১৪ মাসে ৮ গৃহকর্মী হত্যা, নির্যাতনের শিকার ৩৯
২৩ মার্চ ২০২৪ ২২:৫৫
ঢাকা: ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ১৯ মার্চ পর্যন্ত ঢাকাসহ সারাদেশে ৩৯ গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে ধর্ষণের পর হত্যার শিকার একজন, হত্যাকাণ্ডের শিকার সাত জন ও আত্মহত্যা করেছে ১০ জন। এ ছাড়া শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১৩ জন, রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের, ধর্ষণের শিকার হয়েছে পাঁচ জন।
শনিবার (২৩ মার্চ) রাজধানীর ধানমন্ডিতে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) কার্যালয়ে ‘গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ সব তথ্য জানানো হয়। এমএসএফ, আমরাই পারি জোট, কাপেং ফাউন্ডেশন, গৃহশ্রমিক অধিকার নেটওয়ার্ক সম্মিলিতভাবে এ সভার আয়োজন করে।
সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন আমরাই পারি জোটের নির্বাহী পরিচালক জিনাত আরা হক। মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)’র প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট মো. সাইদুর রহমান অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। বক্তারা জানান, গৃহকর্মী নির্যাতনের অধিকাংশ ঘটনা অভিযুক্তরা টাকা দিয়ে মীমাংসার চেষ্টা করেন। সমাজে যাদের দায়িত্ব হচ্ছে বঞ্চিত নিপীড়িতদের ন্যায়বিচার নিশ্চিতে মূখ্য ভূমিকা পালন করা, তারাই মূলত নিপীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ন হচ্ছেন। ফলে অধিকাংশ ঘটনারই সুষ্ঠু তদন্ত হচ্ছে না, বিচার পাচ্ছে না ভুক্তভোগী দরিদ্র অসহায় পরিবারগুলো।
সভায় আলোচকেরা বলেন, সম্প্রতি দ্য ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের ফ্ল্যাট থেকে পড়ে আদিবাসী চা শ্রমিকের ১৫ বছর বয়সী মেয়ে প্রীতি উরাং নৃসংশভাবে মারা যায়। যার তদন্ত এখনও চলমান, একই বাসা থেকে সাত মাস আগেও অপর একজন শিশুগৃহকর্মীকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। সেই বিচার এখনও হয়নি।
জাতীয় শিশুশ্রম জরিপ অনুযায়ী দেশে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে এমন শিশুর সংখ্যা এক লাখ ২৫ হাজার। এর মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগই মেয়েশিশু। গৃহকর্মে নিযুক্ত বিপুল জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা ও কল্যাণে পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়নের প্রাথমিক ধাপ হিসেবে গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি প্রণয়ন করা হলেও তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।
বক্তারা গৃহকর্মী নির্যাতনের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি মানবিক সমাজ গঠন, শ্রম আইনে গৃহকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত ও শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতিসহ গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫ বাস্তবায়ন করে গৃহকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবি জানান।
আলোচনায় অংশ নেন গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী আবুল হোসাইন, বিলসের পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন প্রমুখ।
সারাবাংলা/আরএফ/পিটিএম