চিনিকলে এখনও আগুন জ্বলছে, যোগ দিয়েছে সেনা-নৌ-বিমানবাহিনী
৪ মার্চ ২০২৪ ২২:০৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো : দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চিনি পরিশোধন কারখানায় আগুন প্রায় ছয় ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে যোগ দিয়েছে সেনা, নৌ, বিমানবাহিনী এবং কোস্টগার্ডের সদস্যরা। জেলা প্রশাসন আগুনের ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।
সোমবার (৪ মার্চ) বিকেলে ৪টার দিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা এলাকায় এস আলম সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে আগুন লাগে। এস আলম গ্রুপের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রমজানে বাজারে সরবরাহ করতে পরিশোধনের জন্য রাখা একটি গুদামের প্রায় সব চিনি পুড়ে গেছে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে। কর্ণফুলী স্টেশন থেকে একটি এবং চন্দনপুরা ও আগ্রাবাদ থেকে আরও আটটিসহ মোট নয়টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করছে। পরে আরও পাঁচটিসহ এখন পর্যন্ত মোট ১৪টি ইউনিট কাজ করছে।
কর্ণফুলী উপজেলা প্রশাসনের সহকারি কমিশনার (ভূমি) পিযুষ কুমার চৌধুরী সারাবাংলাকে জানান, জেলা প্রশাসনের অনুরোধে রাত ৯টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি কোম্পানির ১০০ জন্য সদস্য আগুন নেভানোর কাজে যোগ দিয়েছে। এর আগে নৌবাহিনীর দুটি ও বিমানবাহিনীর একটি গাড়িতে যাওয়া সদস্যরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন। এছাড়া কোস্টগার্ডের সদস্যরাও কারখানা সংলগ্ন কর্ণফুলী নদীপথে এসে আগুন নেভানোর কাজে যোগ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: এস আলম’র মিলে আগুন: পুড়ছে রোজার জন্য আমদানি করা চিনি
‘আগুনের তীব্রতা এখন কিছুটা কম মনে হচ্ছে। তবে আগুন প্রথমে যে গুদামে লেগেছিল, সেখান থেকে আরও ছড়িয়ে গেছে। যে গুদামে আগুনের সূত্রপাত হয়, সেখানে কী পরিমাণ পরিশোধিত কিংবা অপরিশোধিত চিনি ছিল, সেটার চূড়ান্ত হিসেব আমরা এখনও পাইনি। তবে কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে, সেখানে প্রায় এক লক্ষ মেট্রিকটন চিনি ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ওই গুদামের সব চিনিই পুড়ে গেছে।’
ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালক দিনমনি শর্মা বলেন, ‘প্রথমদিকে পানির কিছুটা ক্রাইসিস ছিল। এখন আমরা কর্ণফুলী নদী থেকে পানি আনতে সক্ষম হয়েছি। তবে গুদামে থাকা অপরিশোধিত চিনি দাহ্য হওয়ায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে।’
ঘটনাস্থলে থাকা এস আলম গ্রুপের মানবসম্পদ বিভাগের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ফয়সাল সারাবাংলাকে বলেন, ‘এ কারখানায় আমদানি করা কাঁচা চিনি পরিশোধন করা হয়। চার লাখ মেট্রিকটন ক্যাপাসিটি আছে। ইউনিট-ওয়ান এর গুদামে আগুন লেগেছে। সেখানে এক লাখ মেট্রিকটন অপরিশোধিত চিনি ছিল। সেগুলো সব পুড়ে গেছে। রমজানের জন্য চিনিগুলো আমদানি করা হয়েছিল।’
বৈদ্যুতিক শটসার্কিট অথবা মূল কারখানায় যে বেল্টের মাধ্যমে অপরিশোধিত চিনি পরিশোধনের জন্য নেওয়া হয়, সেটা থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে এস আলম গ্রুপের এ কর্মকর্তা ধারণা করছেন।
ঘটনাস্থলে যাওয়া কলকারখানা পরিদর্শন অধিদফতরের উপ মহাপরিদর্শক শিপন চৌধুরী বলেন, ‘রমজানের আগে চিনির কারখানায় এত বড় অগ্নিকাণ্ড নাশকতা কি না, সেটা আমরা খতিয়ে দেখব।’
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহির হোসেন সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত আগুনে হতাহতের কোনো তথ্য তারা পাননি।
সারাবাংলা/আরডি/এনইউ