বাজার এলাকা যানজটমুক্ত ও নিরবচ্ছিন্ন যানবাহন পরিচালনা করা সম্ভব হবে। এছাড়া বাঁক সরল করাসহ ব্রিজ বা কালভার্ট নির্মাণের মাধ্যমে দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানগুলো সড়ক নিরাপত্তা জোরদার হবে এবং দুর্ঘটনা কমে যাবে।
সভায় জানানো হয়, প্রস্তাবিত এলাইনমেন্ট, সড়ক উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। মোগড়াপাড়া হতে আনন্দবাজার এবং মেঘনা ইকনোমিক জোন সংযোগ সড়কের এরাইনমেন্ট দুটি অত্যন্ত কাছে হওয়ায় আরও ভালভাবে পুনঃপরীক্ষা প্রয়োজন।
মেঘনা ইকনোমিক জোন সংযোগ সড়কের ২.৫০ কিলোমিটার অংশ নতুন নির্মাণ প্রয়োজন তাই সড়কের এই অংশে যথাযথ সমীক্ষা হয়েছে কিনা এ বিষয়ে সভায় নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ‘সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের পিরোজপুর স্থান হতে ছয়হিস্যা গ্রাম পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য সড়ক ও জনপথ অধিদফতরকে ডিপিপি প্রণয়নের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।’
এজন্য সড়ক বিভাগ, নারায়ণগঞ্জ প্রস্তাবিত সড়কটির সম্ভব্যতা যাচাই করে। সড়কের এলাইনমেন্টে বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান, বহুতল বিশিষ্ট ঘনবসতি স্থাপনা এবং শেষ প্রান্তে মেঘনা ইকোনমিক জোনকে সংযুক্ত করার জন্য নদীর কার্ভে সেতু নির্মাণ প্রয়োজনের জন্য ব্রিজ ডিজাইন বিভাগ রুটটি ফিজিবল নয় বলে মতামত দেন। কিন্তু তারা এই রুটটিসহ সোরটেস্ট ডিসটেন্সে আরও তিনটি রুট স্টাডি করার পরামর্শ দেন। এই পরামর্শ অনুযায়ী মেঘনা ইকনোমিক জোন, সোনারগাঁও ইকনোমিক জোন, নারায়ণগঞ্জ ডিসি অফিস ও সড়ক বিভাগ, নারায়ণগঞ্জ সরেজমিন সাইট পরিদর্শন ও যৌথভাবে স্টাডি করে রুট চূড়ান্ত করে।
পিইসি সভায় বলা হয়, আনন্দবাজার-বারদী-তালতলা সড়কে অনেক বেশি বাঁক অন্তভুক্ত থাকায় তা হ্রাস করে আরও সরল করা যায় কিনা সে বিষয়ে মতামত দেওয়া হয়। ভূমি অধিগ্রহণ যথাসম্ভব সীমিত রেখে প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে সভায় আলোচনা করা হয়। নন এগ্রিকালচার ডেভলপমেন্টের ক্ষেত্র প্রস্তুতের আগে অর্থনৈতিক লাভ ক্ষতির বিষয়টি সম্ভাব্যতা সমীক্ষায় পূর্ণাঙ্গভাবে বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন।
সভায় আরও বলা হয়, যেকোন সড়ক অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে মাল্টিমডেল ট্রান্সপোর্টেশিয়ানের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ভারসাম্যপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন যেন দ্রুত ও কার্যকরভাবে অর্থনৈতিক সুফল পাওয়া যায়।
সারাবাংলা/জেজে/এমও