Sunday 06 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘লুটপাট-দুর্নীতি কেড়ে নিয়েছে মানুষের ঈদানন্দ’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:২০ | আপডেট: ৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:১৫
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: সরকারের লুটপাট-দুর্নীতি মানুষের ঈদানন্দ কেড়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মঙ্গলবার (০৯ এপ্রিল) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, ‘পবিত্র ঈদুল ফিতর সমাগত। বিশ্ব মুসলিমের প্রধান আনন্দ ও খুশির দিন এটি। ধনী-গরীব নির্বিশেষে সবাই এই উৎসব পরিবার, স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী নিয়ে উপভোগ করেন। কিন্তু জনগণের ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র কেড়ে নেওয়ায় এবারও ঈদানন্দ ম্লান হয়ে গেছে। সরকারের হরিলুট আর দুর্নীতি কেড়ে নিয়েছে মানুষের ঈদানন্দ। মানুষের শেষ হাসিটুকুও বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ঈদানন্দ উদযাপনের বিপরীতে মুখ লুকিয়ে কাঁদছেন মধ্যবিত্ত মানুষ।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘সমাজে তৈরি হয়েছে ধনী ও গরীবের বিশাল ব্যবধান। অধিকাংশ মানুষের পক্ষে সামান্য প্রয়োজন মেটানোই এখন দুষ্কর। দেড় যুগের বেশি সময় ধরে গণতন্ত্রহীনতা অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক বৈষম্যের কারণে স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও আমরা দেখতে পাচ্ছি গণতন্ত্রের ধ্বংসস্তুপের ওপর দাঁড়িয়ে কতৃর্ত্ব করছে এক নিষ্ঠুর নাৎসী সরকার। দুঃশাসনের ছোবলে সমাজে নেমে এসেছে নৈরাজ্যের এক ঘন অন্ধকার। দ্রব্যমূল্যের চরম উর্ধ্বগতির কষাঘাতে জনজীবনে নিম্ন আয়ের মানুষের আর্তি শোনা যাচ্ছে।’

রিজভী বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের লাগাম না টেনে বাজার সিন্ডিকেট, সরকারের আস্থাভাজন ক্ষমতাধর ব্যক্তিবর্গ ব্যস্ত রয়েছে লুটপাট, দুর্নীতি ও বিরোধী মত দমন-পীড়নে।’

তিনি বলেন, ‘৬ বছরের বেশি সময় ধরে বন্দি রাখা হয়েছে বেগম খালেদা জিয়াকে। যিনি দেশের পাঁচটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সব কটিতেই জয়ী হয়েছেন। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ঘোষকের সহধর্মিণী, সাবেক তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রী, যিনি দেশের অধিকারহারা জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার আত্মবিশ্বাসী উচ্চারণ থেকে বিচ্যুৎ হননি। তার উন্নত চিকিৎসা জরুরি। অথচ হিংসাশ্রয়ী সরকার গায়ের জোরে গুরুতর অসুস্থ দেশনেত্রীকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নিতে দিচ্ছে না। এই ঈদও পরিবার ছাড়া বন্দি অবস্থায় তাকে পালন করতে হবে।’

রিজভী বলেন, ‘প্রতিদিন আমাদের কোনো না কোনো নেতা-কর্মীকে হত্যা, গুম, না হয় জেলে বন্দি করা হচ্ছে, না হয় মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পযার্য়ের নেতাদের সারাদিন ধরে প্রায় প্রতিদিন আদালতে সময় পার করতে হচ্ছে। ফলে অধিকাংশ মানুষের চাকরি নেই, বন্ধ হয়ে গেছে ব্যবসা। প্রায় ৫০ লাখ নেতা-কর্মীর মধ্যে কেউ কারাগারে, কেউ ঘরছাড়া, বাড়িছাড়া হয়ে জীবনযাপন করছে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি, সীমান্ত অরক্ষিত, ভিন্ন রাষ্ট্রের সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশকে অভয়ারণ্য মনে করা, তাদের দ্বারা ব্যাংক লুট, থানা আক্রমণ এখন বাংলাদেশে নিত্যদিনের ছবি।’

তিনি বলেন, ‘তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের ৬০ শতাংশ কারখানার শ্রমিক সোমবার বিকেল পর্যন্ত বেতন-বোনাস পাননি। তারা বেতন না পেয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। ওদের ঈদের আনন্দ চোখের পানিতে ভাসছে। সারাদেশে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ সংকট চরমে। শুধু রাজধানীতেই ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা লোডশেডিং, আর গ্রামে-গঞ্জে ১৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। তাহলে বিদুৎ খাতের লাখ লাখ কোটি টাকা গেল কোথায় ?’

রিজভী বলেন, ‘প্রতিবারের ঈদ যাত্রায় বেশ কিছু সংখ্যক নারী কোনো না কোনোভাবে যৌন হয়রানির শিকার হয়। এর কারণ সড়ক-মহাসড়কে আইন-শৃঙ্খলা বলতে কিছু নেই। দেশে উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিরা অধিকাংশই বেকার। বেকারত্ব হারে শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ দ্বিতীয়। তবুও ঈদ আনন্দের। না পাবার মাঝেও অনেক কিছু পাওয়া। তাই ঈদ প্রতিটি মানুষের জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল আনন্দ, হাসি এবং সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে সংযম, সৌহাদ্য ও সম্প্রীতির পরিবেশ।’

সারাবাংলা/এজেড/এনইউ

টপ নিউজ রিজভী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর