ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্ম বিরতিতে রমেকের সেবা কার্যক্রম ব্যাহত
২৮ মার্চ ২০২৪ ১৭:৩৬
রংপুর: বেতন–ভাতা বৃদ্ধি, বকেয়া ভাতা পরিশোধসহ চার দফা দাবিতে টানা পঞ্চমদিনের মতো কর্ম বিরতি পালন করেছেন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত রোববার থেকে অন্যান্য মেডিকেল কলেজের মতো রংপুরেও এ কর্মসূচি পালন করে আসছেন চিকিৎসকেরা।
এদিকে, কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীদের কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর স্বজনরা জানান, আগে দিনে একাধিকবার চিকিৎসক এলেই এখন শুধু দিনের বেলা সকালে চিকিৎসক আসেন। দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত নার্সরাই একমাত্র ভরসা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি— কর্মবিরতির কারণে সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ঘাটতি নেই।
ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে থাকায় অন্যান্য চিকিৎসকদের দিয়ে পালাক্রমে সেবা দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হচ্ছে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ ইউনুস আলী বলেন, ‘ইন্টার্ন চিকিৎসকের কর্মবিরতির কারণে চিকিৎসাসেবা কিছুটা ব্যাহত হলেও অন্যান্য চিকিৎসকেরা পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করছেন। এ বিষয়ে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষসহ অন্যান্য চিকিৎসকদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে।’
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ শাখার আহ্বায়ক রানা বলেন, ‘আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি চিকিৎসক ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। ২৫ মার্চ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আশানুরূপ আলোচনা না হাওয়ায় কর্মসূচি বৃদ্ধি করে ২৯ তারিখ পর্যন্ত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘গতবছর তারা মাসিক বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। তখন তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বেতন–ভাতা বৃদ্ধির আশ্বাস দিলে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন। দাবি পূরণ না হওয়ায় তারা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন।’
ইন্টার্ন চিকিৎসক সংগঠনের এ নেতা বলেন, ‘গত রোববার আগে বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, চিকিৎসক সুরক্ষা আইন ও চিকিৎসকদের কর্মস্থল নিরাপদের দাবিতে হাসপাতালের পরিচালককে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান আসেনি।’
জানা যায়, এক হাজার শয্যার হাসপাতালে আড়াই গুণেরও বেশি রোগী সবসময় ভর্তি থাকে। বর্তমানে রমজান মাস হওয়ায় কিছুটা রোগী কম রয়েছে। বৃহস্পতিবার রোগী ভর্তি রয়েছে ১হাজার ৯০০। হাসপাতালে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক রয়েছেন ১৫০ জন।
হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর স্বজন আশরাফুল বলেন, ‘আগে দিনে একাধিকবার চিকিৎসক আসলেই এখন শুধু দিনের বেলা সকালে চিকিৎসক আসেন। দুপুরের পর থেকে শুধুমাত্র নার্স থাকেন।’
অর্থোপেডিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অনুপস্থিতিতে অসুবিধা হচ্ছে। তবে আমাদের বিভাগের মিড-লেভেল (মধ্যস্তর) চিকিৎসক বেশি। সেবার ত্রুটি করা হচ্ছে না।’
হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ও কলেজের অধ্যক্ষ মাহফুজার রহমান বলেন, ‘রমজান মাস হওয়ায় রোগীর চাপ কম। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলায় মধ্যস্তরের চিকিৎসকদের দিয়ে সেবা দেওয়া হচ্ছে। কিছুটা অসুবিধা হলেও সামলে নেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসার কোনো ত্রুটি করা হচ্ছে না।’
সারাবাংলা/একে