বাড়তি ভাড়া আদায় অযৌক্তিক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
১০ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:৩৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: কিশোর গ্যাংয়ের নেপথ্যের ব্যক্তি যে দলেরই হোক, কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি আরও বলেছেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষকে জিম্মি করে বাড়তি ভাড়া আদায় অযৌক্তিক।
বুধবার (১০ এপ্রিল) সকালে নগরীর দেওয়ানজি পুকুর পাড়ে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা বৃদ্ধি ও হামলায় এক চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গত মন্ত্রীসভার মিটিংয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে কিশোর গ্যাং নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে দেখতে পাচ্ছি, বিভিন্ন জেলা শহরে কিশোর গ্যাং তৈরি হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন।’
‘দেশে এটি নতুন সমস্যা। এ সমস্যা দূর করার জন্য সরকার কাজ করছে। কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে নেপথ্যে যে বা যারাই থাকুক, সে যে দলেরই হোক, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং হচ্ছে।’ কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের গ্রেফতারের পর সংশোধনাগারে পাঠানোর ওপর জোর দিয়েছেন মন্ত্রী।
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি নাবিকদের মুক্ত করার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নাবিক এবং জাহাজ দুটোই উদ্ধার করার ক্ষেত্রে অল্পসময়ের মধ্যে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই তাদের মুক্ত করতে পারব। তবে উদ্ধারের দিনক্ষণ বলাটা কঠিন।’
নাবিকদের পরিবারকে আশ্বস্ত করে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করছে। প্রথমত যারা অপহরণ করেছে তাদের সঙ্গে বিভিন্ন পক্ষের মাধ্যমে আলোচনা চলছে। দ্বিতীয়ত তাদের ওপর মনস্তাত্বিক প্রচুর চাপ তৈরি করা হয়েছে। নাবিকরা ভালো আছে, নিয়মিতভাবে তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে, এমনকি ভিডিও কলেও কথা বলছে। সুতরাং যে উদ্বেগটা কিছুদিন আগে ছিল সেটি এই মুহূর্তে নেই। আমরা আশা করছি তাদের শিগগির মুক্ত করতে পারব।’
রমজানে নিত্যপণ্যের বাজার এবং ঈদে ঘরমুখো মানুষের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় প্রসঙ্গেও সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে রমজান আসার আগে এবং রমজানের সময় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করার জন্য একটি অসাধু চক্র ও কিছু মজুতদার সবসময় সক্রিয় হয়। এবারও তার ব্যত্যয় হয়নি। এর সঙ্গে নতুনভাবে যুক্ত হয়েছিল বিএনপির ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বাজারকে অস্থিতিশীল করা, যাতে পণ্যের মূল্য বাড়ে। কিন্তু সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এবার রমজানের সময় বাজার স্থিতিশীল ছিল এবং অনেক পণ্যের দাম কমেছে।‘
‘ঈদুল ফিতর উদযাপনের জন্য এবার কয়েক কোটি মানুষ যার যার গন্তব্যে যাচ্ছেন। এই সুযোগে পরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ বাড়তি ভাড়া আদায় করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সরকার বিষয়টি নজর রাখছে। এ ধরনের বাড়তি বাড়া আদায় অযৌক্তিক ও কোনোভাবেই সমীচীন নয়। গতকালও বিভিন্ন জায়গায় পরিদর্শক টিম গেছে। বাড়িতে যাবার সময় জনগণেরও সচেতন থাকতে হবে, অযথা হুড়োহুড়ি করে যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে।’
আওয়ামী লীগ দেশে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে- বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও আবদুল মঈন খানের এমন বক্তব্যের জবাবে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যাদের জন্মটাই অগণতান্ত্রিক, যারা প্রতিনিয়ত গণতন্ত্র ধ্বংস করার অপচেষ্টা চালায়, সেই বিএনপি এখন গণতন্ত্রের কথা বলে, এটিই হচ্ছে দুঃখজনক। যেন চোরের মায়ের বড় গলা!
ক্যান্টনমেন্টের মধ্যে থেকে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে উচ্ছিষ্ট বিলিয়েছিল। মঈন খান আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তাদের শীর্ষস্থানীয় নেতারা সেই ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট গ্রহণ করার জন্য এক হয়ে বিএনপি গঠন করেছিলেন।’
বিএনপি সবসময় গণতন্ত্র হরণ করার অপচেষ্টা চালি যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনের পর বিডিআর বিদ্রোহের পিছনে তাদের হাত ছিল। নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত এবং গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে সেটি ঘটানো হয়। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে মানুষ পোড়ানোর মহোৎসব করে গণতন্ত্র ধ্বংস করার অপচেষ্টা করেছিল। সেই নির্বাচনে পাঁচশ নির্বাচনী কেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও একই প্রচেষ্টা ছিল। সর্বশেষ নির্বাচন বর্জন করার মধ্য দিয়েও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা চালানো হয়।’
সারাবাংলা/আরডি/এনএস