Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চিনিকলের বিষাক্ত তরলে কর্ণফুলীতে ভেসে উঠছে মরা মাছ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৬ মার্চ ২০২৪ ১৩:২৪

বিষাক্ত রাসায়নিকের কারণে পানির রঙ লাল হয়ে গেছে। ছবি: শ্যামল নন্দী।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে আগুন কবলিত এস আলম গ্রুপের চিনিকলের আশপাশে কর্ণফুলী নদীতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ভেসে উঠছে। এর মধ্যে কিছু মরা মাছ, কিছু দুর্বল হয়ে মৃতপ্রায় অবস্থায় ভেসে উঠছে। এছাড়াও কাঁকড়া, সাপ-ব্যাঙসহ আরও জলজ প্রাণী বিভিন্ন অংশে মরে পড়ে থাকতে দেখেছেন স্থানীয়রা।

গবেষকরা বলছেন, অপরিশোধিত চিনি আগুনে পুড়ে গলে পরিণত হওয়া বিষাক্ত রাসায়নিক পানির সঙ্গে মেশার কারণে মাছ মরে ও দুর্বল হয়ে ভেসে উঠছে।

বুধবার (৬ মার্চ) সকাল থেকে শাহ আমানত সেতুর দক্ষিণে কর্ণফুলী নদীর বিভিন্ন অংশে ভেসে ওঠা মাছ ধরতে ভিড় জমিয়েছেন শত শত মানুষ।

সকালে কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগরে বাংলাবাজার খালে গিয়ে দেখা যায়, নদী ও খালের পানির রঙ বদলে লাল গেছে। অজস্র মাছ মরে ভেসে উঠেছে। বিভিন্ন বয়সী কমপক্ষে শ’দুয়েক মানুষকে ভেসে ওঠা মাছ ধরতে দেখা গেছে।

তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন নদীতে নোঙ্গর করা জাহাজের শ্রমিকরাও।

মাছ ধরতে আসা স্থানীয় আবদুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত থেকে ভোইল্ল্যা, গলদা চিংড়ি, টেংরা এসব মাছ পাওয়া যাচ্ছে। আগে কখনও এভাবে মাছ ভাসতে আমরা দেখিনি। পানির রঙও লাল হয়ে গেছে। চিনিকলের পানি মেশার কারণে এটা হতে পারে বলে ধারণা করছি।’

স্থানীয় একটি ময়দার মিলের শ্রমিক ফেরদৌস শেখ সারাবাংলাকে বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত থেকে এখানে মাছ পাওয়া যাচ্ছে। সকালে মাছ ধরতে এসে ২০-৩০টা পেয়েছি। মাছ পাওয়া আরও অনেকেই আসছে।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা নদী গবেষক ডক্টর মনজুরুল কিবরিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘মাছ মরে যাচ্ছে মানে নদীর পানি বিষাক্ত হয়েছে। এ বিষাক্ত পানি যতদূর যাবে ততদূর পর্যন্ত নদী দূষিত হবে। ড্রেনেজটা অন্যদিকে প্রবাহিত করতে পারলে ভালো হত। মাছের সঙ্গে নদীতে থাকা প্লাংকটন ও জলজ উদ্ভিদও মারা যাচ্ছে। এগুলো আমরা সাধারণত চোখে দেখি না।’

হালদা নদীতে এর প্রভাব পড়বে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সেটা জোয়ারের ওপর নির্ভর করছে। কর্ণফুলীর এ দূষিত পানি জোয়ারের পানির সঙ্গে মিশে গিয়ে যদি হালদাতে পড়ে অবশ্যই এর প্রভাব পড়বে। এতে হালদার কার্প জাতীয় প্রজনন সক্ষম মাছের ক্ষতি হবে।’

জানতে চাইলে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। আমরা আমাদের ঊদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। কিছুক্ষণ পর আমি নিজেই সেখানে যাব। জোয়ার-ভাটা হলে এটা কমে যাবে। তবে এটা দীর্ঘস্থায়ী হলে বিষয়টি আরও খারাপ হবে।’

এর আগে, সোমবার (৪ মার্চ) বিকেল চারটায় এস আলম সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ইউনিট সেখানে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। সঙ্গে যুক্ত হন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী এবং কোস্টগার্ডের সদস্যরাও। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রাত ১১টার দিকে, আগুন লাগার সাত ঘণ্টা পর সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর আরও একদিন পেরিয়ে গেলেও আগুন পুরোপুরি নেভেনি।

সারাবাংলা/আইসি/এমও

এস আলম এস আলম গ্রুপের চিনিকল কর্ণফুলী চিনিকলের বিষাক্ত তরল মরা মাছ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

বাংলাদেশ-ভারত টেস্টে হামলার হুমকি!
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৩৫

সম্পর্কিত খবর