Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে রেস্তোরাঁ চালাতে হয়— অভিযোগ মালিকদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৫ মার্চ ২০২৪ ১৪:২২

মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে হোটেল-রেস্তোরাঁর ব্যবসা পরিচালনা করতে হয় বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ঢাকায় ৪০টি রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ১২টি লাইসেন্স থাকার পরও আজ সকালে নবাবী রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের মতো ছোট ব্যবসায়ীদের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই চলতে হয়।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে রাজধানীর পল্টনে নিজস্ব ভবনে বাংলাতেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলন থেকে রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা প্রয়োজনে এই খাতের দেখভাল করার জন্য বিশেষ টাস্কফোর্স গঠনের আহ্বান জানান।

গত বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জন প্রাণ হারান। ওই ভবনের প্রায় সব তলাতেই ছিল এক বা একাধিক রেস্তোরাঁ। এরপর রোববার (৩ মার্চ) থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি), রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) বিভিন্ন এলাকায় রেস্তোরাঁগুলোতে অভিযান চালাচ্ছে। নিরাপত্তা ইস্যুতে অনেক রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অনেক রেস্তোরাঁর মালিক অভিযোগ করেছেন, তাদের হয়রানি করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই এই সংবাদ সম্মেলন করেছে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি।

সংবাদ সম্মেলনে ইমরান হাসান একটি টাস্কফোর্স গঠনের দাবি জানিয়ে বলেন, বেইলি রোডের রেস্তোরাঁ, ভবন মালিকসহ সরকারি সব সংস্থা দায়ী। সেই ভবনে কয়েকদিন আগে একটি দুর্ঘটনা ঘটলেও মালিকপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। রেস্তোরাঁ ব্যবসার জন্য টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে। সেখানে সব অংশীজনদের রাখতে হবে। স্থানীয় সরকার যত্রতত্র ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে দিচ্ছে। সঠিক পথে লাইসেন্স না দেওয়ায় অনেকেই টেবিলের নিচ দিয়ে কাজ আদায় করছে। এই দুর্ঘটনার জন্য সরকারের উদাসীনতাও দায়ী।

রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান বলেন, বর্তমানে অভিযানের নামে ঢাকা শহরে তাণ্ডব চলছে। সিলিন্ডারের লাইসেন্স চাচ্ছে, আমরা কেন লাইসেন্স নেব? এ অবস্থা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে চিঠি দেওয়া হয়েছে, আমাদের যেন হয়রানি করা না হয়। এখন সবাই হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ছে। কে আমাদের অর্থ ফিরিয়ে দেবে? এসব অসৎ কর্মকর্তারা এতদিন কেন ঘুমিয়ে ছিলেন? সব ব্যবসা কয়েকটি করপোরেট ব্যবসায়ীর হাতের কবজায় নিয়ে কাজ করছে।

ইমরান হাসান আরও বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ফিতা কাটায় ব্যস্ত। অনেকবার তার সাক্ষাৎ চাওয়া হলেও আমাদের সময় দেননি। আমরা বরাবরই ব্যবসার সব কার্যক্রম এক ছাতার নিচে নিয়ে আসার জন্য দাবি করে যাচ্ছি। কিন্তু সরকারের কোনো সহযোগিতা নেই। বরং এখন বহুজাতিক করপোরেট কোম্পানিগুলো এই খাতটির নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিতে উঠেপড়ে লেগেছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ওপর জুলুম করে রেস্তোরাঁ ব্যবসা করপোরেট কোম্পানিগুলো নিয়ে যেতে চায়।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্য রাখেন ইমরান হাসান। পরে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সভাপতি মো. ওসমান গনি, সহসভাপতি শাহ সুলতান খোকন, যুগ্ম মহাসচিব ফিরোজ আলম সুমন ও সাংগঠনিক সম্পাদক তৌফিকুল ইসলামসগ অন্যরা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বেইলি রোডের অগিকাণ্ড স্মরণে আগামী বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ ধারণের কর্মসূচি নিয়েছে সমিতি। ইমরান বলেন, বর্তমানে দেশে চার লাখ ৮১ হাজার রেস্তোরাঁ রয়েছে। সেখানে ৩০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দুই কোটি মানুষ এ পেশার ওপর নির্ভরশীল। হয়রানি না করে টাস্কফোর্স গঠন করে রেস্তোরাঁ ব্যবসা চালু রাখার ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে সংবাদ সম্মেলনে সমিতির নেতারা বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তিনি সাক্ষাতের সময় দিলে সব সমস্যা নিয়ে কথা বলা হবে। আর যদি সময় না দেন তাহলে সব চাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অফিসে পাঠিয়ে দেব। কারণ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থায় প্রায় এক হাজার চিঠি দেওয়া হয়েছে। আমাদের সমস্যার সমাধানে তারা সময় দেয় না।

সারাবাংলা/জেজে/টিআর

টপ নিউজ বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি রেস্তোরাঁ ব্যবসা রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি রেস্তোরাঁয় আগুন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর