হত্যার হুমকি পাচ্ছেন— দাবি ‘ছাত্রলীগ সমমনা’ বুয়েট শিক্ষার্থীদের
৩ এপ্রিল ২০২৪ ২০:৪২
ঢাকা: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্ররাজনীতিমুক্ত রাখার পক্ষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিপরীতে ‘ছাত্রলীগ সমমনা’ হিসেবে পরিচিত কিছু শিক্ষার্থী হত্যার হুমকি পাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন। ইতোমধ্যে নিরাপত্তা চেয়ে বুয়েট উপাচার্যের কাছে ‘প্রমাণসহ’ লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তারা।
বুধবার (৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বুয়েটের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানান বুয়েটের ছয় জন শিক্ষার্থী।
তারা হলেন- কেমিক্যাল অ্যান্ড ম্যাটারিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী আশিক আলম, সাগর বিশ্বাস, অরিত্র ঘোষ, ২১তম ব্যাচের অর্ঘ দাস এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী তানভীর স্বপ্নীল ও বিষ্ণুদত্ত চাঁদ।
এই ছয় জনের দাবি, তারা ছাড়াও হত্যার হুমকি পেয়েছেন আরও কয়েকজন। তবে নিরাপত্তার খাতিরে তাদের নাম লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেননি।
ভুক্তভোগীদের একজন আশিকুল আলম সংবাদ সম্মেলন বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাদের বুলিং করা হচ্ছে। আমরা এটা আর নিতে পারছি না।’
হত্যাকাণ্ডের শিকার বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী আরিফ রায়হান দ্বীপের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘তাকে নিয়েও এভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বুলিং করা হয়েছিল। এর পরও যখন উনি দমছিলেন না, তখন উনাকে নৃশংসভাবে আমাদের বুয়েট প্রাঙ্গণে হত্যা করা হয়। একই কায়দায় আমাদের বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তন্ময় আহাম্মেদ ভাইয়াকেও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আমাদের ক্ষেত্রেও একই জিনিস হচ্ছে। তাই আমরা উদ্বিগ্ন।’
তিনি বলেন, “আমাদের পাবলিকলি এবং ব্যক্তিগতভাবেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমাদের পরিবারের কাছে ফোন যাচ্ছে, ‘আপনার সন্তানকে দেখে রাখুন, নয়তো পরে পাবেন না।’ এই কথাগুলোর মানে কি! আমরা হিজবুত তাহরীর এবং শিবিরের রাজনীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছি বলে এসব হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বাঁশের কেল্লাসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ গ্রুপে আমাদের ছবি পাঠানো হচ্ছে, যার স্ক্রিনশটসহ সব আলামত আমরা লিখিত আবেদনে উল্লেখ করেছি। সেসব গ্রুপে আমাদের জীবননাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যখন আন্দোলন করছিল তখন কোথাও হিজবুত তাহরীর, শিবির বা ছাত্রদলের কারও নাম বহিষ্কারের জন্য ওঠেনি। শুধু ছিল ছাত্রলীগের ইমতিয়াজসহ আরও কয়েকজনের নাম। যারা শিবির ও হিজবুত তাহরির নিয়ে কথা বলেছিল। আমরাই প্রথম শিবির ও হিজবুত তাহরিরের পয়েন্ট এনেছি। তারা এখন আমাদের এই পয়েন্ট নিয়ে পুরো আন্দোলনকে ঘুরিয়ে দিতে চাচ্ছে।’
বুয়েটের ‘মুজিব কর্নারে’ থাকা বঙ্গবন্ধুর ছবি এতদিন ছেঁড়া অবস্থায় ছিল জানিয়ে তারা বলেন, ‘কয়েকদিন আগে কিছু শিক্ষার্থী বঙ্গবন্ধুর ছবি লাগিয়েছিল। কিন্তু এরও ছয় মাস আগে থেকে আমাদের মুজিব কর্নারের দেয়ালে থাকা বঙ্গবন্ধুর ছবিটি ছেঁড়া অবস্থায় ছিল। সেটির দেওয়ালের দিকে তাকানোও যাচ্ছে না। পরে আমরা সেই জায়গাটি সংস্কারের আবেদন করেছিলাম ডিএসডব্লিউ স্যারের কাছে। কিন্তু তিনিও আমাদের সেটি সংস্কারের অনুমতি দেওয়ার সাহস করেননি।’
সারাবাংলা/আরআইআর/পিটিএম