প্রেসক্লাব নিয়ে দ্বন্দ্বে সাংবাদিকের মৃত্যু, দাফন সম্পন্ন
৩ মার্চ ২০২৪ ১৯:৫৫
বরিশাল: বরগুনার প্রেসক্লাবে আটকে রেখে মারধরের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাসুদ তালুকদার নামে এক সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২ মার্চ) রাত ১১টার দিকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই সাংবাদিকের মৃত্যু হয়।
রোববার (৩ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৫টায় বরগুনা পৌরসভার মাঠে নিহত সাংবাদিক তালুকদার মাসুদের নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এর আগে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বরগুনা প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলায় হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। নিহত সাংবাদিক তালুকদার মাসুদ দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকা ও রাজধানী টেলিভিশন নামে একটি আইপি টিভির বরগুনা জেলা প্রতিনিধি। তিনি আবদুল ওয়াহাব মাস্টারের ছেলে।
প্রেসক্লাবে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ।
নিহত সাংবাদিকের স্ত্রী সাজেদা বলেন, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টার দিকে বরগুনা প্রেসক্লাবের অভ্যন্তরে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে তর্কের একপর্যায়ে সোহেল হাফিজ ও তার ১০-১২ জন সহযোগী মিলে হামলা চালিয়ে আহত অবস্থায় মাসুদ তালুকদারকে তালাবদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বরগুনা ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাপসাতালে পাঠায়।
মারধরের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মাছরাঙা টেলিভিশনের বরগুনা প্রতিনিধি মুশফিক আরিফ বলেন, প্রেসক্লাবে ক্যারম খেলা নিয়ে দ্বন্দ্বের একপর্যায়ে প্রেসক্লাবের ৩য় তলার অফিস রুমে বসে সোহেল হাফিজের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন মিলে হামলা চালিয়ে তাকে তালাবদ্ধ করে রাখে।
নিহত মাসুদ তালুকদারের মেয়ে সাদিয়া তালুকদার তন্নি বলেন, মৃত্যুর আগে আমার বাবা ভিডিও বার্তায় বলে গেছেন; গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বরগুনা প্রেসক্লাবের ৩য় তলার অফিস রুমে বসে এনটিভির জেলা প্রতিনিধি সোহেল হাফিজের নেতৃত্বে দৈনিক ভোরের আকাশের জেলা প্রতিনিধি কাশেম হাওলাদার, এনটিভির ক্যামেরাপার্সন আরিফুল ইসলাম মুরাদসহ বেশ কয়েকজন মিলে তার উপর হামলা চালিয়ে তালাবদ্ধ করে রেখেছিল।
তন্নি আরও বলেন, আমার বাবাকে ওরা প্রেসক্লাবে আটক রেখে হামলা করে হত্যা করেছে। আমি আমার বাবার হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টার দিকে বরগুনা প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলা থেকে মাসুদ তালুকদার নামের এক সাংবাদিককে আমরা গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছিলাম। শনিবার রাত ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলা হওয়ার পর আমরা যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেব।
এদিকে সাংবাদিক মাসুদ তালুকদারের অকালমৃত্যুতে বরগুনাবাসী নিস্তব্ধ। স্ত্রী-সন্তান, বৃদ্ধ বাবা-মা ও স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে আছে বাড়ির আকাশ। স্থানীয় সাংবাদিকরা এ ঘটনায় হতবাক হয়েছেন। সুশীল সমাজ, সাংবাদিকরা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এ হত্যাকাণ্ডের দ্রুত সুষ্ঠু বিচার চেয়েছেন।
সারাবাংলা/ইআ