চট্টগ্রামে মাটির নিচে যাচ্ছে ডিশ-ইন্টারনেটের তার
১২ মার্চ ২০২৪ ১৭:৪২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে মাটির নিচ দিয়ে ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভির সংযোগের তার টানার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে সিটি করপোরেশন। প্রাথমিকভাবে তিনটি ওয়ার্ডে এ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে, যা দৃশ্যমান হবে ছয় মাসের মধ্যে। সামিট গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সামিট কমিউনিকেশন্স লিমিটেড ভূ-গর্ভে তার টানার কাজ পেয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) নগরীর টাইগারপাসে নগর ভবনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম এবং সামিট কমিউনিকেশন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ আল ইসলামের মধ্যে এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এসময় সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম নগরীতে মাটির ওপর খুঁটি বসিয়ে বিদ্যুৎ, টেলিফোনসহ বিভিন্ন সেবা সংস্থার সংযোগ, ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভির সংযোগ লাইন নেয়ার কারণে রীতিমতো তারের জঞ্জাল সৃষ্টি হয়েছে। হাঁটতে গেলে মাথার ওপর যেন ঝুলে থাকে অপরিকল্পিত ও সমন্বয়হীনভাবে সম্প্রসারিত ঝুঁকিপূর্ণ তারের স্তূপ। ঝড়-বাতাসে তার ছিঁড়ে রাস্তায় পড়ে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। নগরীর সৌন্দর্য, অগ্নিকাণ্ডসহ নানা ঝুঁকি বিবেচনায় চসিক দীর্ঘদিন ধরে মাটির নিচ দিয়ে তার টানার কথা বলে আসছিল, যা অবশেষে বাস্তবে রূপ পেয়েছে।
চসিকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে ক্যাবল টিভির সংযোগ ও ইন্টারনেটের তার মাটির নিচ দিয়ে টানা হবে। লালখান বাজার, জামালখান ও বাগমনিরাম ওয়ার্ড দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। ছয় মাসের মধ্যে তিনটি ওয়ার্ডের তার ভূ-গর্ভের ভেতর দিয়ে টানার কাজ সম্পন্ন হবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে ডিশ, ইন্টারনেট সংযোগ ক্যাবল ব্যবস্থাপনা হলে বৈদ্যুতিক পিলারে দুর্ঘটনা কমবে। শহরের সৌন্দর্য বাড়বে। আবার তার কাটা ও চুরি রোধ হওয়ায় ব্যবসায়ীরাও লাভবান হবেন।’
‘বাণিজ্যিক নগরী হিসেবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চট্টগ্রামের যে গুরুত্ব আছে তা ম্লান হয়ে যাচ্ছে তারের জঞ্জালের জন্য। নগরীর সৌন্দর্য ও নিরাপত্তার স্বার্থে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তারের জঞ্জাল অপসারণ করতে চাই। ছয় মাসের মধ্যে প্রাথমিকভাবে তিনটি ওয়ার্ডের ঝুলন্ত ডিশ-ইন্টারনেটের তার ভূ-গর্ভে নেব আমরা। এরপর তিন ওয়ার্ডের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পুরো নগরীর ডিশ-ইন্টারনেটের তার ভূ-গর্ভে নেওয়া হবে,’- বলেন মেয়র।
সামিট কমিউনিকেশন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ আল ইসলাম বলেন, ‘ড্রেনেজ এবং স্যুয়ারেজ সিস্টেমকে কাজে লাগিয়ে ডাক্টিং করে আমরা জলনিরোধক ফাইবার অপটিক অবকাঠামো গড়ে তুলব। ফাইবার টু দ্যা হোম প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে মূল সড়ক থেকে অলি-গলি এবং সেখান থেকে প্রতিটি বাড়িতে সংযোগ দেওয়া হবে। আমাদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতার কারণে কোনো আইএসপি যত ইচ্ছা গতির সংযোগ গ্রহণ করতে পারবে। সেবা প্রদানে কোনো ধরনের বাধা সৃষ্টি হবেনা।
‘আগামী ৫ বছরের মধ্যে ডিশ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানরা ডিজিটাল ডিশ ক্যাবল চালু করবে- এ বিষয়টিও মাথায় রাখব আমরা। তিনটি ওয়ার্ডের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে পুরো শহরকে তারের জঞ্জালমুক্ত করব আমরা।’
নগরীর লালখান বাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল হাসনাত মোহাম্মদ বেলাল জানান, নগরীর তিনটি ওয়ার্ডে কাজ চলাকালে ইন্টারনেট কিংবা টিভির ক্যাবল সংযোগে কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না। ছয় মাসের মধ্যেই এ তিনটি ওয়ার্ডের কাজ শুরু হবে। পাইলট প্রকল্প হিসেবে লালখান বাজার ওয়ার্ডে এরই মধ্যে নালার পাশে ড্রেনেজ সিস্টেমের ওপর পাইপের মধ্য দিয়ে তারগুলো নিয়ে যাওয়া হবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে চসিকের প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, কাউন্সিলর আবুল হাসনাত মোহাম্মদ বেলাল, শৈবাল দাশ সুমন, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা লতিফুল হক কাজমি, মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম, সামিট কমিউনিকেশন্স লিমিটেডের পরিচালক ফাদিয়া খান উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আরডি/ইআ