Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জাপানি শিশু: বড় ও ছোট মেয়ে মায়ের কাছে, মেজ থাকবে বাবার কাছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৫ মার্চ ২০২৪ ২১:২৩

ফাইল ছবি: আদালতে ২ শিশু

ঢাকা: বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় জাপানি মায়ের মেজ মেয়ে বাবার কাছে থাকবে বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন হাইকোর্ট। আর বড় মেয়ে থাকবে মায়ের কাছে- হাইকোর্টের দেওয়া এমন রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে‌।

জাপানি মায়ের দুই শিশু (ছোট ও বড় মেয়ে) মায়ের কাছে এবং এক শিশু (মেজ মেয়ে) তাদের বাবার কাছে থাকবে বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

দুই মেয়ে শিশুর হেফাজত নিয়ে (কার জিম্মায় থাকবে) ঢাকার পারিবারিব আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে শিশুদের বাবার করা রিভিশনের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপিতে এমন অভিমত দিয়েছেন বিচারপতি মামনুন রহমানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ। সোমবার (২৫ মার্চ) রায়ের ৩২ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ হয়।

রায়ে উভয়পক্ষকে নিজেদেরই শিশুদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের অধিকার নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। রায়ে আদালত বলেছেন, বড় মেয়ের সঙ্গে তার পিতা ইমরান শরীফকে দেখা-সাক্ষাতের পূর্ণ অধিকার দেওয়া মায়ের দায়িত্ব এবং মেজ মেয়ের সঙ্গে তার মা এরিকো নাকানোকে দেখা-সাক্ষাতের পূর্ণ অধিকার দেওয়া পিতার কর্তব্য। উভয়পক্ষের নিয়ন্ত্রিতভাবে পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে সীমিত সময়ের জন্য সংশ্লিষ্ট শিশুকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের স্বাধীনতা রয়েছে।

রায়ে আরও বলা হয়, ঘটনা এবং পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাৎক্ষণিকভাবে এই রুলের সারবত্তা খুঁজে পাওয়া যায়। তাই আংশিকভাবে এই রুল যথাযথ ঘোষণা করা হলো।

রায়ে আদালত বলেছেন, বড় মেয়েকে মায়ের হেফাজতে রাখার পক্ষে সিদ্ধান্ত দেওয়া হলেও বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় ছোট মেয়ে বয়সপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত মায়ের হেফাজতে থাকবে। সে অনুসারে রুলটি আংশিক যথাযথ ঘোষণা করা হলো।

এর আগে, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ের রিভিশন আবেদন আংশিক যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি মামনুন রহমানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে ইমরান শরীফের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আখতার ইমাম, আইনজীবী রাশনা ইমাম, আইনজীবী নাসিমা আক্তার লাভলী। এরিকো নাকানোর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আজমালুল হোসেন কেসি, আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

এর আগে, বাংলাদেশে থাকা জাপানি দুই শিশু জাপানি মায়ের কাছে থাকবে বলে রায় দেন ঢাকার জেলা জজ আদালত।

তারও আগে, ২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান শিশুদের জিম্মা চেয়ে বাবা ইমরান শরীফের মামলা খারিজ করে রায় দেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে ইমরান শরীফ জেলা জজ আদালতে আপিল করেন।

এরপর একই বছরের ১২ জুলাই জেলা জজ আদালতেও ইমরান শরীফের আবেদন খারিজ করে দেন। তারপর জেলা জজ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন শিশুদের বাবা ইমরান শরীফ। এর ধারাবাহিকতায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রিভিশন আবেদন আংশিক যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন শিশুদের মা এরিকো নাকানো, যা এখন বিচারাধীন।

আইনজীবীদের তথ্যানুযায়ী, জাপানের নাগরিক এরিকো নাকানো ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইমরান শরীফের ২০০৮ সালের ১১ জুলাই বিয়ে হয়। তাদের তিনটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে (বড় ও মেজ) নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। ছোট মেয়ে জাপানে আছে।

ইমরানের কাছ থেকে দুই মেয়েকে ফিরে পেতে ঢাকায় এসে ২০২১ সালের আগস্টে হাইকোর্টে রিট করেন এরিকো। অন্যদিকে, ছোট মেয়েকে ফিরে পেতে পৃথক একটি রিট করেন ইমরান। এ ছাড়া, একই বছর শিশুদের ফিরে পেতে ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন ইমরান শরীফ।

সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম

ইমরান শরীফ জাপানি শিশু টপ নিউজ নাকানো এরিকো


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর