Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যেভাবে হত্যার শিকার হন খুলনার আমিনুর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২১ মার্চ ২০২৪ ১৭:৫৯

খুলনা: খুলনার বটিয়াঘাটায় চোরদের হাতে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন শ্রমজীবী মো. আমিনুর শেখ (৪৪)। এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দুপুরে খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মো. সাঈদুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন বটিয়াঘাটা উপজেলার ফরিদুল্লাহ ওরফে ফরিদ, নয়ন শেখ, মো. ফারুক শেখ ও আলী মুনসুর মোড়ল, শাহিন মোড়ল।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গত মার্চ সকালে সুরখালী ইউনিয়নের গাওঘরা গ্রামের একটি বাগান থেকে মো. মালেক শেখের ছেলে আমিনুর শেখের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় বটিয়াঘাটা থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডে বটিয়াঘাটা থানা পুলিশ এবং জেলা গোয়েন্দা শাখার চৌকস টিম এ ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে।

পুলিশ সুপার জানান, আমিনুর শেখ কৃষিকাজ ও মৎস্য ঘের করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তার ঘেরের সঙ্গে একটি সজনে বাগান রয়েছে। তিনি গত ১৫ মার্চ রাতের পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। এ ঘটনায় ১৭ মার্চ বটিয়াঘাটা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। একইদিন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের টিম ভদ্রা নদীর পাড়ে ঘেরের বেড়ার ভেতর রক্তমাখা একটি জামা উদ্ধার করে। এই রক্তমাখা জামার সূত্র ধরেই পুলিশ অভিযান শুরু করে।

বুধবার (২০ মার্চ) ভোরে সন্দেহভাজন ব্যক্তি ফরিদুল্লাহ শেখ ওরফে ফরিদকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় রক্তমাখা জামাটি তার।

ফরিদ জানান, গত ১৫ মার্চ ফরিদ, শাহিন, নয়ন ও ফারুক রাত সাড়ে ৭টার দিকে শাহিনের বাড়ির পেছনে কচুবাগানে বসে গাঁজা খায়। এরপরে ফরিদ, শাহিন এবং নয়ন মিলে আমিনুরের ঘেরে সজনে ডাটা চুরি করতে যায়। ফরিদ সজনে ডাটা পাড়তে গাছে ওঠে। তখন শাহিন এবং নয়ন গাছের নিচে অবস্থান করে। তারা দুজনে সজনে ডাটা কুড়িয়ে বস্তায় ভরতে থাকে। হঠাৎ আমিনুর টর্চ লাইট মারে এবং তাদের দেখে ফেলে। তখন আমিনুর তাদের ধাওয়া দেয়। ফলে তারা সজনে ডাটা ফেলে সেখান থেকে দৌড়ে চলে যায়।

বিজ্ঞাপন

ফরিদ আরও জানান, এক থেকে দেড় ঘণ্টা পরে তারা তিনজন ওঁৎপেতে আমিনুরের অপেক্ষায় থাকে। একপর্যায়ে আমিনুর ঘেরের কুঁড়েঘরে ঢুকতে গেলে নয়ন পেছন থেকে মাফলার দিয়ে আমিনুরকে বেঁধে ফেলে। ফরিদ এবং শাহিন হাত-পা ধরে আমিনুরকে ভদ্রা নদীর পাড়ে নিয়ে যায়। শাহিনের সঙ্গে থাকা লোহার পাইপ নিয়ে ফরিদ প্রথমে আমিনুরের মুখের চোয়ালে আঘাত করে। সেই আঘাতের ফলে রক্ত ছিটে ফরিদের জামায় লাগে। তখন তারা লোহার রড দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারে। তাদের মারপিটের একপর্যায়ে আমিনুর মারা যায়।

ফরিদ রক্তমাখা জামাটি খুলে ঘেরের পাশে বেড়ায় ফেলে দেয়। পরে আমিনুরের মৃতদেহ কৃষ্ণা প্রামাণিকের বাগান ভিটার ঝোঁপের ভেতর রেখে আসে।

এ ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ফরিদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে বটিয়াঘাটা থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে তথ্য প্রযুক্তি ও সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ঘটনায় সম্পৃক্ত শাহিন, নয়ন এবং ফারুককে গ্রেফতার করা হয়।

এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আলী মুনসুর মোড়লকে গ্রেফতার করা হয়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মালামাল জব্দ করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।

সারাবাংলা/একে

আমিনুল খুলনা চোর বটিয়াঘাটা হত্যাকাণ্ড

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর