দাম বেশি, ঈদে পছন্দের পোশাক কিনতে পারছেন না ক্রেতা!
১ এপ্রিল ২০২৪ ১২:০৯
রংপুর: পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে দেশি, বিদেশি ট্রেন্ডিং বাহারি ঈদ পোশাকের পসরা সাজিয়েছেন রংপুরের দোকানিরা। তবে ঈদ এখনও ১০ দিন বাকি থাকলেও আশানুরূপ সাড়া নেই ক্রেতাদের। ক্রেতারা বলছেন, আগের চেয়ে পোশাকের দাম অনেক বেশি; তার ওপর নিত্যপণ্যের দাম লাগামছাড়া তাই একটু হিসাব করেই কেনাকাটা করার কথা ভাবছেন তারা। সবমিলিয়ে সাধ্যের মধ্যে পছন্দের পোশাকটি যে কিনতে পারছেন না ক্রেতারা এটা স্পষ্ট।
বিক্রেতাদের দাবি, পোশাক আমদানিতে খরচ বেশি তাই বাধ্য হয়েই বেশি দাম রাখতে হচ্ছে। আপাতত বিক্রি কম হলেও চাকরিজীবীরা বেতন-বোনাস পেলে বিক্রি বাড়বে।
সরেজমিনে নগরীর জাহাজ কোম্পানি সুপার কমপ্লেক্স, জেলা পরিষদ সুপার মার্কেট, জামাল মার্কেট, সালেক মার্কেটসহ বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডের দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, নানা ডিজাইনের নতুন পোশাক শোভা পাচ্ছে দোকানগুলোতে। বিক্রেতারা সুরে সুরে হাঁকডাক দিয়ে ক্রেতার নজর কাড়ার চেষ্টা করছেন।
এসব মার্কেটে বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক, থ্রিপিস, লেহেঙ্গা, শাড়ি, কসমেটিকস, শিশুদের পোশাক, জুতা, বেল্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, প্লাজু, ব্যাগ, খেলনা, কসমেটিকস ইত্যাদি কিনতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। পাশাপাশি ফুটপাতেও বিক্রি হচ্ছে পোশাক, সেখান থেকেও কিনছেন অনেকে।
‘মেলো কালারে’র মালিক রাজিব হাসান বলেন, ‘ডলারের দাম, বিদ্যুতের দাম, কাপড় তৈরির খরচ, মজুরি ও দোকানের ভাড়া ও খরচ সবই গতবছরের তুলনায় বেড়েছে। ফলে এ বছর সবমিলিয়ে পোশাক তৈরিতে ৭ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত খরচ বেড়েছে। নামিদামি দেশি ব্র্যান্ডের ফ্যাশনহাউজগুলোর উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা আমাদের জানিয়েছেন এবছর তাদের উৎপাদন খরচ ৭ থেকে ১০ শতাংশ, ক্ষেত্র বিশেষে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।’
বাজেটের সঙ্গে পোশাকের দাম মিলছে না, মার্কেটে এমন ক্রেতাই এবার বেশি। পোশাকের দাম বাড়তি মনে হওয়ায় কেউ কেউ অর্ধেক কেনাকাটা করেছেন, কেউ এখনও দাম-দর জানার মধ্যেই আছেন।
স্নেহা চৌধুরী নামে এক ক্রেতা জানান, পোশাক পছন্দ হলে দাম বেশি মনে হচ্ছে। আবার দাম ঠিকঠাক মনে হলে পোশাকের মান প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক দোকানি জানান, সবকিছুর দাম বেশি তাই পোশাকের দামও এবার বেড়েছে। আর কম বাজেটের চিন্তায় যে পোশাক তৈরি করা হয়েছে, তার নকশা ও কাপড়ের মানে কমতি তো থাকবেই।
এদিকে তৈরি পোশাকের পাশাপাশি ঈদের সময় গজ কাপড় কিনে পছন্দমত পোশাক বানিয়ে নেন যেসব তরুণ-তরুণী তারাও নগরীর পাইকারি ও খুচরা দোকানগুলো কেনাকাটা করছেন। তবে গতবারের তুলনায় এবারের গজ কাপড়ের দামও বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
দোকানি আসলাম ইসলাম জানান, ঈদ উপলক্ষে সুতি কাতান প্রতি গজ ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর সিনথেটিক কাতানের দাম ৪০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। ক্রেতারা নকশা করা জর্জেট কাপড় কিনছেন ৭০০ থেকে ২ হাজার টাকা গজে। সুতির টাইডাই ও বাটিক কাপড় কিনতে খরচ করতে হবে গজ প্রতি ৯০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত।
নাহিদা নামের এক ক্রেতা জানান, সুতি, বিদেশি ও সিনথেটিক কাপড়ের দাম গজ প্রতি প্রায় ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে।
এদিকে উচ্চবিত্তরা নগরীর নামিদামি শপিংমল থেকে কেনাকাটা করলেও স্বল্প আয়ের মানুষের ভরসা রাস্তার পাশের ফুটপাতের বাজারগুলো। ঈদের কেনাকাটায় নিম্ন আয়ের মানুষরা ছিলেন বেতন-বোনাসের অপেক্ষায়। এসময়ে এসে কেউ হয়তো বেতন-বোনাস পেয়েছেন, কেউ রয়েছেন অপেক্ষায়। যারা পেয়েছেন তারা শুরু করেছেন ঈদের কেনাকাটা। যারা পাননি তাদের অনেকেই মার্কেট ঘুরে দর-দাম দেখছেন। এতে জমে উঠেছে স্বল্প আয়ের মানুষের ঈদের বাজার।
সারাবাংলা/এমও