Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাংবাদিক-দুদক কর্মকর্তা পরিচয়ে শ্যালক-দুলাভাইয়ের প্রতারণার ফাঁদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৫ মার্চ ২০২৪ ১৯:২২

ঢাকা: দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কোনো জনপ্রতিনিধি বা কর্মকর্তার দুর্নীতি-অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ হলেই একটি চক্র তাদের টার্গেট করতো। এর পর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে ফোন নম্বরসহ বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে প্রথমে চক্রের সদস্যরা নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিতো। তারপর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে জানাতো এবং নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখাতো।

এর কিছুদিন পর দুদকের সহকারী পরিচালক পরিচয়ে ফোন করে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন পরিবর্তনের কথা বলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিতো। দীর্ঘদিন ধরে এমন একটি চক্র প্রতারণা করে আসছিল। সম্প্রতি দুদক কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতরাণার ঘটনায় দুদক বাদী হয়ে ডিএমপির রমনা থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করে।

মামলায় কয়েকটি ফোন নম্বর উল্লেখ করা হয়। এরই সূত্র ধরে মামলার তদন্তে নেমে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) লালবাগ বিভাগ। গ্রেফতার তিনজন হলেন- চক্রের মূলহোতা ফিরোজ খান (৫২), তার শ্যালক মো. হাসান মুন্না (২৮) ও মুন্নার শ্যালক মো. রিয়াজ (১৮)। তাদের সবার বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলায়।

ডিবি বলছে, শ্যালক-দুলাভাইসহ পারিবারিক এই প্রতারক চক্রটি কখনো সাংবাদিক, কখনো দুদক কর্মকর্তা পরিচয় দিতো। তারা বিভিন্ন পত্রিকা, টেলিভিশনের সাংবাদিকদের পরিচয়পত্র ও ভিজিটিং কার্ড এবং দুদক কর্মকর্তাদের পরিচয়পত্র ব্যবহার করতেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে সাংবাদিকদের বিপুল পরিমাণ পচিয়পত্র, ভিজিটিং কার্ড, বিভিন্ন মডেলের ১১টি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন অপারেটের ২৯টি সিম কার্ড ও দুদক কর্মকর্তার ভুয়া পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়।

সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র প্রথমে উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়র, ওয়ার্ড কমিশনারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রতিবেদন হলে সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতো। পরে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম ও মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে সাংবাদিক পরিচয়ে নিউজের বিষয়ে জানিয়ে সমাধান করে দেওয়ার কথা বলে নানাভাবে আলোচনা করতো। এর পর দুদক কর্মকর্তা পরিচয়ে ফোন দিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন পরিবর্তনের কথা বলে মোবাইল ব্যাংকিয়ের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিতো। তাদের ব্যবহার করা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নম্বরগুলো বেনামে রেজিস্ট্রেশন করা।’

গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার প্রতারকদের বিষয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘তাদের কাছে এনটিভির সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টার, কখনো এসএ টিভির সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টারসহ একাধিক টিভি ও পত্রিকার সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টারের পরিচয়পত্র ব্যবহার করে এসব প্রতারণা করেছে।’

ডিবিপ্রধান আরও বলেন, ‘রমনা থানায় দায়ের হওয়া মামলায় দুদকের উল্লিখিত ছয়টি সিম নম্বর সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। অভিযানে প্রতারকদের কাছ থেকে তিনটি সিম উদ্ধার করা হয়; যা তারা দুদক পরিচয়ে প্রতারণার কাজে ব্যবহার করতেন। গ্রেফতার তিনজন চারদিনের রিমান্ডে রয়েছেন। তাদের প্রতারণার বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে।’

তাদের বিরুদ্ধে আগেও দুদকসহ বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার পরিচয়ে চাঁদাবাজির একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানান ডিবিপ্রধান।

সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম

টপ নিউজ প্রতারণা ফাঁদ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর