Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৩ দিন ধরে গুদামে চুরি, নৌপথে মালামাল পাড়ি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৬ মার্চ ২০২৪ ০০:২৬

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামে আমদানি পণ্যের একটি গুদাম থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকার মালামাল চুরির ঘটনায় সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গুদামের টিনের চাল খুলে টানা তিন দিন ধরে চুরি করে চার জন। বাকি তিনজন তাদের কাছ থেকে সেই চোরাই মাল কেনে বিক্রির জন্য। সাতজনই একই সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য।

সোমবার (৪ মার্চ) রাতভর কর্ণফুলী উপজেলা ও নগরীর কোতোয়ালি থানার রিয়াজউদ্দিন বাজারে অভিযান চালিয়ে সদরঘাট থানা পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতার সাত জন হলেন- মো. ছানাউল্লাহ (২৪), মো. নাজমুল (২৪), মো. শাহীন (২৬), আব্দুল নুর (২২), মিনহাজ মামুন (২২), মো. মামুন (৩০) এবং হাফেজ আহমদুর রহমান (৬০)।

পুলিশ জানায়, নগরীর সদরঘাট থানার স্ট্যান্ড রোডে সাবেক কাউন্সিলর রেখা আলমের ভবনের দোতলায় মোহাম্মদ সাব্বিরের মালিকানাধীন একটি গুদামে চুরির ঘটনায় সোমবার মামলা দায়ের হয়। সাব্বির নিজেই মামলা করেন। অভিযোগ পেয়েই অভিযানে নেমে পুলিশ সাতজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়, যাদের কয়েকজনকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়।

অভিযানে অংশ নেওয়া সদরঘাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অর্নব বড়ুয়া সারাবাংলাকে জানান, মোহাম্মদ সাব্বির সুপারমুন ব্র্যান্ডের ইমার্জেন্সি লাইট, টর্চলাইট ও বোতলজাত তরল গ্যাসের আমদানিকারক। চীন থেকে তিনি এসব মালামাল আমদানি করেন। তার ‍গুদাম থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকার এ তিনটি পণ্য চুরি করা হয়।

তিনি বলেন, ’১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা তিন দিন ধরে গুদামটিতে চুরি হয়েছে। গুদামের ওপর ছিল টিনের চালা। পেছনে ঝোপঝাঁড়। চোরের দল চালার নাট-বল্টু খুলে টিন আলাদা করে। রাতের আঁধারে সেখান থেকে পণ্যভর্তি কার্টন নিয়ে প্রথমে ঝোঁপে রাখে। সেখান থেকে মাত্র আধা কিলোমিটার দূরত্বে কর্ণফুলী নদীতে নিয়ে যায় সেগুলো। এর পর সাম্পানে তুলে নদী পার হয়ে যায়। গুদামের পেছন দিকে সাধারণত সিকিউরিটি কর্মী থাকে না। এজন্য চুরির বিষয়টি তারা প্রথমে বুঝতে পারেনি।’

বিজ্ঞাপন

পুলিশ জানায়, কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা এলাকা থেকে ছানাউল্লাহ, শাহীন, মামুন, আব্দুল নুর ও মিনহাজ মামুনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী নগরীর কোতোয়ালি থানার পুরাতন রেলস্টেশন এলাকা থেকে নাজমুলকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর রিয়াজউদ্দিন বাজারের চৈতন্য গলি থেকে হাফেজ আহমদুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়।

মিনহাজ মামুন, হাফেজ আহমদুর রহমান ও মামুনের কাছ থেকে চুরি করা ৯২টি ইমার্জেন্সি লাইট, ১৩৭টি টর্চলাইট ও ১৭ কার্টন তরল গ্যাসের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। তবে চুরি যাওয়া সব মাল উদ্ধার করা যায়নি বলে জানান এসআই অর্নব বড়ুয়া।

সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘হাফেজ আহমেদুর রহমান রিয়াজউদ্দিন বাজারের একজন ব্যবসায়ী। উনার প্রতিষ্ঠানের নাম রহমানিয়া তালা-চাবিঘর। মিনহাজ মামুনের কর্ণফুলী উপজেলায় ১০টি দোকান ও শোরুম আছে। তিনি পাঁচতলা ভবনের মালিক। তিনিই মূলত চোরাই পণ্য কিনে থাকেন। এরপর সেগুলো দেন সাম্পান চালক মামুনকে। আহমেদুর রহমান চোরাই পণ্য সংগ্রহ করেন মামুনের কাছ থেকে। এরা তিনজনই চোরাই পণ্য বেচা-কেনা করেন।’

বাকি চারজনের বিষয়ে এসআই অর্নব বলেন, ‘এরা সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সদস্য। দিনে বাসা খালি পেলে দরজা ভেঙে চুরি করে। রাতে গুদামে কিংবা দোকান-অফিসে চুরি করে। তবে সাধারণত যে স্থাপনার চালা টিনের, তারা সেখানেই চুরি করে। লোহার গ্রিল কেটে করে না। তাদের বাড়ি কর্ণফুলী উপজেলায়। শহরে চুরি শেষে নৌপথে তারা বাড়িতে চলে যায়। এজন্য তারা এতদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল।’

তিনি বলেন, ‘গ্রেফতার চোরদের সর্দার হলো সদরঘাটের সাহেবপাড়ার রহমান। গুদামে চুরির বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা প্রথমে তাকে গ্রেফতার করি। রহমান বর্তমানে কারাগারে আছে।’

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

চুরি নৌপথ মাল

বিজ্ঞাপন

খুলনায় যুবকের পেটে মিলল ইয়াবা
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০২

আরো

সম্পর্কিত খবর