Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সংসদে বিরোধিতার মুখে দ্রুত বিচার আইন বিল পাস

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৫ মার্চ ২০২৪ ২১:২২

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: দ্রুত বিচার আইনকে স্থায়ী করতে জাতীয় সংসদে বিল পাস হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন) আইন, ২০২৪ নামে বিলটির বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের বিরোধিতার মুখোমুখি বিলটি কণ্ঠ ভোটে পাস হয়েছে।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বিলটি পাসের জন্য প্রস্তাব করেন। এর আগে, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বিলটি সংসদে উত্থাপন করা হয়েছিল। বিলটি পাসের আগে বিরোধী দলের সদস্যরা আলোচনায় অংশ নিয়ে এটিকে কালো আইন হিসেবে অভিহিত করেন। আইনটি স্থায়ী করা হলে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় থাকবে না তখন তাদের বিরুদ্ধে এই আইন ব্যবহার হতে পারে বলেও বিরোধী দলের সদস্যরা জানান।

তবে এই আইনের উদ্দেশ্য ভালো জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতারাকর্মীরা এ ধরনের কোনো কাজ করেনি যে ক্ষমতায় না থাকলে তাদের উপর এই আইন প্রয়োগ হবে।’

অপরদিকে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘আইনটি ২০০২ সালে বিএনপি সরাকরের সময় যখন করা হয় তখন আপনারা বলেছিলেন এটা নিবর্তনমুলক আইন, কালো আইন। এই আইনটি দিয়ে রাজনৈতিক কারণে বা যেকোনো কারণে সরকার ইচ্ছা করলে যেকোনো নাগরিককে হয়রানি বা হ্যারাজ করতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘র‌্যাব নিয়ে বিষয় অনেক প্রশ্ন। অথচ যখন বিএনপি এই আইন করে, তখন এই আওয়ামী লীগসহ অনেক রাজনৈতিক দল এর বিরোধিতা করেছিল। সেই র‌্যাব এখনও টিকে আছে এবং তারা কাজ করছে। এই সরকারের কাছে আমার অনুরোধ, যদি প্রয়োজন পড়ে আপনি আরও দুয়েক বছরের জন্য বাড়ান। প্লিজ আইনটিকে আপনারা স্থায়ী করবেন না।’

জাতীয় পার্টির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গর্ত খুঁড়লে সেই গর্তে পড়তে হয়। বিএনপি গর্ত খুঁড়েছিল, গর্তে পড়তে হয়েছে। আজ আপনরা স্থায়ী করছেন, সময় তো সবসময় এক রকম যায় না। স্থায়ী না করে আইনটির মেয়াদ ৪ বা ৫ বছর বাড়াতে পারেন।’

জাতীয় পার্টির আরেক সদস্য মাসুদউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘যখন ২০০২ সালে আইনটি হয়েছিল তখন সবাই বিরোধিতা করেছি। এই ২২ বছরে মানুষের অবস্থা কী হয়েছে সেটা জনমত যাচাই করে দেখতে পারেন। যেহেতু সময় শেষ, তাই চার বছর বাড়াতে পারেন।’

এর পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘২০০২ সালে যখন এই আইনটি হয় সেসময় পরিস্থিতি অরাজক ও অস্থিতিশীল ছিল। যেখানে-সেখানে নানান ধরনের ক্রাইম সংগঠিত হতো। সেজন্যই হয়তো তখনকার সরকার এইটা করেছিল। আমি মনে করি, এই আইনটি করার উদ্দেশ্য ছিল যাতে তাৎক্ষণিক বিচার পায়। যারা অপরাধ করে অল্প সময়ের মধ্যে যেন তাদের বিচার হয়, তারা যেন শান্তি পায়- উদ্দেশ্যই এটা ছিল। চাঁদাবাজি, যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা, ক্ষতিসাধন, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিনষ্ট করা, ছিনতাই, দস্যুতা, ত্রাশ, অরাজক পরিস্থিতি, দরপত্র বেচাকেনা, দাখিল- এইসবে যারা বাধা দেন তাদের জন্যই আইনটি তৈরি করা হয়েছিল।’

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আইনটি একইরকম আছে। কোনো সংশোধন করিনি। শুধু স্থায়ী আইনে পরিণত করা হয়েছে। গত ২২ বছর ক্রমাগত এই আইনটির সময় বাড়িয়ে গেছি। দ্রুত বিচার যাতে সবার কাছে পৌঁছে দিতে পারি সেটিই ছিল মূল উদ্দেশ্য। কাউকে উদ্দেশ্য করে বা কারও ক্ষতি করার জন্য এই আইন হয়নি। এ পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক নেতাকে এই আইনের আওতায় এনে বিচার করে শাস্তি দেওয়া হয়নি। যাচাই-বাছাই করে দীর্ঘ সময় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মনে করেছি যে, এই আইনটির জন্য বার বার সময় না বাড়িয়ে এটিকে স্থায়ী আইনে পরিণত করা যায়।’

সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম

টপ নিউজ দ্রুত বিচার আইন বিল পাস স্থায়ী


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর