বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উদাহরণ সৃষ্টি করেছি: মেয়র টিটু
৭ মার্চ ২০২৪ ২২:০৫
ঢাকা: ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র ইকরামুল হক টিটু আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আবারও প্রার্থী হয়েছেন। বিগত সময়ে ময়মনসিংহ সিটির উন্নয়নে তিনি নিরলসভাবে কাজ করেছেন। বিশেষ করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে তিনি উদাহরণ তৈরি করেছেন বলে মনে করেন অনেকেই।
ইকরামুল হক টিটু বলেন, বাসা-বাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহে ক্লিনসিটি নামক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে বর্জ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্রিজম ফাউন্ডেশন লি.-এর সহযোগিতায় নির্মাণ করা হচ্ছে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট। এ ছাড়াও, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্পটিও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। শহর আলোকিতকরণেও গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের প্রায় ১৭১ কিলোমিটার সড়কে পোলসহ আধুনিক এলইডি বাতি স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘করোনার অভিঘাত এবং রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বৈশ্বিক সংকট সৃষ্টি না হলে নগর উন্নয়নে আরও কাজ করা সম্ভব হতো। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা, মানুষকে নিরাপদে রাখা এবং মানুষের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে আমি নিরলসভাবে কাজ করে গেছি।’
এ ছাড়া ২০২২ সালে স্থাপন করা হয়েছে একটি নগর মাতৃসদন এবং তিনটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। এসব কেন্দ্র থেকে মা, শিশুসহ সাধারণ জনগণ কম খরচ বা বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন। মশক নিধনে হটস্পট চিহ্নিতকরণ এবং নিয়মিত ক্র্যাশ প্রোগ্রামের ফলে সিটিতে এখনো স্থানীয়ভাবে এডিস মশার কামড়ে আক্রান্ত ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায়নি। তাছাড়া ভিটামিন এ প্ল্যাস ক্যাম্পেইন, ইপিআই কার্যক্রম, কৃমি নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদিতেও আমরা শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছি।
আমরা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নেরও চেষ্টা করেছি। ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১১৯২ জনকে বিউটি পার্লার, কম্পিউটার, ড্রাইভিং, মোবাইল সার্ভিসিং ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ, ২৫৭৬ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষা বৃত্তি, ১৪৭৬ জনকে পুষ্টি সহায়তা, ৩১২ জন কিশোরীকে স্বাস্থ্য-পুষ্টি পরামর্শ ও পুষ্টি উপকরণ প্রদান, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য নলকূপ, রোড লাইট, ড্রেন, টয়লেট, সেপটিক ট্যাংক ইত্যাদি নির্মাণের মাধ্যমে সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ছড়িয়ে দিতে শম্ভুগঞ্জ ব্রিজের কাছে স্থাপন করেছেন জয়বাংলা চত্বর। চত্বরটি মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর স্মরণে এক অনন্য স্থাপত্যে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া টাউনহলে স্থাপন করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু গ্যালারি। এখানেও প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থী বঙ্গবন্ধু দুর্লভ ছবি, ডকুমেন্টারি, বাণী ইত্যাদি দেখার সুযোগ পাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘নাগরিকদের নিরাপত্তা আর নগরের উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছি। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে মহাপরিকল্পনা তৈরি করে উন্নয়নের চেষ্টা করেছি। সিটির উন্নয়নে ১৫৭৫ কোটি টাকার মধ্যে মাত্র ৩০০ কোটি টাকার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। যানজট নিরসন, সড়ক প্রশস্তকরণ, বর্জ্য ব্যস্থাপনা, বাস ট্রাক স্ট্যান্ড নির্মাণ, শিশু পার্ক নির্মাণ ইত্যাদি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে নগরকে আধুনিক এবং জনবান্ধব করে তুলতে নগরবাসী আবারও আমাকে সুযোগ দেবে বলে আমি মনে করি।’
ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে অনেকেই মিথ্যা প্রতিশ্রুতি বা আশ্বাস দিয়ে বিভ্রান্ত করতে চাইবে, আপনারা কোনো প্রার্থীর মিথ্যা প্রতিশ্রুতিকে বিশ্বাস করবেন না এবং বিভ্রান্ত হবেন না।’
টিটু বলেন, সিটি করপোরেশন একটি নিদিষ্ট বিধিমালা ও আইন অনুযায়ী চলে। এ ছাড়া রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে একটি সুনির্দিষ্ট পরিপত্র অনুসরণ করে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সিটির উন্নয়নে যেসব প্রকল্প বরাদ্দ দিয়েছেন এসব প্রকল্পগুলো দৃশ্যমান হলে নগরীর চেহারা পাল্টে যাবে।’
এ জন্য অসমাপ্ত ও প্রক্রিয়াধীন কাজগুলো বাস্তবায়ন করতে এবং একটি পরিকল্পিত সমৃদ্ধ আধুনিক ময়মনসিংহ নগরী গড়তে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
সারাবাংলা/একে