Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তথ্য চাওয়ায় ৫ সাংবাদিককে জেলে পাঠানোর হুমকি এসিল্যান্ডের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৫ মার্চ ২০২৪ ১৭:৪৫

লালমনিরহাট: জমি খারিজ সংক্রান্ত তথ্য জানতে চাওয়ায় লালমনিরহাটে ৫ জন সাংবাদিককে অফিসে আটকে রেখে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে জেল পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ-আল-নোমান সরকার।

বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) দুপুর ১২টায় লালমনিরহাট সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়য়ে এ ঘটনা ঘটে। প্রায় ৪০ মিনিট পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টি এম মমিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অফিস গেটের তালা খুলে সাংবাদিকদের মুক্ত করেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে ওই সহকারী কমিশনার সাংবাদিকদের ‘দালাল’ বলে অপমান করতে থাকেন।

এসময় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে অবস্থান নিলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পরিস্থিতি শান্ত করেন। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাংবাদিকসহ সবাইকে নিয়ে ঘটনাস্থলে ত্যাগ করেন।

এরপরও ক্ষোভ না মেটায় একটি টেলিভিশনের ক্যামেরাপারসনের মোটরসাইকেল আটকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন বিক্ষুদ্ধ সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ-আল-নোমান সরকার। ঘটনার পর সাংবাদিকরা শহরের মিশনমোড়ে লালমনিরহাট-বুড়িমারী সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।

ফের দুপুর ২টার দিকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টি এম এ মমিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। অভিযুক্ত সহকারী কমিশনারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিলে সাংবাদিকরা অবস্থান ধর্মঘট তুলে নেন।

সাংবাদিকরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের তিনজন অফিস সহকারী ভূমি সংক্রান্ত শুনানি করছিলেন। সেখানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) উপস্থিত ছিলেন না। মাই টিভি ও ডেইল অবজারভার পত্রিকার সাংবাদিক মাহফুজ সাজু এ শুনানির ভিডিও ধারণ করেন। এতে অফিসের স্টাফরা ক্ষুদ্ধ হয়ে সহকারী কমিশনারকে ডেকে আনেন। সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ-আল-নোমান সরকারের নির্দেশে সাংবাদিক মাহফজু সাজুকে আটকিয়ে রাখা হয়। খবর পেয়ে প্রেসক্লাব থেকে চার সাংবাদিক নিয়ন দুলাল, এস কে সাহেদ, ফারুক আহমেদ ও কাওছার আহমেদ ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরও অফিসে আটকে রাখা হয়।

সাংবাদিক মাহফুজ সাজু বলেন, ‘সেবা নিতে আসা লোকজনের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয় সহকারী কমিশনারের (ভূমি) অফিসে। এ তথ্য জানতে এসে সত্যতা পাই। এসিল্যান্ড আমাকে অফিসে আটকালে সহকর্মীদের ফোন দিলে তারা ঘটনাস্থলে আসেন। এসি ল্যান্ড তাদেরও অফিসে আটকে রাখেন। এসি ল্যান্ড সাংবাদিক সম্পর্কে খুবই অপ্রীতিকর মন্তব্য করেছেন। আমাদের জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন।’

লালমনিরহাট প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন জানান, জেলা প্রশাসক এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। শনিবারের মধ্যে কোন ব্যবস্থা নেওয়া না হলে সাংবাদিকরা আন্দোলনে যাবে।

সাংবাদিকদের অফিসে আটকে গালিগালাজ ও জেলে পাঠানোর হুমকি দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ-আল-নোমান সরকারে কোনো উত্তর দেননি। তবে
কাগজপত্র দেখাতে না পারায় এক মোটরসাইকেল চালকের ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন বলে স্বীকার করেছেন তিনি।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টি এম এ মমিন জানান, সহকারী কমিশনারের অনুপস্থিতিতে অফিস সহকারীরা কোনোভাবেই জমির খারিজ শুনানি করতে পারেন না। বিষয়টি জেলা প্রশাসক খতিয়ে দেখছেন।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, ‘পুরো বিষয়টি এরমধ্যে অবগত হয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সারাবাংলা/এমও

৫ সাংবাদিক এসিল্যান্ড জমি খারিজ টপ নিউজ তথ্য চাওয়া সাংবাদিক


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর