Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ধর্ম নিয়ে কটূক্তিতে সর্বোচ্চ শাস্তির অভিমত হাইকোর্টের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১২ মার্চ ২০২৪ ২২:০২

ঢাকা: নবী-রাসুল বা ধর্মীয় ব্যক্তিবর্গ এবং যেকোনো ধর্মগ্রন্থ নিয়ে কেউ কটূক্তি করলে তার বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩ এর ২৫(১)/২৮(১)/২৯/৩১ ধারা জামিন অযোগ্য করে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন দণ্ডের বিধান নির্ধারণের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে সংসদ।

হযরত মোহাম্মদ (স.) কে নিয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর মন্তব্য করায় এক আসামিকে ২৫ লাখ টাকা ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে (মুচলেকা) জামিন মঞ্জুর করে এমন অভিমত দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সাইবার নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় এক আসামির জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) মো. রেজাউল হাসান এবং বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালত ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ পোস্টকারী নাফিসা চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণে পর্যাপ্ত প্রমাণ থাকায় সম্পূরক অভিযোগপত্রের মাধ্যমে তাকে অভিযুক্ত করার জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, ‘আমরা মত প্রকাশ করতে পারি, তবে কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করতে পারি না। কারও ধর্মীয় বিশ্বাসের ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি নেই। তবে কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করলে তার জন্য শাস্তির প্রয়োজন আছে।’

আদালতে আসামি পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাহাব উদ্দিন আহমেদ টিপু ও মো. মজিবুর রহমান মুজিব।

আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, ‘গত বছরের ২ নভেম্বর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার মো. সেলিম খান নামের এক ব্যক্তি ফেসবুকের একটি গ্রুপে নাফিসা চৌধুরী নামের অপর এক ব্যক্তির ফেসবুকে দেওয়া একটি স্ট্যাটাসের নিচে কমেন্টের ঘরে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। ফেসবুকের কমেন্টের ঘরে এমন আপত্তিকর মন্তব্য পরবর্তী সময়ে ভাইরাল হয়। অনেকে এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে সেলিম খানের শাস্তি দাবি করেন।’

এরপর গত ৪ নভেম্বর একই উপজেলার চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের কাউন্সিলর মো. হানিফ শাহ বাদী হয়ে ভেড়ামারা থানায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় সেলিম খানকে একমাত্র আসামি করা হয়।
পরে একই দিন পুলিশ সেলিম খানকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায়। তখন থেকে সেলিম খান জেল হাজতে আছেন। সেলিম খান (২০) স্থানীয় একটি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

এরপর গত ৩১ ডিসেম্বর এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের পরিদর্শক শেখ লুৎফর রহমান এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এর ধারাবাহিকতায় গত ১৩ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার অবকাশকালীন দায়রা জজ রুহুল আমীন সেলিম খানের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করেন।

এরপর গত ৩ জানুয়ারি আসামি হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। ওই জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৮ জানুয়ারি সেলিম খানের জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। আজ সেই রুল চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে রায় দিয়েছেন আদালত।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩ এর আইনে এমন অপরাধের ঘটনায় বিষ্ময় প্রকাশ করে পবিত্র কোরআন শরিফ, নবী-রাসুল বা ধর্মীয় ব্যক্তিবর্গ এবং সকল ধর্মগ্রন্থের বিষয়ে কেউ কটূক্তি করলে তার বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩ এর ২৫(১)/২৮(১)/২৯/৩১ ধারা জামিন অযোগ্যসহ সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান করার জন্য মতামত দিয়েছেন।

আগের আইনে এসব বিষয়ে জামিন অযোগ্য ধারা ছিল। বর্তমান আইনটিতে ধর্মীয় অনূভুতির বিষয়ে কটূক্তি করলে জামিনযোগ্য ধারা হওয়ায় অপরাধ প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে। আদালত অপরাধটির বিষয়ে বলেছেন- এটি সংঘবদ্ধ ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত অপরাধ ছিল।

সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম

কটূক্তি টপ নিউজ ধর্ম সর্বোচ্চ শাস্তি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর