অজ্ঞান পার্টির উৎপাত নয়, ঈদের আগে বেড়েছে চুরি-ডাকাতি
৮ এপ্রিল ২০২৪ ১০:০১
ঢাকা: প্রতি বছর ঈদ এলেই রাজধানীতে অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বেড়ে যায়। বাসে, ট্রেনে লঞ্চে এমনকি ফুটপাতে অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়েন ঈদের আগে কেনাকাটা করতে আসা সাধারণ মানুষ। কিন্তু এবার ঈদুল ফিতরের আগে অজ্ঞান পার্টির তেমন দৌরাত্ম্য দেখা যায়নি।
রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বেশ কিছু ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এর বাইরে এলাকা ভেদে চুরি ডাকাতি বেড়ে গেছে। পুলিশ এসব অপকর্ম প্রতিরোধে বেশ কিছু পরিকল্পনা করেছে। সাজানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এছাড়া নাগরিকদের পুলিশের পক্ষ থেকে কিছু পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও র্যাব বলছে, রাজধানীতে সম্প্রতি যেসব অপরাধমুলক কর্মকাণ্ড ঘটেছে তার বেশিরভাগই কিশোর গ্যাংয়ের। কয়েকটি চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এসব অপরাধ প্রতিরোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। কঠোর হাতে দমন করা হবে অপরাধীদের।
এরইমধ্যে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি), ডিএমপি কমিশনার, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ প্রধান হারুন অর রশীদ ও র্যাব মহাপরিচালক খুরশীদ হোসেন ঈদের নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন।
র্যাবের দাবি, গত ২ এপ্রিল রাজধানীর মোহাম্মদপুর, খিলগাঁও, গুলিস্তান ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকা থেকে ২০ জন চোরাকারবারিকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে অন্তত ৯০০ মোবাইল সেট জব্দ করা হয়। এসব মোবাইল ফোনের বেশিরভাগই ছিনতাই হওয়া বলে জানায় র্যাব।
অন্যদিকে ডিএমপির দাবি, ডিএমপির অধীনে ৫০টি থানা এলাকায় গত কয়েক দিনে অপরাধী চক্রের অন্তত ৫০০ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে চোরাই ল্যাপটপ, ২০০ মোবাইল ফোন, চোরাই মোটরসাইকেল ও চুরির কাজে ব্যবহৃত ছুরি, চাকুসহ বেশ কিছু সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়েছে।
আর পুলিশ সদর দফতর বলছে, রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ঈদকেন্দ্রিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে মাঠ পর্যায়ের পুলিশকে। বার্তা পেয়ে পুলিশও কাজ করছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রধান উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, এবারে ঈদের আগে-পরে মিলে সাত/আট দিন ছুটি। দীর্ঘ ছুটিতে আট থেকে ১০ লাখ পর্যটক বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে বেড়াতে যাবেন। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে সব ধরণের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে কক্সবাজার, পতেঙ্গা, কুয়াকাটা, সিলেট, মৌলভীবাজার, সুন্দরবনসহ ১০৪টি স্পটে নজরদারি করা হচ্ছে। এরমধ্যে কক্সবাজার সি বিচে ২০টি, পতেঙ্গায় ১২টি এবং কুয়াকাটায় ১২টি মোট ৪৪টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। গড়ে তোলা হয়েছে ইন্টারকম ব্যবস্থা। ইমার্জেন্সি এলার্মিং বাটনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেউ নিরাপত্তাহীনতা বোধ করলে হেল্প মি বাটন চাপলেই হাজির হবে ট্যুরিস্ট পুলিশ। সমস্যা সমাধানে নেবে ব্যবস্থা।
পুলিশের আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সার্বক্ষণিক কাজ করছে। এমনকি ঈদের ছুটিও অনেক ক্ষেত্রে বাতিল করা হয়েছে। ছিনতাই প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। থানা পুলিশ নিজ এলাকায় থাকা ব্যাংকগুলোতে নজরদারি করছে। পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও কাজ করছে। সাইবার অপরাধ দমনে পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মনিটরিং করছে।
আইজিপি আরও বলেন, ফাঁকা ঢাকা এবং অন্যান্য শহরে যেন চুরি ডাকাতির মতো ঘটনা না ঘটে সেজন্য বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সারাবাংলা/ইউজে/আইই