অভিযোগ আমলে না নিলে প্রয়োজনে ফেসবুক-ইউটিউব বন্ধ করবে সরকার
৩১ মার্চ ২০২৪ ১৯:৫১
ঢাকা: সরকারের অভিযোগ আমলে না নিলে ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো প্রয়োজনে বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
রোববার (৩১ মার্চ) সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। কমিটির সভাপতি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী বলেন, গুজব প্রতিরোধ ও সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে আমাদের কিছু কথা আছে। ওদের (ফেসবুক, ইউটিউব, গুগল) হেড অফিস এখানে না থাকার কারণে বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের সুপারিশ-কথা সেগুলো তারা শোনে না। তারা যে শুনছে না, সেটা আমরা পাবলিকলি প্রচার করব। প্রয়োজনে এগুলো কিছু সময়ের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে আগে যথাযথভাবে নোটিফাই করব। আমরা জানাব, আমাদের অভিযোগ তারা (সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম) যথাযথভাবে আমলে নিচ্ছে না। তারা এসব (সাইবার) ক্রাইম, গুজব অব্যাহত রাখছে এবং তাদের পক্ষ থেকে (প্রতিরোধের) কোনো উদ্যোগ নেই।
ফেসবুক-ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো সরকারের কথা শুনছে না— এ কথা জানিয়ে আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, প্রথমে তাদের বারবার বলা হবে। দরকার হলে আমরা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন আকারেও বলব, যেন বিশ্ববাসীর কাছে মনে না হয় যে এখানে কোনো মৌলিক অধিকার ব্যাহত হচ্ছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, সোস্যাল মিডিয়া আইনের যে বিধানগুলো রয়েছে— কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া— আমাদের অভিযোগগুলোর ক্ষেত্রে তারা সেটি করছে না। তাদের এই উদাসীনতা পাবলিক নোটিশের মাধ্যমে জনগণকে অবহিত করা হবে। যদি কখনো এগুলো বন্ধ হয়, দায়টা যেন সরকারের ওপরে না আসে, তাদের (সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম) ওপরই যেন বর্তায়। তাদের আমরা কী অভিযোগ দিলাম, সেগুলোও যেন মানুষ জানে। মানুষ যেন জানে, আমরা অভিযোগ করে প্রতিকার পাচ্ছি না।
উপজেলা নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আচরণ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির এই সভাপতি বলেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অনেক সময় আইন প্রয়োগে হয়তো প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। এই কমিটি মনে করে, উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিব্রত পরিস্থিতিতে পড়তে হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোরভাবে হুঁশিয়ার করা হয়েছে, কোনো প্রার্থী নিয়ম ও নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে যেন তারা শক্ত ভূমিকা পালন করে।
ভবন নির্বাচনে নিয়ম অনুসরণের বিষয়টিও সভায় আলোচনা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। বলেন, ভবন নির্মাণের কোড মানা হচ্ছে না। ভবন থেকে কেমিকেল সরাচ্ছে না। এসব ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কমিটি। দ্রুত যেন আবাসিক ভবন থেকে কেমিকেল সরানো হয়, সেটি নিশ্চিত করতে শিল্পমন্ত্রী দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন। ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে যেন কোড মেনে চলা হয়, সেটিও বলা হয়েছে। ভবনগুলোতে দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে যারা যারা দায়ী, সবার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অপরাধ বাড়ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে সভায়। এ ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদারের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ে মাদকের বিস্তার প্রতিরোধে সচেনতনতা বাড়ানোর জন্যও সভায় আলোচনা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী মোজাম্মেল হক।
সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল; আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক; জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনসহ কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/জেআর/টিআর
আ ক ম মোজাম্মেল হক আইনশৃঙ্খলা কমিটি ইউটিউব ফেসবুক মন্ত্রিসভা কমিটি সাইবার অপরাধ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সোস্যাল মিডিয়া