যে মামলায় গ্রেফতার হলেন কেজরিওয়াল
২২ মার্চ ২০২৪ ১০:৪৫
ভারতের রাজধানী দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির (এএপি) প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে কথিত মদ নীতি কেলেঙ্কারি মামলায় গ্রেফতার করেছে দেশটির এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এ ঘটনায় হাজার হাজার দলীয় কর্মী ও সমর্থকরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। এছাড়া দেশটির বিরোধী দলের নেতারা কেজরিওয়ালকে গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। খবর এনডিটিভি।
ভারতের জাতীয় নির্বাচনের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে একজন কর্মরত মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেফতারের ঘটনায় দেশটির জাতীয় রাজনীতিতে যেন ভূমিকম্পের সৃষ্টি করেছে। এদিকে এ ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে এএপি। যার শুনানি আগামীকাল শনিবার (২৩ মার্চ) অনুষ্ঠিত হওয়া কথা রয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে কেজরিওয়াল জেল থেকে তার দায়িত্ব পালন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছে এএপি। তবে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। এমনটা হলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন অনেক আইন বিশেষজ্ঞ।
সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, অর্থ পাচার মামলায় অরবিন্দ কেজরিওয়াল বিরুদ্ধে তদন্তকারী কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় তার বাড়িতে হাজির হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদ-তল্লাশি শেষে রাত ৯টার দিকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর দুই ঘণ্টা পর তাকে ইডি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। আরএমএল হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাকে শুকবার (২২ মার্চ) রাতে ইডির কারাগারে রাখা হবে।
বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনের বাইরে থেকে বক্তৃতায় দিল্লির মন্ত্রী অতীশি বলেন, কেজরিওয়ালের গ্রেফতারের বিষয়টি ‘বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ষড়যন্ত্র’।
এর আগে, গত রোববার একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় ইডি। সেখানে কথিত মদ নীতি কেলেঙ্কারিতে কেজরিওয়াল জড়িত বলে দাবি করা হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘ইডি তদন্তে জানা গেছে, দিল্লি আবগারি নীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে সুবিধা পাওয়ার জন্য বিআরএস নেত্রী কে কবিতা এবং অন্যদের সঙ্গে অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও মণীশ সিসোদিয়াসহ এএপি’র শীর্ষ নেতারা জড়িত ছিলেন। এই সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে কেজরিওয়ালসহ এএপি নেতাদের ১০০ কোটি রুপি দেওয়া হয়।’
সেখানে আরও বলা হয়, ‘দিল্লি আবগারি নীতি ২০২১-২২ প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে মাধমে দুর্নীতি এবং ষড়যন্ত্র করে মদের পাইকারী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দলটির তহবিল সংগ্রহ করে এএপি। এজন্য কে কবিতা ও তার সহযোগীদের এএপি নেতাদের আগেই অর্থ প্রদান করতে হয়। এখান থেকে অবৈধভাবে আরও অর্থ আয়ের পথ তৈরি হয়।’
২০২১ সালের নভেম্বরে নতুন নীতিমালার অধীনে দিল্লি সরকার মদের খুচরা বিক্রয় থেকে সরে আসে এবং ব্যক্তিগত লাইসেন্সধারীদের দোকান চালানোর অনুমতি দেয়। এরপর ২০২২ সালের জুলাইয়ে নীতিতে আইনের চরম লঙ্ঘন এবং মদের লাইসেন্সধারীদের ‘অযাচিত সুবিধা’ দেওয়ার অভিযোগ করেন দিল্লির মুখ্য সচিব নরেশ কুমার। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে নীতিটি বাতিল করা হয়।
তবে প্রথম থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও আম আদমি পার্টি। কেজরিওয়াল দাবি করেন, দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপি বিরোধীদলগুলোকে দুর্বল করার জন্য ইডি ও সিবিআই’কে বেআইনিভাবে ব্যবহার করেছে। এমন কি বিজেপির সঙ্গে আপস করলে এ সব মামলা থাকবে না বলে একাধিকবার বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন কেজরিওয়াল।
সারাবাংলা/এনএস