বিজিএমইএ নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৮৯ শতাংশ
৯ মার্চ ২০২৪ ২১:৪১
ঢাকা: দেশের পোশাক খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ২০২৪-২০২৬ মেয়াদে পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে।
শনিবার (৯ মার্চ) ঢাকার উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে ও চট্টগ্রামের দক্ষিণ খুলশীতে অবস্থিত বিজিএমইএ’র আঞ্চলিক কার্যালয়ে একযোগে ভোট চলে।
ভোটগ্রহণ শেষে নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলামিন জানান, ‘এবারের বিজিএমইএ নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। বড় কোনো অভিযোগ ছিল না, ছোট-খাটো দুয়েকটি অভিযোগ ছিল। নির্বাচনে মোট ২ হাজার ৪৯৬ ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন ২ হাজার ২২৬ জন। যা শতকরা হিসাবে ৮৯ শতাংশের কিছু বেশি। এর মধ্যে ঢাকায় ২ হাজার ৩২ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন এক হাজার ৮৩৯ জন, যা ৯০ শতাংশের বেশি। আর চট্টগ্রামে ৪৬৪ জনের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন ৩৮৭ জন। যা শতকরার হিসাবে ৮৩ দশমিক ৪০ শতাংশ।
এদিকে, ভোটগ্রহণ শেষে গণনার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিজিএমইএ নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড। এবারের নির্বাচনে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৩৫টি পরিচালক পদের বিপরীতে লড়ছেন ৭০জন প্রার্থী।
প্রসঙ্গত, গেল কয়েকবছর ধরে বিজিএমইএ নির্বাচনে মূলত দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্ধিতা করে আসছে। সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম- এই দুটি প্যানেলের নেতারাই বিজিএমইএ’র সভাপতি ও অন্যান্য পদে নির্বাচিত হয়ে থাকেন। এবার ফোরামের নেতৃত্বে রয়েছেন বিজিএমইএ’র সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও সুরমা গার্মেন্টেসের কর্ণধার ফয়সাল সামাদ। অপরদিকে সম্মিলিত পরিষদের নেতৃত্বে রয়েছেন বিজিএমইএ’র বর্তমান কমিটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও সেহা ডিজাইন (বিডি) লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম মান্নান কচি।
বিজিএমইএর বর্তমান সভাপতি ফারুক হাসান সম্মিলিত পরিষদ থেকে প্রতিদ্বন্ধিতা করে জিতে এসেছেন। আর তার আগের কমিটির সভাপতি ড. রুবানা হক ফোরামের নেতা। রুবানা হকের কমিটিতে ফয়সাল সামাদ জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ছিলেন। আর সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল লিডার এস এম মান্নান কচি সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত। ফলে ‘প্রশ্ন না উঠে’ এমন নির্বাচন করার আহ্বান বারবার জানিয়ে আসছিলেন ফোরাম নেতা ফয়সাল সামাদ।
এদিকে, ‘সম্মিলিত পরিষদ’ ভোটে প্রভাব বিস্তার করছে বলে অভিযোগ এনেছে প্রতিদ্বন্ধিতায় থাকা প্যানেল ‘ফোরাম’। এমনকি ভোট শুরুর আগে মারধরের ঘটনাও ঘটেছে। নির্বাচনের আগের রাতে ফোরামের ব্যানার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন ফোরাম নেতারা। সবমিলিয়ে ভোটের পরিবেশ ভালো থাকলেও ফল নিয়ে শঙ্কিত ফোরাম।
এবারের নির্বাচনে বড় সংখ্যক তরুণ উদ্যোক্তা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যাদের বেশিরভাগই পারিবারিক ব্যবসার উত্তরাধিকারি হিসেবে আসা নবীন শিল্পোদ্যোক্তা। সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম মিলিয়ে মোট ২১জন দ্বিতীয় প্রজন্মের ব্যবসায়ী রয়েছেন নির্বাচনে।
নির্বাচনে পরিচালক নির্বাচিত হওয়ার পর সংগঠনের সভাপতি এবং প্রথম সহসভাপতি, সিনিয়র সহসভাপতি এবং দু’জন সহসভাপতি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হবে। তাদের মনোনয়ন বাছাই শেষে ১৯ মার্চ চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে কমিশন। সাধারণত নির্বাচনের দিনই নেতা নির্বাচন চূড়ান্ত হয়। নেতা নির্বাচন নিয়ে আপত্তি থাকলে আপিলের সুযোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে আপিল নিষ্পত্তির পর ২৮ মার্চ চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হবে। যারা ২০২৪-২৬ মেয়াদের জন্য দায়িত্ব নেবেন।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০২১ সালে। যেখানে সম্মিলিত পরিষদ ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৩৫ পরিচালকের ২৪টিতে জয়ী হয়। সভাপতি নির্বাচিত হন ফারুক হাসান। ২০২৩ সালের এপ্রিলে এ পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দুই দফায় তারা এক বছর সময় বাড়িয়ে নেন। ২০২৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪-২৬ মেয়াদে বিজিএমইএ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়।
সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম