রাবিতে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস উদ্যাপিত
১৭ মার্চ ২০২৪ ২১:০৫
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বৈচিত্র্যময় আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে রোববার (১৭ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, আনন্দ শোভাযাত্রা, শিশু সমাবেশ, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও ইফতার সামগ্রী বিতরণসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হয়।
রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর শিক্ষক সমিতি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ, বিভিন্ন হল, বিভাগ, ইনস্টিটিউট এবং অন্যান্য পেশাজীবী ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্রদ্ধা জানায়।
পরে সকাল ৯টায় সাবাস বাংলাদেশ চত্বর থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা হয়। সকাল পৌনে ১০টায় শেখ রাসেল মডেল স্কুল প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় শিশু সমাবেশ, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর নির্বাচিত অংশ থেকে কুইজ প্রতিযোগিতা। সকাল সাড়ে ১০টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় শিশু সমাবেশ, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও কারাগারে রোজনামচার নির্বাচিত অংশ থেকে কুইজ প্রতিযোগিতা। উভয় আয়োজনের উদ্বোধন করেন উপাচার্য। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপউপাচার্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বিকেল ৩টায় শহিদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ আয়োজনে মুখ্য আলোচক ছিলেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মো. আবুল কাশেম। উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার প্রধান অতিথি এবং উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. অবায়দুর রহমান প্রামানিক বিশেষ অতিথি ছিলেন।
আলোচকের বক্তব্যে অধ্যাপক মো. আবুল কাশেম বলেন, ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধুর মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি লক্ষ্য করা যায়। ১৯৪২ সালে তিনি যখন কলকাতায় যান তখন তার মধ্যে দেশ-জাতি-সমাজ সম্পর্কে জানার অসাধারণ আগ্রহ লক্ষ করা যায়। এ সময় তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীসহ মুসলিম লীগের অন্যান্য নেতার সংস্পর্শে আসেন ও ক্রমে বাঙালি জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্র ধারণায় অনুপ্রাণিত হন। বাঙালি জাতির জন্য তার চিন্তা-চেতনার কারণে তিনি বারবার কারাবরণ করেছেন। কিন্তু আন্দোলন-সংগ্রাম থেকে সরে যাননি। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন এক উদারনৈতিক বাংলাভাষিক জাতিরাষ্ট্র। সে লক্ষ্যে তিনি সফল হয়েছেন। কঠোর পরিশ্রম ও ত্যাগের ফলেই তা অর্জন সম্ভব হয়েছিল।
উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, যেভাবেই দেখো, সূর্য কিন্তু একটাই। বঙ্গবন্ধুও তাই। তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। তিনি বাঙালি জাতিকে মুক্তির চূড়ান্ত লক্ষ্যে নিয়ে গেছেন, অর্জন করেছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুকে বিচার করতে হবে ইতিহাসের নিরিখে। ইতিহাস কখনো অসত্য বলে না। বঙ্গবন্ধুকে জানার শেষ নেই। সে এক মহাজীবনের মহাগ্রন্থ। তাকে গভীরভাবে জানতে হলে তার সম্পর্কে চর্চা করতে হবে। তার লেখা ও তার সম্পর্কে লেখাগুলো পড়তে হবে। তার মধ্য দিয়েই আমরা পাব প্রকৃত বঙ্গবন্ধুর সন্ধান।
এবার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে রাবি স্কুলে কেক কাটার পরিবর্তে কেকের অর্থে স্থানীয় এসওএস শিশুপল্লীর আবাসী ১৩৫ জন শিশু ও মায়ের জন্য ইফতার ও রাতের খাবার উপহার দেওয়া হয়। এ ছাড়াও দুটি কেক দেওয়া হয়। রাবির পক্ষে ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম সাউদ শিশুপল্লী কর্তৃপক্ষের কাছে কেক ও উপহার সামগ্রী হস্তান্তর করেন।
সারাবাংলা/টিআর