অর্থসংকটে খাতা দেখার বিল দিতে পারছে না যশোর শিক্ষা বোর্ড!
১ এপ্রিল ২০২৪ ১০:০৪
যশোর: পাবলিক পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে বাড়তি পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষক নিয়োগ দিয়ে অর্থসংকটে পড়েছে যশোর শিক্ষা বোর্ড। ফলে ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন বিল এখনও পরিশোধ করতে পারেনি বোর্ড। এই বিল পরিশোধে প্রয়োজন প্রায় সাত কোটি টাকা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট খাতে জমা আছে পাঁচ কোটি টাকার মতো। উপায় না দেখে অন্য খাত থেকে বাড়তি এ টাকা সমন্বয়ের জন্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চেয়েছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, বছর ঘুরলেও উত্তরপত্র মূল্যায়নের বিল না পাওয়ায় বোর্ড কর্তৃপক্ষকে দুষছেন পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষকরা। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, দ্রুতই তাদের বিল ছাড় করা হবে।
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানিয়েছে, ২০২৩ সালের এইচএসসির উত্তরপত্র মূল্যায়নে পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষকদের বিল এখনও পরিশোধ করা হয়নি। ২০২৩ এইচএসসির জন্য এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৯৮৬ জন পরীক্ষক বিল জমা দিয়েছেন। কিন্তু প্রকৃত সংখ্যা ৫ হাজারেরও বেশি। এখনও অনেকে বিল জমা দেননি। উত্তরপত্র মূল্যায়নসহ সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যয় নির্বাহে ৬ কোটি ৭২ লাখ টাকার প্রয়োজন। কিন্তু ওই ফান্ডে ৫ কোটির মতো জমা আছে।
সূত্র জানায়, যেকোনো পাবলিক পরীক্ষার ফরম পূরণের সঙ্গে সঙ্গেই পরীক্ষার্থীর সংখ্যা নির্ধারিত হয়ে যায়। আর ফরম পূরণ করার সময় ফি’র সঙ্গে খাতা দেখার নির্ধারিত টাকাও জমা নিয়ে নেওয়া হয়। ফলে উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য নির্ধারিত অর্থে ঘাটতি দেখা দেওয়ার কথা নয়। অথচ এই ফান্ডে এখনও প্রায় দুই কোটি টাকা ঘাটতি।
সূত্র আরও জানায়, মন্ত্রণালয় কোনো অর্থ দেয় না, বোর্ডের আয় থেকে সব পরিশোধের নিয়ম থাকলেও বার্ষিক খরচের প্রাক্কলন অনুমোদন করিয়ে নিতে হয়। এখন নানা অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কারণে বোর্ডের ব্যয় বেড়েছে। এ ছাড়া, টেন্ডার ব্যয়ও বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছর খাতা কেনাসহ আনুষঙ্গিক ব্যয়ের জন্যে ১৬ কোটি টাকার টেন্ডার হয়। এই টাকাও প্রাক্কলন অর্থ থেকে ছাড় করানো হয়। এসব কারণেও খরচ বেড়েছে। পাশাপাশি পাবলিক পরীক্ষার পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষক বেড়েছে-বেড়েছে তাদের টিএ-ডিএও। এ কারণেও টান পড়েছে ফান্ডে।
সূত্র মতে, আগে একজন প্রধান পরীক্ষকের আওতায় ১৫ থেকে ২৫ জন পরীক্ষক কাজ করতেন। এখন প্রধান পরীক্ষকরা তিন থেকে পাঁচ হাজার খাতা পান, পরীক্ষক থাকে অনেক ক্ষেত্রে ৮/১০জন। আগে ৩০০ থেকে ৪০০ খাতাও পেতেন একজন পরীক্ষক। এখন পান ২০০ থেকে ২৫০ খাতা। এ কারণে পরীক্ষক, প্রধান পরীক্ষকসহ অন্যান্য জনবল বেড়েছে। ফলে বেড়েছে খরচও।
সহকারী অধ্যাপক মনিরুজ্জামান নামের একজন প্রধান পরীক্ষক সারাবাংলাকে জানান, তিনি ৩৮০০ উত্তরপত্র পেয়েছিলেন। সেগুলো দেখে জমা দিলেও এখনও বরাদ্দকৃত অর্থ পাননি। তার মতো অনেকেই ঈদের আগে বিল পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন।
এ প্রসঙ্গে যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যার অধ্যাপক ড. মো. আহসান হাবীব সারাবাংলাকে বলেন, ‘পরীক্ষার্থী বেড়েছে, সেইসঙ্গে উত্তরপত্র মূল্যায়নের ফিও বেড়েছে। এ কারণে বাজেটের চেয়ে বাড়তি অর্থের প্রয়োজন হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলছে। দ্রুতই শিক্ষকদের উত্তরপত্র মূল্যায়নের ফি পরিশোধ করা হবে।’
সারাবাংলা/পিটিএম