আলুর দাম আরও বাড়তে পারে— জানাল কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন
২৮ মার্চ ২০২৪ ১৮:৩৬
ঢাকা: গত বছরের চেয়ে এবার দ্বিগুণের চেয়ে বেশি দামে আলু কিনতে হচ্ছে বলে দাবি করেছেন কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। বেশি দামে আলু কিনে সংরক্ষণ করায় আগামীতে আরও বেশি দামে আলু বিক্রি করতে হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর পল্টনের বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন ও সেভার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড আয়োজিত এক ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে সংগঠনটির নেতারা এসব কথা জানান। আগামী মে মাসে তিন দিনব্যাপী কোল্ড চেইন প্রদর্শনী উপলক্ষ্যে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘এ বছর কৃষক আলুর ভালো দাম পাচ্ছেন। গত বছর আলুর দাম ছিল ৮ থেকে ১২ টাকা। এবার কৃষকরা উচ্চ মুল্যে অর্থাৎ ২৫-৩২ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করেছে। বেশি দামে কিনে যেহেতু কোল্ড স্টোরেজ করা হয়েছে তাই এবার আলুর দাম বেশি হবে।’
এক প্রশ্নের উত্তরে মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘উৎপাদন কম হওয়ার কারণে এ বছর ৫০ টাকার বেশি দাম দিয়ে ভোক্তাদের আলু কিনে খেতে হবে।’ আলুর দাম বাজারে আরও বেশি থাকতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘এবার মৌসুমের শুরুতে বাজারে আলুর দাম অনেক বেশি ছিল। কৃষক বেশি লাভের আশায় পুরোপুরি পরিপক্ক হওয়ার আগেই আগাম আলু তুলেছে। এতে প্রায় ৩০ শতাংশ আলু আগেই উঠানো হয়েছে; এটাই ঘটতি হবে। ফলে এবারও আলু আমদানি করতে হবে। ইতোমধ্যে পটেটো চিপস কোম্পানিগুলোর চাহিদার কারণে এক হাজার মেট্রিকটন আলু আমদানি করা হয়েছে।’
এয়ার কন্ডিশনিং এবং কোল্ড চেইন পলিসি ইমপ্লিমেন্টেশন সংক্রান্ত এফবিসিসিআইয়ের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘পুরো একটি কোল্ড স্টোরেজ আমদানি করতে আমাদের ১ শতাংশ এর মত শুল্ক দিতে হয়। কিন্তু যখন এর একটা পার্টস আমদানি করতে হয় তখন আমাদের এই শুল্ক ১৩০ শতাংশ হয়ে যায়। বিনিয়োগের জন্য এটা একটা বড় সংকট। এটা ৩-৫ শতাংশ এর মধ্যে হলে ভালো হয়।’
অনুষ্ঠানে কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘কোল্ড স্টোরেজ শুধু খাদ্য নিরাপত্তা নয়, নিরাপদ খাদ্যের জন্যও দরকার। কারণ অনেক খাবারে প্রিজারভেটিভ দিয়ে সংরক্ষণ করতে হয়, যেটা কোল্ড স্টোরেজে রাখতে হলে দরকার হবে না। এখানেও আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে।’
বাংলাদেশের পচনশীল পণ্যের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সরবরাহ ঠিক রাখতে কোল্ড চেইন ব্যবস্থার উন্নয়নের দাবিও জানান খাত সংশ্লিষ্টরা। সমন্বিত কুল চেইন নীতি নির্ধারণ ও কোল্ড স্টোরেজ বাবসায়ীদের জন্য স্বল্প সুদে লোনের ব্যাবস্থা করে এই খাতের উন্নয়নের আহ্বানও জানান তারা।
দেশে বর্তমানে ৪ শতাধিক কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে। যেগুলোতে আলু সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে উদ্যোক্তারা চান পেঁয়াজ, টমেটো, গাজর, মাংস, খেজুরসহ বিভিন্ন পণ্য সংরক্ষণের জন্য কোল্ড স্টোরেজ তৈরিতে নতুন বিনিয়োগ করতে। এ জন্য সরকারের কাছে কম সুদে মূলধন চান এ খাতের উদ্যোক্তারা।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, রাজধানীর কুড়িলে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি) তে আগামী ১৬ মে থেকে ১৮ মে তিন দিনব্যাপী কোল্ড চেইন বাংলাদেশ ২০২৪ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই প্রদর্শনীটি কোল্ড চেইন প্রযুক্তির অগ্রগতি প্রদর্শন এবং বাংলাদেশে কোল্ড স্টোরেজ এবং লজিস্টিকসের দক্ষতা বাড়ানোর কৌশল নিয়ে আলোচনা করার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কোল্ড স্টোরেজের নানা প্রযুক্তির প্রদর্শনী থাকবে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সেভার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফয়জুল আলম চৌধুরী।
সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম