Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বুয়েটে সক্রিয় ছাত্রশিবির-হিযবুত তাহরীর— দাবি ৫ শিক্ষার্থীর

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
৩০ মার্চ ২০২৪ ২০:৫৫

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবেগকে ব্যবহার করে কার্যক্রম চালাচ্ছে ছাত্রশিবির ও হিযবুত তাহরীর— এমন দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির পাঁচ শিক্ষার্থী। তারা বলছেন, ‘একটি অন্ধকার সংগঠনের ইন্ধনে বুয়েটে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।’

শনিবার (৩০ মার্চ) বিকেলে এ সংবাদ করেন ওই শিক্ষার্থীরা। তারা নিজেরা ‘কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংযুক্ত নন’ বলে দাবি করেন সংবাদ সম্মেলনে।

নিজেদের ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী’ হিসেবে পরিচয় দেওয়া এই পাঁচ শিক্ষার্থীর দাবি, “(বুয়েটে) মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির হয়ে যিনিই কথা বলছেন, তাকেই ‘ছাত্রলীগ’ ট্যাগ দিয়ে বারবার অত্যাচার করা হচ্ছে।”

গত বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন তার রাজনৈতিক কর্মীদের নিয়ে বুয়েটের একটি সেমিনার রুমে কর্মসূচির আয়োজন করেন— এমন অভিযোগ এনে শুক্রবার (২৯ মার্চ) দুপুর থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয় বুয়েটে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি, বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও ছাত্র কল্যাণ পরিচালক ড. মিজানুর রহমানের জ্ঞাতসারেই ছাত্রলীগ কর্মসূচিটি পালন করেছে। এর প্রতিবাদে তারা সংবাদ সম্মেলন করে ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন। বলেন, দাবি মেনে নেওয়া না হলে তারা শ্রেণিকক্ষে ফিরবেন না।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তাদের অভিযোগ অনুযায়ী সেদিনকার ঘটনার ‘সংগঠক’ ইমতিয়াজ রাব্বীকে হল থেকে বহিষ্কার করে বুয়েট প্রশাসন। এ ছাড়া সার্বিক ঘটনা তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের’ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেননি। শনিবার দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন করেন তারা।

বুয়েট শিক্ষার্থীদের এমন আন্দোলনের মাঝেই বিকেল ৩টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রতিষ্ঠানটির পাঁচ শিক্ষার্থী। তাদের তানভীর মাহমুদ লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। বক্তব্যে বলা হয়, ২০২৩ সালের জুলাইয়ে সুনামগঞ্জের হাওরে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র ও নাশকতার অভিযোগে বুয়েটের সাবেক ও বর্তমান ৩৪ জন শিক্ষার্থী গ্রেফতার হন। তাদের নামে আদালতে মামলা চলমান এবং সবাই জামিনে আছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী মৌলবাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করি। এই মানববন্ধন করার পর আমাদের চিহ্নিত করে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয় এবং জবাবদিহি চাওয়া হয়। বিভিন্ন হলের কক্ষে কক্ষে রাত ১১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ডেকে জবাবদিহি চাওয়া হয়। এমনকি মানববন্ধনকে একটি অপরাধের সঙ্গে তুলনা করে আমাদের হল থেকে বের করে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘বুয়েটের অভ্যন্তরীণ ফেসবুক গ্রুপগুলোতে আমাদের পক্ষে কেউ নিজের কোনো মতামত রাখতে গেলে তাকে বুলিং এবং নানা ধরনের হুমকির শিকার হতে হয়। আমাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক কিংবা পরিচয় থাকায় অনেককেই কটাক্ষের স্বীকার হতে হয়। যে কারওই পারিবারিকভাবে বা ব্যক্তিগতভাবে কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তির সঙ্গে, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শক্তি বা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত হলেই বা পরিচয় থাকলে তাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয়। পরিবার নিয়েও অনলাইন-অফলাইনে অশালীন মন্তব্য করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী আমাদের মতো গুটিকয়েক ছেলের বিরুদ্ধে কারা এসব করছে এবং কাদের ইন্ধনে এসব হচ্ছে, তা একটু ভেবে দেখার সময় হয়েছে। মিথ্যাচার করে আমাদের দোষী করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা করছে একটি মৌলবাদী গোষ্ঠী।’

আরেক শিক্ষার্থী আশিক আলম বলেন, ‘ক্যাম্পাসের কিছু ঘটনা এবং আমাদের ওপর একের পর এক আক্রমণ প্রমাণ করে দেয় যে ছাত্র রাজনীতিবিহীন বুয়েট ক্যাম্পাসে এখন প্রকাশ্যেই হিযবুত তাহরীর তাদের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। এই নিষিদ্ধ সংগঠন তাদের স্বার্থ হাসিল করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি আবেগ নিয়ে। বুয়েটে আবরার ফাহাদ ভাইয়ের সঙ্গে খুব খারাপ একটি ঘটনা ঘটেছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’

হিযবুত তাহরীর ও ছাত্রশিবির বুয়েটে কার্যক্রম চালাচ্ছে জানিয়ে আশিক বলেন, ‘হিযবুত তাহরীর ও শিবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই আবেগকে পুঁজি করে প্রকাশ্যেই নিজেদের প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। আমাদের সঙ্গে উপস্থিত হওয়ার জন্য অনেক শিক্ষার্থী থাকলেও ভয়ে ও হুমকিতে আসতে পারছেন না। আরও ২০-২৫ জন এখানে আসতে চাইলেও তাদের ভয় দেখানো হচ্ছে, হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’

সারাবাংলা/আরআইআর/একে

টপ নিউজ বুয়েট শিবির হিজবুত তাহরীর


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর