রমজানে পণ্যের দাম বাড়বে না— আশ্বাস বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর
৪ মার্চ ২০২৪ ১৮:১৩
ঢাকা: রমজানে নতুন করে কোনো পণ্যের দাম বাড়বে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। তিনি বলেছেন, বাজারে তেলের দাম ১০ টাকা কমেছে, যা আজকালের মধ্যে পাওয়া যাবে। অন্য কোনো পণ্য সরবরাহে সংকট নেই।
সোমবার (৪ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের অধিবেশন শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন তার সঙ্গে ছিলেন।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘তেলের যে দাম কমানো হয়েছে, সেটি আজকালের মধ্যেই কার্যকর হবে। ইতোমধ্যে ফ্যাক্টরি লেভেলে তেলের দাম কমানো হয়েছে কি না, সেটা ভোক্তা অধিদফতরের মাধ্যমে ভিজিট করেছি। জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছি, বাড়তি দামে বিক্রি হলে ব্যবস্থা নিতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ডিসিদের বলেছি, উৎপাদন এলাকার পণ্যগুলোর সাপ্লাই চেনে যেন কোনো সমস্যা না হয়। পরিবহণ ব্যবস্থা যেন শৃঙ্খলভাবে হয়। এসব বিষয়ে তাদের পরামর্শ ও নির্দেশনা দিয়েছি। রমজানের মধ্যে নতুন করে কোনো পণ্যের দাম বাড়বে না। ইতোমধ্যে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে এসেছে, স্থিতিশীল রয়েছে।’ পর্যায়ক্রমে প্রতিটি পণ্যের দামই নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, প্রতিটি জেলা থেকে রফতানিযোগ্য পণ্য ও হস্তশিল্প প্রমোশন করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং ও সুপারভিশনের বিষয়েও জেলা প্রশাসকদের দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। টিসিবি’র উপকারভোগীর তালিকা হালনাগাদ করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিন জেলা প্রশাসকদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও। সেখানে ময়মনসিংহে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া ভোলায় সার কারখানা স্থাপন, বিভিন্ন জেলায় বাফার গোডাউন স্থাপন ও সাতক্ষীরা জেলায় মধু গবেষণাগার নির্মাণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
আর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনায় উৎপাদিত খাদ্য সংরক্ষণে জেলা ও উপজেলায় চাহিদার আলোকে খাদ্য গুদাম ও সাইলো নির্মাণ, নিরাপদ খাদ্য আইন বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় ও মাঠ পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ, ধান ও চাল সংগ্রহ কার্যক্রমে মাঠ পর্যায়ে সহায়তা প্রদান এবং বিধিবহির্ভূত মজুতবিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখা, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে খাদ্য গবেষণা ও পরীক্ষা ল্যাব স্থাপন করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনায় মৎস্য, প্রাণী ও পোল্ট্রি খাদ্যে ভেজাল রোধ এবং এসব খাদ্যের ওপর থেকে শুল্ক হ্রাস, মৎস্য সংরক্ষণ ও অবতরণ কেন্দ্র স্থাপন, জেলেদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞার সময়ে প্রণোদনা, উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ত কৃষি জমিতে মাছ চাষে নিরুৎসাহিত করার বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে মিল ও কলকারখানার অভ্যন্তরে অব্যবহৃত জমিসহ সকল অনাবাদী জমি চাষের আওতায় আনা, খননকৃত খাল সেচ কাজে ব্যবহার এবং সেচ প্রকল্পগুলো মাঠ পর্যায়ে মনিটরিং জোরদার করা,বাজারের অস্থিতিশীলতা রোধে উৎপাদিত খাদ্যশস্য বিপণন ও সরবরাহ চেইন ঠিক রাখার ক্ষেত্রে নিবিড় মনিটরিংয়ের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
দ্বিতীয় অধিবেশনে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে আলোচনা হয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সঙ্গে। সেখানে সড়ক-মহাসড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনার বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের তাগিদ দেওয়া হয়। এ ছাড়া, সড়ক-মহাসড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও যানজট নিরসনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নিয়মিতভাবে সভা আয়োজনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
আর রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দেশের সকল জেলাকে পর্যায়ক্রমে রেলওয়ে সংযোগের আওতায় আনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। রেলপথের নিরাপত্তা ও টিকেট কালোবাজারি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি রেলওয়ের দখলকৃত জমি উদ্ধার এবং রেল লাইনের কাছাকাছি স্থান থেকে বিধি-বহির্ভূতভাবে মাটিকাটা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম