ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। আমি কথাটার সঙ্গে এখনও একমত। কারণ, আমাদের মুক্তি-স্বাধীনতার সংগ্রাম এখনও শেষ হয়নি। আমরা সেই মুক্তির সংগ্রাম এখনও করছি।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মওলানা আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন। ‘অন্তরে মম শহীদ জিয়া’ নামে একটি সংগঠনের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ জিয়াউর রহমানের ভূমিকা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান আলোচক ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমত উল্যাহ, রফিক শিকদার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর বলেন, আমরা মুক্ত নই। খালেদা জিয়া বন্দি আছেন, শুধু তাকে নয়, পুরো দেশ-জাতিকে আমরা মুক্ত করতে চাই একটি রাহুর গ্রাসের কবল থেকে। আমরা যে স্বপ্ন দেখে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি, সেই সংগ্রামটি শেষ হয়নি কেন? অর্থাৎ, আকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা এখনও আমাদের আয়ত্তে আসেনি।
তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছেন সারা গণতান্ত্রিক দেশের লোক আমাদের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল, ভারত যদি পাশে না থাকতো, তাহলে আমরা এই ৭ তারিখের আমি, ডামি, স্বামী, নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারতাম না। এজন্যই এই ঝামেলার শুরু হয়েছে।
গয়েশ্বর বলেন, জিয়াউর রহমান যদি স্বাধীনতার পাঠক হন, তাহলে লেখক কোথায়? সেই কাগজটি কোথায়? জিয়াউর রহমানকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমাদের (বিএনপি) কোনও প্রচেষ্টার প্রয়োজন নেই। জিয়াউর রহমান নিজেই নিজের কর্মগুণে প্রতিষ্ঠিত জাতির অন্তরে, ইতিহাসে। জিয়াউর রহমানকে ছাড়া বাংলাদেশের ইতিহাস লেখা কখনোই সম্ভব নয়। আজকের ইতিহাস কখনোই পরিপূর্ণ ইতিহাস হবে না।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের ছবি পাহারা দেওয়ার জন্য পুলিশ-র্যাবের প্রয়োজন হয় না। কারণ তার ছবি মানুষের অন্তরে আঁকা। অন্তরের ছবি কখনও ফ্যাকাসে হয় না। সুতরাং সেই ছবি কারও পক্ষে ছেড়া সম্ভব না।
ভারতের প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন ১০ হাজার মানুষ ভারতের ভিসার জন্য আবেদন করে। ভিসার জমা ফি বাবদ ৮০০ টাকা করে জমা দিতে হয়। অর্থাৎ প্রতিদিন ৮০ লক্ষ টাকা। এটা ভিসা পেলেও ৮০০ টাকা দিতে হবে, না পেলেও দিতে হবে। মাসে ২ কোটি ২৪ লাখ টাকা বাংলাদেশ থেকে ভিসা ফি বাবদ ভারত আমাদের দেশ থেকে আয় করে। তাহলে বছরে কত কোটি টাকা?
গয়েশ্বর আরও বলেন, শুধু কি এটা। এরপর বর্ডার ক্রস করলে (ভারতে গেলে) দৈনিক কমপক্ষে ৫ হাজার টাকা খরচ হয়। ৭ দিন থাকলে ৩৫ হাজার টাকা খরচ। আসার সময় ৫০ হাজার টাকার বাজার খরচ। এরপর ওষুধ…. হোটেল খরচ। আর পণ্য বর্জন কী? বাংলাদেশের মানুষ যদি বলে কাল থেকে ভারতে যাব না, তাদের অর্থনীতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে একবার ভেবে দেখুন।
অন্তরে মম শহীদ জিয়া সংগঠনের সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, ছাত্রদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাজু আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন প্রমুখ।