পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় ডিসিদের ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ
৫ মার্চ ২০২৪ ২৩:৪৪
ঢাকা: জেলায় জেলায় চলছে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কার্যক্রম। এর মাধ্যমে যেন দেশের পরিবেশ ও সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদের অবক্ষয় না ঘটে সেদিকে নজর রাখতে জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। এর জন্য সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) জেলা প্রশাসক সম্মেলন ২০২৪-এ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অধিবেশন শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ এবং বন অধিদফতরের প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, জলমহাল ও জলাভূমি ভরাটের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। পাহাড়-টিলা সংরক্ষণ এবং পাহাড়ের ঢাল ও পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণ বন্ধ করতে হবে।
মন্ত্রী এ সময় জেলা প্রশাসকদের প্রতি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করার পাশাপাশি এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়া ইটভাটা যেন কোনোভাবেই চালু করতে না পারে, তার জন্য সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। এ ছাড়া সরকারি কাজে শতভাগ ব্লক ইট ব্যবহার নিশ্চিত করা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও শিল্প-কারখানায় ইটিপি চালু রাখতে মনিটরিং করার অনুরোধ জানান।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রিন ফাইন্যান্সিংয়ের আওতায় এক হাজার কোটি টাকা তফসিলি ব্যাংকের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের মধ্যে পরিবেশবান্ধব টেকনোলজি ব্যবহারের জন্য ৫ শতাংশ হারে ঋণ দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে জেলা ঋণ কমিটি ও জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাধ্যমে ইটভাটা মালিকদের বিষয়টি অবহিত করা ও ঋণ প্রদানের মাধ্যমে ব্লক ইট উৎপাদনে উৎসাহিত করতে জেলা প্রশাসকদের আহ্বান জানান।
মন্ত্রী বলেন, বায়ুদূষণ রোধে ব্যবস্থা নিতে রাস্তা নির্মাণ, কনস্ট্রাকশন সামগ্রী, ইটভাটা, বর্জ্য ইত্যাদির মাধ্যমে বায়ুদূষণ রোধে জেলাভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। সীসাযুক্ত এসিড ব্যাটারি পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ কার্যক্রম বন্ধে জেলা প্রশাসন কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করতে পারেন।
সাবের হোসেমন চৌধুরী আরও বলেন, প্লাস্টিকের দূষণ রোধ ও সিংগেল ইউজ প্লাস্টিক বন্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। পরিবেশ, প্রতিবেশ, বন ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও দূষণ রোধে ইনোভেটিভ আইডিয়া গ্রহণ ও বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসকগরা পদক্ষেপ নিতে করতে পারেন। নিষিদ্ধ পলিথিন শপিং ব্যাগের ব্যবহার বন্ধে জেলা প্রশাসকরা কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেন। মাঠ পর্যায়ের সব সরকারি অফিসে সিংগেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে উদ্যোগ নিতে পারেন।
মন্ত্রী বলেন, বনভূমি রক্ষায় ও অবৈধ জবরদখল উচ্ছেদে জেলা প্রশাসকদের সক্রিয় সহযোগিতা প্রয়োজন। অবৈধ করাতকল বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতেও জেলা প্রশাসকগণের সক্রিয় সহযোগিতা প্রয়োজন হবে। উপকূলীয় অঞ্চলে সবুজ বেষ্টনী করতে বন অধিদফতরের উদ্যোগে জেলা প্রশাসকদের সহযোগিতা কাম্য।
সাবের চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের চলমান ২৪৮টি প্রকল্প মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। প্রকল্পগুলোর সঠিক বাস্তবায়নে মাঠ প্রশাসন প্রকল্পগুলো মনিটরিং ও তদারকি করতে পারে।
সারাবাংলা/আরএফ/টিআর