টুঙ্গীপাড়ায় জন্ম নেওয়া খোকাই বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা: শেখ পরশ
১৯ মার্চ ২০২৪ ১৯:১০
ঢাকা: টুঙ্গীপাড়ায় জন্ম নেওয়া শিশু খোকাই বাঙালি জাতি রাষ্ট্রের নির্মাতা ও বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর মহাখালীর সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে দরিদ্র অসহায় মানুষের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ উদ্বোধনকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন। ১৭ মার্চ জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে যুবলীগের উদ্যোগে ইফতার সামগ্রী বিতরণের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বলতে গেলে প্রথমে বলতে হয়- বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নচারী এবং সম্মোহনী নেতৃত্ব সম্বন্ধে। একজন স্বপ্নচারী নেতা তিনিই যার সামনে সুনির্দিষ্ট একটি পরিকল্পনার ছক থাকে। তিনি তার লক্ষ্যের কথা বলেন, তার স্বপ্নের কথা বলেন। সেদিকে আমরা সাধারণ মানুষ সবাই কীভাবে যাব, তা তিনি নিজে করে দেখান।’
তিনি বলেন, ‘সম্মোহনী নেতা তাকেই বলা হয়, যিনি তার চারপাশের জনগণকে উৎসাহিত করতে পারেন, প্রণোদিত করতে পারেন। যাকে দেখলে, যার কথা শুনলে জনগণ উৎসাহিত হয়ে ওঠে, ভবিষ্যতের স্বপ্নে বিভোর হতে পারে এমন মানুষকেই আমরা সম্মোহনী নেতা বলি। তার উপস্থিতি, তার কথা, তার অস্তিত্ব সবকিছুই মানুষের বিস্তর সাহস, উদ্দীপনা আর ভবিষ্যৎ ভাবনার প্রণোদনা যোগায়। সম্মোহনী নেতার সবচেয়ে বড় গুণটি হচ্ছে, তিনি যা বলেন তা জনগণের মনে গেঁথে যায়। তারা উৎসাহিত হয়, প্রেরণায় উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠে।’
শেখ পরশ বলেন, “একটি মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার বঙ্গবন্ধুর যে স্বপ্ন, যা তিনি ১৯৪৭ সাল থেকে দেখে আসছিলেন, তা সমন্বিত আকারে তিনি বলেছেন ১৯৭১ এর ৭ মার্চের ভাষণে। বিভ্রান্ত বাঙালি জাতি সেদিন পেয়েছিল পথের দিশা। তার বজ্রকণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছিল: ‘এবারে সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এ ভাষণে বাঙালির ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হয়েছে। জনগণের গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে মুক্তি এবং স্বাধীনতার স্বপ্নের প্রকাশ এ ভাষণ।”
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন সোনার বাংলা, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ। কিন্তু পঁচাত্তরের কালো আগস্ট সেই সোনার বাংলার স্বপ্নকে ধূসর করে দেয়। শুরু হয় বাংলাদেশের উল্টো পথচলা। ’৭৫ এর পর বাংলাদেশ যে ধারায় চলতে শুরু করেছিল, তাতে এই রাষ্ট্রটি এতদিন থাকতো না। থাকলেও ব্যর্থ রাষ্ট্র পাকিস্তান কিংবা আফগানিস্তানের মতো পরিস্থিতি হতো বাংলাদেশে। কিন্তু সেটা হয়নি। বরং বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আর বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ানোর কাণ্ডরি হলেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।’
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘শেখ হাসিনার উন্নয়ন কৌশল হলো- বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন। বঙ্গবন্ধু যেমন বাংলাদেশ চেয়েছিলেন, বাংলাদেশকে সেরকম আধুনিক উন্নত এবং স্বনির্ভর করাই শেখ হাসিনার প্রধান লক্ষ্য। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্যই তিনি নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু দিয়েছিলেন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ আর শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির নেতা। তার হাত ধরেই বাংলাদেশ বদলে গেছে। তার নেতৃত্বেই বিশ্বে আজ বাংলাদেশ মর্যাদার আসনে। একথা বললে ভুল হবে না যে, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা আর শেখ হাসিনা আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি, বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আওয়ামী যুবলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, এমপি।
এদিন ঢাকা-১৭ আসনের ৭০০ দরিদ্র অসহায় মানুষের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করা হয়। ইফতার সামগ্রীর মধ্যে ছিল- পাঁচ কেজি চাল, এক কেজি ডাল, সয়াবিন তেল দুই লিটার, আলু দুই কেজি, পেঁয়াজ এক কেজি, ছোলা এক কেজি এবং খেজুর।
ইফতার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান সোহাগ, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, যুবলীগ নেতা প্রকৌশলী মৃণাল কান্তি জোয়ার্দার প্রমুখ।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম