প্রহরীকে পিটিয়ে মেরে তড়িঘড়ি লাশ দাফনের চেষ্টা, গ্রেফতার ২
৮ এপ্রিল ২০২৪ ২০:৫৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁওয়ে চুরির অভিযোগ তুলে এক প্রহরীকে পিটিয়ে খুনের ঘটনা ঘটেছে। পরে তড়িঘড়ি করে লাশ দাফনের চেষ্টা করে হত্যায় অভিযুক্তরা। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে।
সোমবার (৮ এপ্রিল) সকালে নগরীতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে চান্দগাঁও থানা পুলিশ।
আগেরদিন রোববার নগরীর চান্দগাঁও থানার বাস টার্মিনাল এলাকায় ছিদ্দিক ম্যানশন নামে একটি ভবনের প্রহরী মো. শহীদুল্লাহ (৩৭) বেধড়ক মারধরের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তার বাড়ি বাঁশখালী উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নে।
এ ঘটনায় গ্রেফতার দু’জন হলেন- ফোরকান উদ্দিন (৩৭) ও মামুন মিয়া (৩৮)।
পুলিশ জানায়, ফোরকান ছিদ্দিক ম্যানশনের মালিক আবু ছিদ্দিকের নিকটাত্মীয়। তিনি ওই ভবনের মূল প্রহরী হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। একই এলাকার বাসিন্দা মামুন ফোরকানের পরিচিত।
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবীর সারাবাংলাকে জানান, শহীদুল্লাহ তিন মাস আগে ছিদ্দিক ম্যানশনে প্রহরীর কাজ নেন। ভবনের মালিক আবু ছিদ্দিক ও তার ছেলে শাওন বিদেশে ছিলেন। সম্প্রতি তারা ফিরে আসেন।
গত শুক্রবার (৫ এপ্রিল) শহীদুল্লাহ’র বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ এনে তাকে ভবন থেকে বের করে দেন ছিদ্দিক। রোববার তাকে আবার ডেকে এনে ছিদ্দিক, ফোরকান, মামুন ও শাওন মিলে মারধর করেন। বেধড়ক মারধরে শহীদুল্লাহ একপর্যায়ে জ্ঞান হারান। তাকে নগরীর জিইসি এলাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি জাহিদুল বলেন, ঘটনা ধামাচাপা দিতে তারা শহীদুল্লাহ পরিবারকে কল দিয়ে জানায় তিনি স্ট্রোক করেছেন। তার পরিবার শহীদুল্লাহর লাশ গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দিতে বলে। তারা সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুলেস ভাড়া করে লাশ বাঁশখালী পাঠিয়ে দেন। লাশ বাড়িতে নেয়ার পর তার শরীরে মারধরে জখম এবং হাত-পা দড়ি দিয়ে বাঁধার চিহ্ন দেখে স্থানীয় ইউপি সদস্য আমাকে ফোন দেন। আমি সঙ্গে সঙ্গে বাঁশখালী থানায় যোগাযোগ করি। তারা গিয়ে শহীদুল্লাহর শরীরে মারধরের আলামত দেখে আমাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে।
আমরা দ্রুত অভিযান চালিয়ে চান্দগাঁওয়ের খরমপাড়া এলাকা থেকে ফোরকান এবং বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে মামুনকে গ্রেফতার করি। বাঁশখালী থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের মর্গে পাঠাই। ময়নাতদন্ত শেষে আজ (সোমবার) লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ফোরকানকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওসি বলেন, ‘ছিদ্দিক ম্যানশনের মালিকের বাসা থেকে মোবাইলসহ আরও কিছু জিনিস খোয়া যায়। এজন্য তারা শহীদুল্লাকে সন্দেহ করে। গত রোববার তাকে ডেকে হাত-পা বেঁধে মারধর করা হয় বলে ফোরকান আমাদের কাছে স্বীকার করেছে।’
ঘটনার পর থেকে পলাতক ভবন মালিক ছিদ্দিক ও তার ছেলে শাওনকে গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে ওসি জানান।
সারাবাংলা/আইসি/এনইউ