ইবিতে ‘ডে কেয়ার সেন্টারে’র বরাদ্দ থাকলেও নেই বাস্তবায়ন
৮ মার্চ ২০২৪ ১৮:৫০
ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নারী শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীর শিশুদের জন্য ‘ডে কেয়ার সেন্টার’ চালুর দাবি দীর্ঘদিনের। এর প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সেন্টার প্রতিষ্ঠার জন্য ১০ লাখ টাকা বাজেটও রাখা হয়েছে। তবে সে বিষয়ে এখনও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা অতি দ্রুত ‘ডে কেয়ার সেন্টার’ চালুর দাবি জানিয়েছেন।
নারী শিক্ষকরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৪৫ বছর পরও কোনো ডে কেয়ার সেন্টার চালু করা হয়নি। যার ফলে তারা শিশুসন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েন। এছাড়াও শিশুদের দুধ খাওয়ানো, দেখাশোনা ও রাখার নির্দিষ্ট জায়গা নেই। অনেক সময় সন্তানদের বাড়িতে রেখে আসতে হয়। এতে সঠিকভাবে তারা ক্লাস-পরীক্ষায় বা অন্যান্য কাজে মনোনিবেশ করতে পারেন না। তাই প্রশাসনের উদ্যোগে নারী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শিশু সন্তানদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ডে কেয়ার সেন্টার’ স্থাপন করা প্রয়োজন।
জানা গেছে, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছভর্তির পর কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত টাকার মধ্যে ডে কেয়ার সেন্টারের বাবদ ১০ লাখ, কনফারেন্স রুম তৈরি বাবদ ২৫ লাখ, ডিনস অ্যাওয়ার্ড বাবদ ৫ লাখ এবং আইটি সার্ভিস চার্জের জন্য ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
৭ সদস্য বিশিষ্ট এই বরাদ্দ কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) শেখ জাকির হোসেন সদস্য সচিব হিসেবে আছেন। গত বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া।
কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষার টাকা থেকে ডে কেয়ার সেন্টার চালুর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সেই টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ডে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে কেনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’
সদস্য সচিব জাকির হোসেন জানান, এই ফান্ডের টাকা সংরক্ষিত আছে।
ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি ও শিক্ষক সমিতির নারী সদস্য সাহিদা আখতার আশা বলেন, ‘পেশার বাইরেও প্রত্যেক নারী একেকজন মা। মা হিসেবে যেমন নিজেদের সন্তান দেখতে হয় তেমনি কর্মক্ষেত্রেও দায়িত্ব পালন করতে হয়। আর দায়িত্ব পালন করতে গেলে অন্তত বাচ্চাটাকে রাখার মত একটা জায়গা প্রয়োজন। যেখানে শিশুর বিকাশের জন্য দেখাশোনা, খেলাধুলা ও বিনোদনের ব্যবস্থা থাকবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডে কেয়ার সেন্টার প্রয়োজন। অনেক সময় দেখা যায় বাচ্চাদের রাখার জায়গা হয় না। এজন্য কর্মক্ষেত্রেও একটা ইফেক্ট পড়ে। আমরা চাই যেহেতু বরাদ্দ আছে, অতি দ্রুত এটি বাস্তাবায়ন হোক। আমরা প্রশাসনের কাছেও বিষয়টি তুলে ধরবো।’
এদিকে এমন উদ্যোগের বিষয় ঠিক জানা নেই বলে জানান উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এমন একটি উদ্যোগের কথা শুনেছি। তবে বাস্তবায়নের বিষয়ে আমার সঠিক জানা নেই।’
সারাবাংলা/এমও