‘বাজেট সংস্কারের সময় এখন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ বড় চ্যালেঞ্জ’
২ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:১৭
ঢাকা: নির্বাচন পরবর্তী নতুন সরকারের প্রথম দিকে বাজেট সংস্কারের জন্য এখন উপযুক্ত সময়। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার পথ নানা প্রতিকূলতা ও সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়ন অব্যহত রাখতে হলে গুণগত মানের সরকরি ব্যয় ব্যবস্থাপনা, স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় রাজস্ব আহরণ বাড়ানো ও ব্যাংক খাতে দুরাবস্থা দূর করতে হবে। এ সবই এখন বাজেট সংস্কারের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে বলে মনে করছেন বিশেজ্ঞরা।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাজধানীত জাতীয় প্রেস ক্লাবে গবেষণা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশান ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড) আয়োজিত আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রাক বাজেট আলোচনায় এ সব কথা বলেন জাতীয় সংসদ সদস্য, অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী নেতা ও আর্থিকখাতের বিশেষজ্ঞরা।
র্যাপিড চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদ সদস্য নাসের শাহরিয়ার জাহেদী।
বাজেট ও সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী বাজেটের আকার হবে ৮ লাখ কোটি টাকার। নবম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা তৈরি করার কাজ শুরু করেছি। প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, পঞ্চবার্ষিকীসহ অন্যান্য পরিকল্পনা অনুযায়ী বাজেট প্রণয়ন করা হয়। এছাড়া মূল্যস্ফীতি কমানোর প্রক্রিয়া সুদহার বাড়ানো হয়েছে। সরকার কর জিডিপি অনুপাত বাড়াতে আগ্রহী।’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রকৃত অর্থে মুক্ত অর্থনীতির অনুসারী না, আমরা কল্যাণকর অর্থনীতির অনুসারী। কল্যাণ অর্থনীতিতে চলছে বাংলাদেশ। আসন্ন বাজেটে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে প্রতিফলন ঘটবে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারের ১১টি বিষয় বাজেটে প্রতিফলিত হয়। এর বাইরেও সরকারের কিছু বিষয় আছে সেগুলো মাথায় রেখে বাজেট করা হবে।’
নাসের শাহরিয়ার জাহেদী বলেন, ‘ইউনিয়ন পর্যায়ে ভূমির খাজনা আদায়ে তহসিল অফিস আছে। আর জেলা পর্যায়ে পর্যন্ত কর কর্মকতা আছে। উপজেলা পর্যায়েও মানুষের আয় বেড়েছে, করদাতা বাড়েনি। কর খেলাপিদের বা দুর্নীতিগ্রস্থদের বাড়তি সুযোগ দেওয়া সাধারণ করদাতারা নিরুৎসাহিত হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাজেটে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে যা করার আছে তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে নজর দিতে হবে।’
উচ্চ প্রবৃদ্ধির আকাঙ্খা অর্জনের টানা বাজেট ঘাটতি মেটাতে এতদিন সক্ষম হয়েছে সরকার। তবে আগামী বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমানো ও সরকারি ব্যয় কমানো মুখোমুখি অবস্থানে থাকবে বলে মনে করেন র্যাপিড চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, ‘আগামী বাজেটে সম্প্রসারণমূলক নীতি থাকলে মূল্যস্ফীতি কমানো চ্যালেঞ্জ হবে। আগামী বাজেটে বড় সংস্কার প্রয়োজন। নির্বচনের আগে সংস্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন ছিল। তবে নির্বাচনের পরে এখন সংস্কার করার উপযুক্ত সময়। যেন বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সহজ হয়।’
আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘বাজেট প্রণয়নে সংখার বাইরে বেরিয়ে গুনগত মানের দিকে নজর দিতে হবে। পাশাপাশি রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে যাতে বাজেট ব্যয় বাড়ানো যায়। বিনিময় হার ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ব্যাংকি খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। বাজেট ব্যয় ব্যবস্থাপনা আরও বাড়ানোর জন্য সংস্কারের প্রস্তাব দেন এই অর্থনীতিবিদ।’
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন র্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ। এতে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ, ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ, দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন মাসুম ও ইকোনমিক রিপোটার্স ফোরামের সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মৃধা।
সারাবাংলা/ইএইচটি/একে