সমন্বয় করে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নিন: চুন্নু
৫ মার্চ ২০২৪ ২০:৩৫
ঢাকা: সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় (পয়েন্ট অব অর্ডার) অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
চুন্নু বলেন, বেইলি রোডে যে দুঃখজনক ঘটনা ঘটে গেছে, সে বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, জানি না। কিন্তু আমরা দেখলাম বিভিন্ন বিভাগ তড়িৎগতিতে ছুটছে। রাজউক একদিকে একটা হোটেল বন্ধ করে, আবার দক্ষিণ সিটি করপোরেশন যাচ্ছে এক জায়গায়, পুলিশ যাচ্ছে আরেক দিকে। একটা প্রতিযোগিতা যেন শুরু হয়ে গেছে যে কে কোনটা আটকাবে, কোনটা ভাঙবে বা কোনটা ধরবে! আমার কাছে মনে হয়, এই প্রক্রিয়ার মধ্যে এক ধরনের সমন্বয়হীনতা কাজ করছে।
জাপা মহাসচিব বলেন, আমাদের প্রশ্ন হলো— রাজউক থেকে আগে শনাক্ত করা হয়েছে যে কোন কোন ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ এবং কোন কোন ভবনগুলোতে আগুন লাগার আশঙ্কা আছে বা যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এগুলো যারা সংশ্লিষ্ট বিভাগ, তারা যদি সমন্বয় করে বা কমিটি করে যদি একটা একটা ধরে তাহলে ভালো হয়। কারণ আমরা দেখলাম তিন-চারটি বিভাগ থেকে একইসঙ্গে নানা ধরনের অ্যাকশন নিচ্ছে। আবার কয়দিন পর দেখা যাবে কেউ নেই, একদম নীরব হয়ে যাবে।
বিভিন্ন সূত্রের তথ্যের বরাত দিয়ে জাতীয় পার্টির এই নেতা জানান, ঢাকা শহরে এক হাজার ১০৬টি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে আটটি মার্কেট খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অতি ঝুঁকিপূর্ণ গাউসিয়া, ফুলবাড়িয়া বরিশাল প্লাজা, টিকাটুলির নিউ রাজধানী সুপার মার্কেট, লালবাগের আলাউদ্দিন মার্কেট, চকবাজারের শহিদুল্লাহ মার্কেট ও শাকিল আনোয়ার টাওয়ার, সদরঘাটের শরীফ মার্কেট, সিদ্দিকবাজারের রোজলিন ভিস্তা।
চুন্নু বলেন, গাউসিয়া মার্কেটে নারীদের যাতায়াত বেশি। এরকম একটি মার্কেটে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তাহলে আমার মনে হয় অনেক মানুষ মারা যাবে। এখনই মালিকপক্ষ বা ডেভেলপারদের সঙ্গে আলোচনা ও সমন্বয় করে গাউসিয়াসহ এই মার্কেটগুলোতে যদি নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করা হয় এবং সরকারের দৃষ্টি এদিকে না নেওয়া হয়, তাহলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটবে।
চুন্নু আরও বলেন, সামনে ঈদ এসেছে, এখন গরম। গাউসিয়ায় মানুষ যাবে, হাজার হাজার নারী। আমিও গিয়েছি স্ত্রীর সঙ্গে। হাঁটা যায় না, অটোমেটিক চলে যেতে হয়— এত ভিড়। সেখানে যদি আগুন লাগে, মারাত্মক অবস্থা হয়ে যাবে। মিরপুরে আছে মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট। সেই আশির দশকে হয়েছিল, প্রায় পাঁচ শ দোকান। সবকিছু ভেঙে গেছে। রাজউক ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে। তবু মার্কেটের যারা দোকান মালিক, তারা এটি ভাঙছে না। এই মার্কেটটিরও একটি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে জাতীয় পার্টির মহাসচিব চুন্নু বলেন, সমন্বয়হীনতার অভাবে আবার সমস্যা হবে। আপনি নির্দেশ দেন— রাজউক হোক, সিটি করপোরেশন হোক বা ফায়ার সার্ভিস হোক, তারা যেন সম্মিলিতভাবে কাজ করে। এক ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে এক দোকান ভাঙছে, আরেক দিক থেকে সিটি করপোরেশন বলছে ‘নো, এটা স্টপ করেন’। এটা কিন্তু এলোপাতাড়ি হচ্ছে। কাজেই আপনি নির্দেশ দেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো যেন ধীরস্থিরভাবে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়, ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর