ঢাকা: বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতিজনিত অভিযোজনের জন্য বছরে ৯ বিলিয়ন বা ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
সোমবার (২৫ মার্চ) রাজধানীতে অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ আয়োজিত ‘কপ-২৮-এর অভিজ্ঞতা, প্রাপ্তি এবং আসন্ন কপ-২৯ নিয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার রূপরেখা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, জলবায়ু অভিযোজনের জন্য আমাদের বছরে ৯০০ কোটি ডলার প্রয়োজন, যেখানে আমরা পেয়েছি ৩৫০ কোটি ডলার। জলবায়ু সংকট না থাকলে আমরা এই অর্থ রাস্তা, স্কুল, হাসপাতালের মতো প্রতিষ্ঠান নির্মাণে কাজে লাগাতে পারতাম।
কপ-২৮ ও আসন্ন কপ-২৯ প্রসঙ্গে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ক্লাইমেট ফিন্যান্স তথা জলবায়ু অর্থায়ন বলতে আমর কী বুঝি, তা নিয়ে আগামী কপে আলাপ হবে। আমরা চাই না, পুরনো জিনিসকে নতুন করে আমাদের সামনে দেওয়া হোক। আমরা চেষ্টা করছি আমাদের জাতীয় অভিযোজন তহবিলে স্বাস্থ্যের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে।
মন্ত্রী আরও বলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখার বিষয়ে বলব— আমরা যত অঙ্গীকারই বাস্তবায়ন করি, তাপমাত্রা ২.৬ ডিগ্রির ওপরে চলে যাবে। কিন্তু হাল ছেড়ে দিলে ৩ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যাবে। আমরা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে গ্রিন অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স ডেভলাপমেন্ট নীতিমালা গ্রহণ করেছি। এখন থেকে আমাদের যত উন্নয়ন, তা এই নীতির আলোকে বাস্তবায়িত হবে। নেট জিরো নিশ্চিত করতে হলে আমাদেরকে জীবাশ্ম-জ্বালানিতে বিনিয়োগ কমাতে হবে। না হলে ২০৩৫ সালের মধ্যে আমরা নেট জিরো লক্ষ্য পৌঁছাতে পারব না।
এর আগে কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক মো. জিয়াউল হক। এতে তিনি বাংলাদেশের কপ-২৮-এর প্রাপ্তি ও ফলাফল এবং কপ-২৯-এ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের দর কষাকষির বিভিন্ন জায়গা, উন্নয়ন কৌশল এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। এর মধ্যে জলবায়ু প্রশমন, অভিযোজন, অর্থনৈতিক সহায়তা, প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার, সক্ষমতা বৃদ্ধি, ক্ষয়ক্ষতি এবং জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের পরিকল্পনার মতো বিষয়গুলো উঠে আসে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, সিভিল সোসাইটি অরগানাইজেশন (সিএসও), জলবায়ু বিশেষজ্ঞ, তৃণমূল পর্যায়ে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর প্রতিনিধি, তরুণ জলবায়ু কর্মী, শিক্ষাবিদ, গণমাধ্যমকর্মী এবং অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা।