অবন্তিকার বিষয়ে রাজনৈতিক খেলা খেলতে দেওয়া হবে না: জবি উপাচার্য
১৯ মার্চ ২০২৪ ১৫:৫৫
জবি: সহকারী প্রক্টর ও এক শিক্ষার্থীর নিপীড়নে আত্মহত্যাকারী শিক্ষার্থী অবন্তিকার বিষয়ে কাউকে রাজনৈতিক খেলা খেলতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। তিনি বলেন, ‘আইন বিভাগের অনেক শিক্ষার্থীকেই তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হতে হবে। আগের প্রক্টর টিমকেও আনা হবে, বস্তুনিষ্ঠ কাজ করতে হবে তদন্ত কমিটিকে।’
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের আয়োজনে অবন্তিকার স্মরণে শোকসভায় ও সংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে উপাচার্য এসব কথা বলেন।
উপাচার্য সাদেকা হালিম বলেন, ‘প্রক্টরের কাছে অবন্তীর দেওয়া অভিযোগটি কে কে অবহেলা করেছে সেটার তদন্ত হবে। আশা করি তদন্ত কমিটি এটা বের করে আনবে। কেন অবন্তীর ওই চিঠি অবহেলা করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি ভীষণভাবে দগ্ধ। আমি মাফ চাই আমার শিক্ষার্থীদের কাছে। আর কারও কাছে চাই না। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সাত কার্যদিবসের মধ্যে দেওয়ার চেষ্টা করবে, তবে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট যাতে সুষ্ঠু হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে।’
গণমাধ্যমকে উদ্দেশ্য করে উপাচার্য বলেন, ‘আমার বলার কোনো ভাষা নেই। আমি অনুরোধ করবো অবন্তিকে কোনোভাবে যাতে মেন্টাল ডিসঅর্ডার দিয়ে বিবেচনা না করা হয়। দেশে নারীরা আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় শুধু সমাজের জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে আমিও তো বুলিংয়ের শিকার হয়েছি। তবে আমি বুলিং মেনে নিতে পারি কারণ ৩০ বছর ধরে সহ্য করে আসছি।’
দ্রুত প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘সাময়িক বহিষ্কার না করলে এত দ্রুত বিচার করা যায় না। আমাদের যে তদন্ত কমিটি তা বিশ্ববিদ্যালয় আইন দ্বারা পরিচালিত হবে। একটি তদন্ত দ্রুত করা যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রকল্যাণ প্রতিনিধির সংখ্যা বাড়াবো শুধু একজন পুরুষ পরিচালক থাকবে না একজন নারীও থাকবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যৌন নিপীড়ন বক্সের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘ক্যাম্পাসের যৌন নিপীড়ন বক্সগুলো পরিষ্কার করে নতুন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বক্সগুলোর তালার চাবি আমার কাছে থাকবে। আমি নিজে বক্সগুলো খুলে চেক করবো প্রতিনিয়ত। আমি সবসময় মেয়েদের জন্য দাঁড়াবো।’
আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সরকার আলী আককাসের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী এবং আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এস এম মাসুম বিল্লাহ। এছাড়া বক্তব্য দেন জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আইন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার বিভিন্ন বিষয়ে স্মৃতিচারণ করেন এবং তারা দাবি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আর কোনো শিক্ষার্থী যেনো মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যতনের শিকার না হয়।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগের চেয়ারম্যান, রেজিস্ট্রার, দফতরের পরিচালক, প্রক্টর, বিভাগীয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/জেআর/এমও