২৬ মার্চ অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাবে নগরবাসী
১০ মার্চ ২০২৪ ০০:১৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার চট্টগ্রাম নগরীতে বীর শহিদদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হচ্ছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে চট্টগ্রামবাসী এ স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন।
শনিবার (৯ মার্চ) দুপুরে পাহাড়তলী থানার উত্তর কাট্টলীতে অস্থায়ী স্মৃতিসৌধের কার্যক্রম পরিদর্শন করতে গিয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের সময় সমুদ্রের পার্শ্ববর্তী উত্তর কাট্টলীতে ৩০ একর জায়গায় নতুন মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও যাদুঘর নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে এর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে চট্টগ্রামের অনন্য অবদান আছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে এখান থেকেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হয়। ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দান ও বঙ্গবন্ধুর ছয় দফাসহ অনেক কিছুই চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এখানে নৌ-কমান্ডোরা কাজ করেছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, চট্টগ্রামে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ, স্মৃতিস্তম্ভ ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নেই।
তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর যখন কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করেন তখন তিনি এখানে একটি নতুন মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ ও জাদুঘর নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। এখানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে সমুদ্রের পাশে দৃষ্টিনন্দন একটি স্থানে ৩০ একর জায়গার ওপর স্থায়ীভাবে একটি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ ও যাদুঘর করা হবে। কিন্তু সেটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই এখানে অস্থায়ীভাবে হলেও একটি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ হবে এটা চট্টগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল।
১৭ মার্চের আগেই অস্থায়ী স্মৃতিসৌধের কাজ শেষ হবে জানিয়ে আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বর শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হয়। সেটি আমাদের মূল স্পিরিটের সঙ্গে যায় না। সেজন্য মুক্তিযোদ্ধাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এখানে অস্থায়ীভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মৃতিস্তম্ভ করতে যাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে কম সময়ের মধ্যে অর্থাৎ ১৭ মার্চের আগে এটার কাজ সম্পন্ন করতে পারব। যেখানে আগামী ২৬ মার্চ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করা যাবে।’
বধ্যভূমি সংরক্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে যেসব বধ্যভূমি আছে সেগুলো সংরক্ষণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আছে। পাহাড়তলীর খুলশীতে যেসব বধ্যভূমি আছে সেগুলো সংরক্ষণের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় মামলাজনিত কারণে এ কাজটি শেষ করতে পারেনি। এখন মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে, কিছুদিনের মধ্যে চট্টগ্রামের বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণের কাজ শুরু হবে।’
এ সময় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার মোজাফফর আহমদ ও জেলা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার এ কে এম সরোয়ার কামালসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম