Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৬৫% কাজ শেষ, জলাবদ্ধতা সহনীয় থাকবে— আশ্বাস প্রকল্প পরিচালকের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১২ মার্চ ২০২৪ ১৯:৫৫

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজের ৬৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। প্রকল্প সংশোধন করে কাজের পরিধি বেড়ে যাওয়ার পর এ অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে সংশ্লিষ্টরা আশ্বাস দিয়েছেন, অন্য বছরের তুলনায় এবার চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। বর্ষা শুরুর আগেই খাল থেকে বাঁধ ও নির্মাণসামগ্রী সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রকল্পের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুরে নগরীর দামপাড়ায় সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড কার্যালয়ে চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে বর্ষাকালীন প্রাক প্রস্তুতিমূলক সমন্বয় সভায় এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে।

২০১৭ সালে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক পাঁচ হাজার ৬১৬ কোটি ১৯ লাখ টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়নের অনুমোদন পায় সিডিএ। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। পরে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। সংশোধনের পর তিন হাজার ১০ কোটি টাকা ব্যয় বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে আট হাজার ৬২৬ কোটি টাকায়।

প্রকল্পটি সম্পাদনের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের সঙ্গে ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল সিডিএর সমঝোতা চুক্তি সই হয়। ওই বছরের ২৮ এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনী ড্রেনেজ অবকাঠামো সংস্কার ও পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করে।

গত বছরের ২ মে তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক লেফট্যানেন্ট কর্নেল শাহ মো. আলী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি, সোয়া ৭৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

১০ মাস পর মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত সভায় লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, এরই মধ্যে প্রকল্পের কাজ ৬৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির মধ্যে ৩৬টি খালের মধ্যে ২০টিতে প্রতিরোধ দেয়ালের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। মহেশ খালসহ ছয়টি খালের মুখে রেগুলেটরও (জোয়ার প্রতিরোধক ফটক) স্থাপন করা হয়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমের আগেই এগুলো পুরোপুরি কার্যকর হয়ে যাবে। এর ফলে জোয়ারের পানি আর ভেতরে ঢুকতে পারবে না। তবে জমি অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে খালের মধ্যে বালুর ফাঁদ বা সিলট্র্যাপের নির্মাণকাজ শেষ করা যায়নি বলে তিনি জানান।

কাজের অগ্রগতির তথ্যে এ গরমিল নিয়ে ব্যাখায় লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ জানিয়েছেন, প্রকল্প সংশোধনের পর কাজের পরিধি বেড়ে গেছে। এজন্য সার্বিক ভৌত অগ্রগতি এখন ৬৫ শতাংশ ধরা হয়েছে।

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজের মধ্যেই প্রতি বর্ষায় পানিতে নগরী প্লাবিত হচ্ছে। এ জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বারবার খালের মুখে দেওয়া বাঁধকে দায়ী করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ‘আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে নগরীর খালগুলো থেকে বাঁধসহ নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে নেওয়া হবে, যেন বর্ষায় পানি বাধাগ্রস্ত না হয়। বিগত বছরগুলোর পরিসংখ্যান বিবেচনায় ষোলশহর দুই নম্বর গেইট, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, চান্দগাঁও, শমশেরপাড়া, বাদুরতলা, ঘাসিয়া পাড়া, বারইপাড়া, কাতালগঞ্জ, কাপাসগোলা, চকবাজার ও আগ্রাবাদ এলাকায় জলাবদ্ধতা একটু বেশি দেখতে পেয়েছি।’

‘সিটি করপোরেশনের সহায়তায় আমরা কাজ করেছি। বিশ্লেষণ করে যা পেয়েছি, এই এলাকাগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট খাল ও নালা পরিষ্কারের আওতায় নিতে পারলে বর্ষা মৌসুমে কিছুটা সুফল মিলবে। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে কমপক্ষে তিনবার বসেছি। তারা সহযোগিতা দেখিয়েছেন। আমরা তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি। বর্ষা মৌসুমের আগে খাল ও নালাগুলো পুরোপুরি কার্যকর করতে পারলে জলাবদ্ধতা সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।,’— বলেন ফেরদৌস।

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতার বাইরে থাকা ২১টি খাল নিয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে— জানতে চাইলে প্রকল্পের সিডিএ অংশের পরিচালক আহমদ মঈনুদ্দীন বলেন, ‘এ মুহূর্তে এসব খাল নিয়ে কাজ করার সুযোগ সিডিএর নেই। তবে এই খালগুলো নিয়ে সিটি করপোরেশন প্রকল্প নিতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে।’

সিডিএর এ প্রকল্পের সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ড ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলমগ্নতা/জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন’ নামে আরেকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এতে ব্যয় হচ্ছে এক হাজার ৬২০ কোটি টাকা। এই প্রকল্পটিও বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড।

ওই প্রকল্পের প্রকল্প কর্মকর্তা মেজর সুজাউদ্দিন পাঠান সাংবাদিকদের জানান, তাদের প্রকল্পের অগ্রগতিতে বড় সীমাবদ্ধতা অর্থ বরাদ্দ। এখন পর্যন্ত ২৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ঠিকভাবে অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে নদীর পাশে বন্যা প্রতিরোধক দেয়াল ও রেগুলেটর নির্মাণ দ্রুত করা সম্ভব হবে।

মেজর সুজাউদ্দিন পাঠান বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পগুলোর আওতায় নগরের খালগুলো থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এসব খালে যেন কেউ পুনরায় অবৈধ স্থাপনা করতে না পারে, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। চট্টগ্রাম নগরীর ৩৬টি খাল থেকে এখন পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।’

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

চট্টগ্রাম নগরী জলাবদ্ধতা জলাবদ্ধতা নিরসন টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

৯০০তম গোলে ইতিহাস গড়লেন রোনালদো
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:০৪

সম্পর্কিত খবর