চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে অভিজাত পেনিনসুলা আবাসিক হোটেলের একটি কক্ষে পোল্যান্ডের এক নাগরিকের রক্তাক্ত লাশ মিলেছে। পুলিশ জানিয়েছে, তার মাথায় এবং শরীরের বিভিন্নস্থানে জখমের চিহ্ন আছে। তাকে খুন করা হয়েছে বলে আলামত দেখে সন্দেহ করা হচ্ছে।
সোমবার (৪ মার্চ) দুপুরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে নগরীর চকবাজার থানার জিইসি মোড়ে ‘দ্যা পেনিনসুলা চিটাগং’ নামে হোটেলটিতে যায় পুলিশ।
হোটেলের নথিতে উল্লেখ আছে, মৃতের নাম- ZDZISLAW MICHAL CZERYBA। বয়স ৫৮ বছর। কর্মস্থল হিসেবে নগরীর সিইপিজেডের ক্যানপার্ক গার্মেন্টসের নাম উল্লেখ আছে।
ঘটনাস্থলে যাওয়া নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান সারাবাংলাকে জানান, তিনি পোল্যান্ডের একটি বায়িং হাউজের ঢাকা অফিসে কর্মরত ছিলেন। ওই বায়িং হাউজের প্রতিনিধি হিসেবে ২০১৮ সাল থেকে তিনি বেশ কয়েকবার চট্টগ্রামে এসেছেন। গত বছরের ডিসেম্বরে তিনি পোল্যান্ডে ছুটিতে গিয়েছিলেন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তিনি সেখান থেকে সরাসরি ফ্লাই দুবাইয়ের একটি ফ্লাইটে চট্টগ্রামে এসে পেনিনসুলা হোটেলে ওঠেন। তিনি সিইপিজেডের ক্যানপার্ক গার্মেন্টস পরিদর্শনে এসেছিলেন। হোটেলের নবম তলায় ৯০৫ নম্বর কক্ষে ছিলেন তিনি। সেখানেই তার লাশ পাওয়া গেছে।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি-দক্ষিণ) নোবেল চাকমা সারাবাংলাকে বলেন, ‘বেলা সাড়ে ১২টার দিকে হোটেল থেকে থানায় খবর দেয়া হয় যে, ৯০৫ নম্বর কক্ষে একজন ব্যক্তির সাড়া মিলছে না। খবর পেয়েই আমরা এখানে আসি। দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করার পর তাকে বিছানার একপাশে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।’
‘বায়িং হাউজের পক্ষ থেকে উনার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ যিনি করতেন, তিনি আজ (সোমবার) সকাল থেকে তাকে না পেয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। হোটেলের কর্মীরা অনেকক্ষণ ধরে দরজার সামনে থেকে ডাকাডাকি করেও তার সাড়া না পেয়ে পুলিশকে খবর দেন।’
উপ পুলিশ কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা মনে করছি, তাকে খুন করা হয়েছে। তার মাথার পেছনে ও শরীরের বিভিন্নস্থানে জখমের চিহ্ন আছে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে পাওয়া গেছে। কক্ষের ভেতরে বিভিন্ন সরঞ্জাম এলোমেলো অবস্থায় পাওয়া গেছে। এছাড়া সন্দেহজনক আরও আলামত পাওয়া গেছে। আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজসহ আনুষাঙ্গিক বিষয় যাচাইবাছাই করছি।’
পিবিআই ও সিআইডির ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করছে। লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের মর্গে পাঠানো হচ্ছে। মৃত্যুর বিষয়ে মেডিকেল প্রতিবেদন চাওয়া হবে। সেটা পেলে সবকিছু পরিস্কার হবে, বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।