সম্মিলিত শ্রদ্ধার ঐতিহ্য খর্ব করা যাবে না: সিপিবি
২৬ মার্চ ২০২৪ ২৩:১৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: সুবিধাবঞ্চিত জায়গায় অস্থায়ী স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করে সম্মিলিত শ্রদ্ধা জানানোর ঐতিহ্য ক্ষুণ্নের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), চট্টগ্রাম জেলা শাখা।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সিপিবি, চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি অশোক সাহা ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর এ প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে সিপিবি নেতারা বলেন, সংস্কার ও আধুনিকায়নের নামে গত তিন বছর ধরে চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারটিকে অকেজো করে রাখা হয়েছে। গত ডিসেম্বরে সেটি খুলে দেওয়ার পর দেখা যায়, প্রাণের স্থাপনাটিকে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলা হয়েছে। সুড়ঙ্গপথ, দুপাশে ইটের দেয়াল বানিয়ে শহিদ মিনারটিকে চোখের আড়াল করে ফেলা হয়েছে। এখনো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে আছে শহিদ মিনারটি, যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষের হৃদয়ে গভীর ক্ষত তৈরি করছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, একুশের প্রভাতফেরি, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসে শহিদ মিনারে সমবেত হয়ে আসছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, প্রগতিশীলতা ও অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাসী সর্বস্তরের জনতা। কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার ব্যবহার করতে না পারায় সিটি করপোরেশনের নির্মিত অস্থায়ী শহিদ মিনারে চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষ এতদিন জাতীয় দিবসগুলোতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছিলেন। এবার সে সম্মিলনেও বিপত্তি তৈরি করা হয়েছে।
সিপিবির নেতারা বলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে সাগরপাড়ে একটি অস্থায়ী স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করেছে। বলা হচ্ছে, সেখানেই পরবর্তীতে স্থায়ী স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হবে। স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি চট্টগ্রামবাসীর ছিল। কিন্তু নির্মাণের আগে চট্টগ্রামের জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠন, পেশাজীবী, ছাত্র, যুব ও সংস্কৃতিকর্মীদের সঙ্গে একবারও আলোচনার প্রয়োজন বোধ করেনি জেলা প্রশাসন।
‘এটি দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। শহরের উপকণ্ঠ দক্ষিণ কাট্টলী, সেখানে রিজার্ভ গাড়ি ছাড়া সহজে যাতায়াতের কোনো সুযোগ নেই। জনমানবহীন-নির্জন ওই এলাকায় স্মৃতিসৌধ নির্মাণের আগে একবারও কেন চিন্তা করা হলো না, সেখানে সাধারণ মানুষ কীভাবে শ্রদ্ধা জানাতে যাবে,’— বিবৃতিতে বলেন সিপিবি নেতারা।
তারা আরও বলেন, চট্টগ্রামের মানুষের প্রাণের দাবি মেনে নিয়ে অবিলম্বে শহরের প্রাণকেন্দ্রে স্থায়ী স্মৃতিসৌধ নির্মাণের আহ্বান জানাচ্ছি। তবে তার আগে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সব রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী, ছাত্র, যুব, সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের মতামত নিতে হবে। বীর শহিদদের শ্রদ্ধা জানানোর সম্মিলিত আয়োজনের ঐতিহ্য কোনোভাবেই খর্ব করা চলবে না।
সিপিবি নেতারা বলেন, এমন অপচেষ্টা অব্যাহত রাখলে সিপিবি রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী, ছাত্র-যুব ও সংস্কৃতিকর্মীদের নিয়ে গণআন্দোলন গড়ে তুলবে। একইসঙ্গে আমরা অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও সংস্কারকাজ শেষ করে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
সারাবাংলা/আইসি/টিআর
অস্থায়ী স্মৃতিসৌধ চট্টগ্রাম সিপিবি শহিদ মিনার শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা শ্রদ্ধা নিবেদন সিপিবি