Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২ বছর আগে আবেদন করেও ‘গ্রেড পদোন্নতি’ পাননি কুবির ১২ অধ্যাপক

মোহাম্মদ রাজীব, কুবি করেসপন্ডেন্ট
২৭ মার্চ ২০২৪ ০৮:২৪

কুমিল্লা: বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অভিন্ন নীতিমালার শর্তানুযায়ী পদোন্নতির যোগ্যতা থাকলেও ১ম ও ২য় গ্রেডে পদোন্নতি পাচ্ছেন না কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ অধ্যাপক। প্রায় দুই বছর আগে আবেদন করলেও পদোন্নতি প্রদানের জন্য এখনও কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি কর্তৃপক্ষ। ফলে শিক্ষকরা তাদের বৈধ প্রাপ্যতা ও সুযোগ-সুবিধা হতে বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়াও পেশাগত মর্যাদা ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি মানসিকভাবেও শিক্ষা-গবেষণায় মনোনিবেশ করতে ব্যাহত হচ্ছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১ম ও ২য় গ্রেডের অধ্যাপকদের পদোন্নতির জন্য ২০২২ সালের ১৬ই মার্চ ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। পদোন্নতি সংক্রান্ত একটি মিটিংও করেছে ওই কমিটি। কিন্তু বর্তমান উপাচার্য দায়িত্ব গ্রহণের পর অধ্যাপকদের পদোন্নতির জন্য দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ নেননি। পরে শিক্ষকদের চাপের মুখে গত ২৭ ফেব্রুয়ারী কমিটি পুনর্গঠন করা হয়।

বিভিন্ন বিভাগের ১২ জন শিক্ষক অধ্যাপক পদোন্নতির জন্য আবেদন করেছেন। তাদের মধ্যে গ্রেড-১ আবেদনকৃত দুইজন হচ্ছেন, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জাকির ছায়াদউল্লাহ খান এবং রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান। এছাড়া বাকি দশজন গ্রেড-২ পদে আবেদন করেছেন। আবেদনকৃত শিক্ষকরা হলেন, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের, ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আহসান উল্যাহ, অধ্যাপক ড. শেখ মকছেদুর রহমান, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম¯ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন ও অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র দেব, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহ. আমিনুল ইসলাম আকন্দ, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন সরকার, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. জি. এম. মনিরুজ্জামান ও অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলাম মওলা এবং ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম শরীফুল করিম।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অভিন্ন নীতিমালার শর্তে বলা হয়েছে, প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ অধ্যাপক পদে পদোন্নতি/পদায়নের পরে অধ্যাপক পদে ন্যূনতম ০৪ (চার) বৎসর চাকুরি (কোয়ালিফাইং চাকুরির মেয়াদ) এবং স্বীকৃত জার্নালে বিষয়ভিত্তিক গবেষণাধর্মী ০২ (দুই) টি নতুন আর্টিকেল প্রকাশের শর্তে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ২য় গ্রেড প্রাপ্ত হইবেন।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া দ্বিতীয় গ্রেডধারী অধ্যাপকগণ মোট চাকুরিকাল (কোয়ালিফাইং চাকুরির মেয়াদ) নুন্যতম ২০ বছর এবং গ্রেডের সর্বশেষ সীমায় পৌঁছানোর দুই বৎসর পর জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ১ম গ্রেড প্রাপ্ত হইবেন। তবে এই সংখ্যা মোট অধ্যাপকের ২৫%-এর বেশি হইবে না।

যোগ্যতা থাকার পরেও পদোন্নতি না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষকরা। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক অধ্যাপকের সঙ্গে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, পদোন্নতি না হওয়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সরকারি দায়িত্ব পালনের সুযোগ সীমিত হচ্ছে। ফলে জাতীয় পর্যায়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশগ্রহণ ও প্রতিনিধিত্ব ব্যহত হচ্ছে। যা সামগ্রিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, গবেষণা ও মানবসম্পদ বিনির্মাণের অন্তরায় এবং সরকারের নির্দেশনা অবমাননার শামিল ও রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধ।

এ বিষয়ে মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন সরকার বলেন, ২৯ মে ২০২০ সালে আমি গ্রেড-২ এর জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু কেন দুই বছর পরেও আমাকে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে না, সে বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এটি আসলে প্রশাসনিক অদক্ষতার প্রমাণ। আমি মনে করি অভ্যন্তরীণ কমিটির মাধ্যমে মূল্যয়ন করে ২য় গ্রেডে অধ্যাপকদের পদোন্নতি দিয়ে দেওয়া উচিত। এছাড়া ১ম গ্রেডে যারা আছেন তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট অধ্যাপকদের ২৫% সীমারেখায় পড়ে তাদেরকেও সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তাদের পদ্দোন্নতি দিয়ে দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. আমিরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘অধ্যাপকদের পদোন্নতির জন্য একটা কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মিটিং করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’

কমিটির সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘কমিটি অনেক আগে হয়েছে। কিন্তু দৃশ্যমান কোন কার্যক্রম এখনও নেওয়া হয়নি।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম. আবদুল মঈনের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সারাবাংলা/একে

অধ্যাপক কুবি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় পদোন্নতি

বিজ্ঞাপন

খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমলো
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২১:০৮

আরো

সম্পর্কিত খবর